Tuesday 16 Dec 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ফয়সালের সঙ্গে কবিরও হাদির ইনকিলাব সেন্টারে গিয়েছিলেন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ২১:৫৪

ওসমান হাদিকে গুলি করা ফয়সালের সহযোগী কবির। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: রাজধানীর বাংলামোটরে ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে হাদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন ফয়সাল ও তার সহযোগী কবির। র‌্যাবের হাতে গ্রেফতারের পর প্রথমে স্বীকার না করলেও ভিডিও ফুটেজ দেখানোর পর সত্যতা জানান। একইসঙ্গে আদালতে কবির এও স্বীকার করেন যে, ওই মোটরসাইকেল তার এক বন্ধুর হলেও তিনি তা ব্যবহার করতেন এবং ওই মোটরসাইকেল ব্যবহার করেই হাদিকে গুলি করা হয়েছিল।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) ঢাকার সিএমএম আদালতে রিমান্ড শুনানি চলাকালে বিচারকের কাছে এসব কথা স্বীকার করেন হাদিকে গুলি করা ফয়সালের সহযোগী কবির।

কবিরকে ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সল করিম মাসুদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী বলছে পুলিশ। সোমবার রাতে তাকে নারায়ণগঞ্জের একটি ইটভাটা থেকে গ্রেফতারের তথ্য জানিয়ে র‌্যাব বলেছিলেন, কবির ৫ ডিসেম্বর ফয়সল করিমের সঙ্গে বাংলামোটরে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়েছিলেন সেখানকার পরিস্থিতি দেখে আসতে।

বিজ্ঞাপন

র‌্যাবের ভাষ্য মতে, গত ৫ ডিসেম্বরের একটি ফুটেজে বাংলামোটরে ওসমান হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে মো. কবিরকে দেখা যায়।

বিকেলে এই মামলায় কবিরকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের মতিঝিল জোনাল টিমের পরিদর্শক ফয়সাল আহম্মেদ। তিনি আদালতে বলেন, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনায় দেখা গেছে, আসামি কবির ও ফয়সলসহ অন্য আসামিরা ওসমান হাদির কালচারাল সেন্টারে গিয়েছিলেন। তা ছাড়া হান্নানের বিক্রি করা মোটরসাইকেলের মালিক কবির।

শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. কাইয়ুম হোসেন বলেন, ‘কবির ঢাকার আদাবর থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক। মোটরসাইকেলযোগে গিয়ে ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়েছে। তার জীবন এখনো সংকটাপন্ন। এ ঘটনার প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সলসহ কবির হাদির কাছে গিয়েছিলেন। সেখানে তার ছবি ছড়িয়ে পড়ার পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান। মোটরসাইকেলের মালিক কবির। এ হত্যাচেষ্টার সঙ্গে আর কে কে জড়িত, সেটা জানার জন্য তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।’

ব্যাটারিচালিত রিকশায় বসা ওসমান হাদিকে গুলি করেন মোটরসাইকেলের পেছনে বসা ব্যক্তি। দ্রুত ঘটনা ঘটিয়ে তারা ওই মোটরসাইকেলে সেখান থেকে চলে যান।

আদালতে শুনানিতে কবিরের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। বিচারক কবিরের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনার কিছু বলার আছে?’ তখন কবির বলেন, ‘স্যার, আমি ১৮ দিন আগে ওনার (ফয়সল করিম) গাড়ি (মোটরসাইকেলে ট্রিপ) ও পাঠাও চালাইতাম। উনি আমাকে ফোন দিলে আমি যেতাম। বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যেত। ১৮ দিন আগে ফয়সল আমাকে বলেছে, আমি হাদির সঙ্গে ব্যবসা করি, তার নির্বাচনি প্রচারে কাজ করি। তার কাছে যাব। আমি যেতে চাইনি, এরপরও উনি আমাকে নিয়ে গেছেন। এই আমার অপরাধ স্যার।’

এ পর্যায়ে বিচারক প্রশ্ন করেন, ‘মোটরসাইকেলের মালিক কে?’ জবাবে কবির বলেন, ‘মোটরসাইকেলটা আমার এক বন্ধুর। আমি গাড়ি (মোটরসাইকেল) কিনতে গেছি। সেও গাড়ি কিনতে গেছে। সে আমার আইডি (জাতীয় পরিচয়পত্র) দিয়ে গাড়ি কিনছে।’ বিচারক বলেন, ‘তার নাম কী?’ কবির বলেন, ‘স্যার, মাইনুদ্দিন ইসলাম শুভ।’ তখন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, ওই মোটরসাইকেল ব্যবহার করে ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়েছে। শুনানি শেষে বিচারক কবিরের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী সোমবার রাতে গণমাধ্যমে বলেন, ‘কবির ৫ ডিসেম্বর ফয়সল করিমের সঙ্গে বাংলামোটরে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়েছিলেন। প্রথমে তিনি স্বীকার করেননি। কিন্তু সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে তাকে দেখা গেছে। ওই ফুটেজ দেখানোর পর কবির স্বীকার করেন, ফয়সল করিম ও তিনি সেদিন ওই প্রতিষ্ঠান দেখে আসতে সেখানে গিয়েছিলেন।

সারাবাংলা/ইউজে/পিটিএম
বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর