পঞ্চগড়: উত্তরের জনপদ পঞ্চগড়ে টানা আট দিন ধরে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। রাতের কনকনে ঠান্ডা হাওয়ায় শীতের তীব্রতা বাড়লেও দিনে ঝলমলে রোদে স্বস্তি পাচ্ছেন মানুষ। তবে ভোর ও রাতে শীতের দাপটে জনজীবন কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল ৯ টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৯৯ শতাংশ এবং বাতাসের গতি ঘণ্টায় ৮-১০ কিলোমিটার।
সকালে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কুয়াশাহীন ভোরে সূর্যের আলোয় ঝলমল করছে জেলার প্রকৃতি। কর্মচাঞ্চল্য দেখা যায় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের মধ্যে।
আবহাওয়া অফিস জানায়, গত এক সপ্তাহে তাপমাত্রায় উল্লেখযোগ্য ওঠানামা ছিল। বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৯ দশমিক ৫, বুধবার ৯ দশমিক ৭, মঙ্গলবার ৯ দশমিক ৫, সোমবার ৯ দশমিক ০, রবিবার ৯ দশমিক ৩, শনিবার ৯ দশমিক ৩, শুক্রবার ৯ দশমিক ৫, গত বৃহস্পতিবার ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্যে আরও বলা হয়, তাপমাত্রা ১০ থেকে ৮ ডিগ্রি হলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, ৮ থেকে ৬ ডিগ্রি হলে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ এবং ৬ ডিগ্রির নিচে নেমে গেলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ধরা হয়।
ফলে বর্তমানে তেঁতুলিয়ায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহই বইছে।
সদর উপজেলার টুনিরহাট এলাকার কৃষক আব্দুল হাকিম বলেন, ‘রাইতে যে ঠান্ডা পড়ে, ওইটা সহ্য করা মুশকিল। ভোর বেলায় ঘর থিকা বাহির হওন যায় না। হাত-পা একদম বরফ হইয়া যায়। কিন্তু দিন উঠলেই আবার রোদ ঝলমল, মনে হয় শীত নাই। এই রোদ থাকায় মাঠের কাজটা কোনোমতে চালাইতাছি, না হইলে খুব কষ্ট হইতো।’
অটোচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভোরে গাড়ি নিয়া বের হইলে গায়ে তিনটা কাপড় পরেও ঠান্ডা লাগে। যাত্রী কম থাকে, মানুষজন বাহির হইতে চায় না। কিন্তু বেলা বাড়লে রোদ উঠলে আবার রাস্তায় লোকজন বাড়ে। দিনে রোদ থাকায় চলাচলটা একটু সহজ হয়, নাইলে আয়-রোজগার একদম বন্ধ হইয়া যাইতো।’
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় বলেন, গত কয়েক দিনে জেলার তাপমাত্রা ক্রমেই নিম্নমুখী। আজ তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে, যা মৃদু শৈত্যপ্রবাহের মধ্যে পড়ে। বাতাসে ৯৯ শতাংশ আর্দ্রতা থাকায় শরীরে ঠান্ডার অনুভূতি বেশি হচ্ছে।