Sunday 16 Mar 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ভাঙছে বেড়িবাঁধ, আতঙ্কে কৃষক

রেজাউল ইসলাম তুরান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৬ মার্চ ২০২৫ ১০:০০ | আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৫ ০৫:০০

বেড়িবাঁধ

খুলনা: খুলনার রূপসা উপজেলার বুক চিরে বয়ে গেছে আঠারোবাঁকি নদী। নদীর কোল ঘেঁষে রয়েছে নৈহাটি ইউনিয়নের শ্রীরামপুর বিল। পানির তীব্র চাপে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে বিলের আধা কিলোমিটার ওয়াপদা বেড়িবাঁধ। এ নিয়ে চরম দুঃচিন্তায় পড়েছেন বিলের ওপর নির্ভরশীল কৃষকরা।

সরেজমিনে শনিবার (১৫ মার্চ) বিলের কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রূপসা উপজেলার শ্রীরামপুর, নেহালপুর, কিসমত খুলনা, নৈহাটী, চর-শ্রীরামপুর গ্রামের প্রায় পাঁচ শতাধিক কৃষক বিলে চাষাবাদ করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। বর্তমানে সেখানে বাঙ্গি, উচ্ছে, ধানসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফসল চাষাবাদ হচ্ছে। নদীর পাড়ের বেড়িবাঁধ ভাঙতে ভাঙতে অনেক সরু হয়ে গেছে। যে কোন সময় বেড়িবাঁধ ভেঙে বিলের ভিতরে নদীর পানি প্রবেশ করতে পারে। এতে বিলের গরীব কৃষকেরা নিঃস্ব হয়ে যাবে। এমন আতঙ্কে সেখানকার কৃষকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।

বিজ্ঞাপন

কৃষকদের অভিযোগ, নদীর পাড়ে ইটভাটা মালিকের চর দখলের কারণে বিশাল এলাকা জুড়ে বাঁক সৃষ্টি হয়েছে। এ বাঁকের কারণে চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে নদী প্রবাহের গতিধারা। জোয়ারের সময় প্রবল স্রোতের কারণে নদীর বিপরীতে পাড়ে বেড়িবাঁধে বড় ধরনের ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ২০২২ সালে নদীতীরের ইটভাটার সামনে ভরাট হয়ে যাওয়া বাঁকটি কাটতে সরকারিভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। খনন কাজও শুরু হয়। কিন্তু কাজটি মাঝপথেই অজ্ঞাত কারণে বন্ধ হয়ে যায়।

শ্রীরামপুর বিলের কৃষক সুমন হাওলাদার সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রায় দুই বছরের বেশি সময় ধরে বেড়িবাঁধ ভাঙ্গন অবস্থায় রয়েছে। বর্তমানে অবস্থা আরও ভয়াবহ। নদীতে জোয়ারের চাপ বাড়লে— যেকোনো সময় বেড়িবাঁধ ভেঙে বিলে পানি প্রবেশ করতে পারে। এতে চাষের ফসলসহ ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে যেতে পারে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘প্রায় এক বছর আগে জোয়ারের সময় বেড়িবাঁধ ভেঙে গিয়েছিল। আমরা স্থানীয় কৃষকরা টাকা তুলে বেড়িবাঁধের সেই অংশটুকু সংস্কার করেছিলাম। এই বিলটিতে ধানের পাশাপাশি বিভিন্ন ফসল চাষ হয়। প্রায় ছয় মাস আগে বেড়িবাঁধ রক্ষার জন্য বালুর বস্তা ফেলা হয়েছিল। তাতেও কোন লাভ হয়নি। ভাঙন রোধে ড্রেজার দিয়ে নদী খনন করার সময় বাঁক কেটে দিলে নদীর গতিপথ ফিরে পাবে। এতে ওয়াপদা বেড়িবাঁধ ভাঙন থেকে রোধ পাবে।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, নদীর ওপারে যে ভাটাগুলো আছে। তাদের মধ্যে কয়েকজন ভাটা মালিক আঠারোবেঁকী নদীর চরে প্রতিবছর ইটপাটকেল ফেলে চর দখল করে আসছে। সে কারণে বেড়িবাঁধে ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না।

একই বিলের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি অনেক বছর ধরে এই বিলে চাষাবাদ করছি। নদীর পাড়ের বেড়িবাঁধের অবস্থা খুব খারাপ। আমার মতো বিলের শত শত কৃষক বাঁধটি নিয়ে আতঙ্কে রয়েছে। দ্রুত সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি।’

রূপসা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তরুন কুমার বালা সারাবাংলাকে বলেন, ‘বেড়িবাঁধের বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজ। কিছুদিন আগে কয়েকজন কৃষক আমার কাছে এসেছিলেন। বিষয়টি আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি।’

রূপসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আকাশ কুমার কুন্ডু সারাবাংলাকে বলেন, ‘বেড়িবাঁধটি আমি নিজে সরেজমিনে গিয়ে দেখে এসেছি। সংস্কারের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সারাবাংলা/এসআর

আঠারোবাকি নদী আতঙ্কে কৃষক খুলনা নৈহাটি ইউনিয়ন ভাঙছে বেড়িবাঁধ রূপসা উপজেলা শ্রীরামপুর বিল সারাবাংলা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর