ঢাকা: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘আমরা ইনসাফের বাংলাদেশ গড়তে চাই। যারাই আমাদের সঙ্গে আসবেন তাদের প্রতি আমাদের বার্তা স্পষ্ট, আপনি দুর্নীতি করতে পারবেন না, আর কোনো দুর্নীতিবাজকে প্রশ্রয় দেবেন না।
শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সদস্য সম্মেলনে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
জামায়াত আমির বলেন, ‘ইনসাফের বাংলাদেশ গড়তে আমাদের সঙ্গে যারা আসতে চান তাদের প্রতি আমাদের তিনটি বার্তা। প্রথমত: আপনি দুর্নীতি করতে পারবেন না, আর কোনো দুর্নীতিবাজকে প্রশ্রয় দেবেন না। দ্বিতীয়ত: সবার জন্য সমান বিচার নিশ্চিত করতে হবে। কোনো রাজনীতিবিদ বিচারের দিকে তাকাতে পারবেন না, হস্তক্ষেপ করবেন না। তৃতীয়ত: সকল জঞ্জালের কবর রচনা করার জন্য জনগণ যে সংস্কারের দিকে তাকিয়ে আছে সেই সংস্কারের সমস্ত সুপারিশমালাকে বাস্তবায়ন করার প্রতিশ্রুতি দিতে হবে।’
‘এই তিন প্রতিশ্রুতিতে যারা একমত হবেন মোস্ট ওয়েলকাম। আমরা সবাই মিলে দেশ গড়বো, ইনশআল্লাহ। সব ধর্ম, সব দল সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে আমরা এগিয়ে যাবো। সেই ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ শুধু বাংলাদেশকে রাস্তা দেখাবে না, দুনিয়ার বহু দেশকে রাস্তা দেখাবে’, বলেন জামায়াতের আমির।
ডা. শফিকুর বলেন, ‘আজকের যে বাংলাদেশ দেখছি এই বাংলাদেশ পেতে ১৯৪৭ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আর যাতে কলমের বাদে অস্ত্র হাতে না ওঠে। মাদকের বোতল যেন হাতে না ওঠে। মেয়েদের নিয়ে কোনো ধরণের বাড়াবাড়ি যেন করা না হয়। আমাদের মায়েরা-মেয়েরা শান্তি এবং নিরাপত্তার সাথে যাতে লেখাপড়া করতে পারে। প্রতিটি ছাত্র যেন তার মেধাবিকাশের জন্য উৎসাহ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে। সেই পরিবেশ সৃষ্টি করার প্রধান দায়িত্ব আজকে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ওপর অর্পিত হয়েছে। ছাত্রশিবিরের জন্মই হয়েছে এজন্যে এরা জাতিকে মেধাবি, চরিত্রবান কারিগর জাতিকে উপহার দিবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা জীবনের একটা পর্যায়ে চলে এসেছি, বাকী লড়াই, লড়াইয়ের এই রুমাল এই রিলে রেসের শেষ ডেস্টিনেশন পর্যন্ত শক্ত করে হাতে ধরে সামনের দিকে দৌড়াতে হবে। তুমি সেই ছাত্রশিবির। নিজেদেরকে গড়তে হবে এবং সহপাঠিদের গড়ার দায়িত্ব নিতে হবে। ছাত্র এবং শিক্ষকের সম্পর্ক হবে পিতা-পুত্রের সম্পর্ক।’
বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রশিবিরের বিজয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে তোমাদের এই বিজয় ইঙ্গিত দিচ্ছে আগামীদিনে ইনসাফের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা হবে ইনশআল্লাহ। ছাত্র সমাজ তোমাদের ভোট দিয়েছে, তোমাদেরকে ইনসাফের প্রতিক হিসেবে দেখতে চায়। কোরআন সুন্নাকে বাদ দিয়ে দুনিয়ার কোনো কোথাও কোনো কালে ইনসাফ কায়েম হয়নি, হওয়ার সম্ভাবনা নেই।’
জামায়াত আমির বলেন, ‘আমরা একটি দুর্নীতিমুক্ত, বৈষম্যমুক্ত, ইনসাফ ভিত্তিক মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চাই। এমন একটি শিক্ষা ব্যবস্থা তোমাদের জন্য আয়োজন করতে চাই, যে শিক্ষা ব্যবস্থা তোমাদেরকে মানুষের মতো মানুষ হতে সাহায্য করবে। একজন যুবক যবতীও বেকার থাকবে না। প্রত্যেকটি হাতে কাজ তুলে দিতে চাই। কেউ বেকার ভাতা গ্রহণ করুক তা দেখতে চাই না।’
ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম সাদ্দামের পরিচালনায় সদস্য সম্মেলনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, আ ন ম শামসুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারি সেক্রেটারি মাওলানা এটিএম মাছুম, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ড. হামিদুর রহমান আযাদ, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাগপার সহসভাপতি ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান, শহিদ শরিফ ওসমান বিন হাদির বড় ভাই শরিফ ওমর বিন হাদি, মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুলসহ অন্যান্যরা।