সিরিয়ার আলেপ্পোতে সেনাবাহিনী এবং কুর্দি-নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস (এসডিএফ) এর মধ্যে সংঘর্ষে কমপক্ষে দুইজন নিহত হয়েছেন। সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে এসডিএফকে কীভাবে একীভূত করা হবে-তা নিয়ে উচ্চপর্যায়ের আলোচনার মধ্যেই এই সংঘর্ষ শুরু হলো।
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানা’র খবরে বলা হয়েছে, সোমবার (২২ ডিসেম্বর) আলেপ্পোর শেইহান এবং লাইরমাউন গোলচত্বরের কাছে এ ঘটনা ঘটেছে।
মেডিকেল সূত্রের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, সিরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী এবং এসডিএফ একে অন্যকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর পর দুইজন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ১১ জন আহত হয়েছেন।
সানা’র খবরে আরও বলা হয়েছে, সহিংসতার মধ্যে কয়েক ডজন পরিবার এবং স্থানীয় শ্রমিকদের এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যেতে দেখা গেছে।
সোমবার সন্ধ্যায় দামেস্ক থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক আয়মান ওঘানা বলেছেন, ‘আমরা ভারী মেশিনগানের গুলি, মর্টার শেলিং এবং পরিবারগুলোকে বাস্তুচ্যুত করার খবর শুনেছি।’
সিরিয়ান সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, এসডিএফের গুলিতে দুটি শিশু এবং তাদের দুজন উদ্ধারকর্মী আহত হয়েছেন। উদ্ধারকর্মীরা যে গাড়িতে ছিলেন, সেটিতে গুলি চালানো হয়। সংস্থাটি জানায়, গাড়িটিতে স্পষ্টভাবে সিভিল ডিফেন্সের প্রতীক ছিল। আহত দুজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সিরিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর উপর এসডিএফের হামলাকে ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ বলেছেন।
মন্ত্রণালয়টি আরও জানিয়েছে, ‘আজ সন্ধ্যায়, আলেপ্পোর শেখ মাকসুদ এবং আশরাফিহ পাড়ায় মোতায়েন করা এসডিএফ বাহিনী যৌথ চেকপয়েন্টে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতামূলক কাজ করেছে।’
অন্যদিকে, এসডিএফ বেসামরিক এলাকা লক্ষ্য করে হামলা চালানোর কথা অস্বীকার করেছে। তারা সিরিয়ার সরকারের সঙ্গে যুক্ত দলগুলোর বিরুদ্ধে এ হামলা চালানোর অভিযোগ করেছে যদিও দামেস্ক তাদের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।
এই সহিংসতা এমন এক সময়ে ঘটল, যখন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে সফর করছিলেন। সেখানে তিনি সিরীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে এসডিএফকে দেশের নতুন সেনাবাহিনীতে একীভূত করার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের একটি সময়সীমাও সামনে রয়েছে।
দীর্ঘদিনের শাসক বাশার আল-আসাদকে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে ক্ষমতাচ্যুত করার পর ক্ষমতায় আসা সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা চলতি বছরের মার্চে এসডিএফের সঙ্গে একটি চুক্তি সই করেন। ওই চুক্তিতে এসডিএফকে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলা হয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, সিরিয়া ও তুরস্কের কর্মকর্তাদের মধ্যে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের বৈঠকই সোমবারের সংঘর্ষের ‘প্রধান উসকানি’ হিসেবে কাজ করেছে।