ঢাকা: বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তির (ইপিএ) খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দীন।
তিনি বলেন, আগামী মাসে (জানুয়ারি) এ চুক্তি সই করা হবে।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য উপদেষ্টা এ কথা জানান। প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়সংক্রান্ত বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত: অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি বা ইপিএ হলো দুই দেশের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্যের পরিসর বা এফটিএ তৈরির পরিকল্পনা। মুক্ত বাণিজ্যের পরিসরে সংশ্লিষ্ট দুই পক্ষ বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয়। এর মধ্যে আছে বিভিন্ন বাণিজ্য বাধা অপসারণ, আমদানি কোটা সংশোধন, শুল্ক বাধা অপসারণ, একে অন্যের সঙ্গে পণ্য ও পরিষেবা বাণিজ্য বাড়ানোর জন্য পারস্পরিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখা।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, তীব্র দর-কষাকষির মাধ্যমে আমরা জাপানের সঙ্গে ইপিএ চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত করেছি। জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আজ আমার ফোনে কথা হয়েছে। আগামী মাসে ইপিএ স্বাক্ষর হবে। এই চুক্তির ফলে উভয় দেশের বিনিয়োগ আকর্ষিত হবে। দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়বে।
প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, এ ধরনের ইপিএ আমরা আগে কখনো করিনি। যে কারণে এ ক্ষেত্রে কী করতে হয়, সেটাও আমাদের সেভাবে জানা ছিল না। এই সরকারের সবার আন্তরিক প্রচেষ্টায় আমরা সেটা পেরেছি। নিঃসন্দেহে, এটি বাংলাদেশের জন্য ভালো চুক্তি।
বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, ২০২৪ সালের শেষে এই চুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। আট দফা বৈঠক শেষে তা চূড়ান্ত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জাপানের সঙ্গে এই ইপিএ করার মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রথম কোনো উন্নত দেশের সঙ্গে চুক্তি করতে যাচ্ছে। এই চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ জাপানের জন্য ৯৭টি উপখাত উন্মুক্ত করতে রাজি হয়েছে। অন্যদিকে জাপান বাংলাদেশের জন্য ১২০টি উপখাত উন্মুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
চুক্তি সই হলে প্রথম দিন থেকেই বাংলাদেশের ৭ হাজার ৩৭৯টি পণ্য জাপানের বাজারে তাৎক্ষণিক শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা পাবে। অন্যদিকে জাপানের ১ হাজার ৩৯টি পণ্য বাংলাদেশের বাজারে তাৎক্ষণিক শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এ চুক্তি বাংলাদেশের জন্য ব্যাপক বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সুফল বয়ে আনবে। ফলে বাংলাদেশে বাণিজ্য সম্প্রসারণ, বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ-জাপান অর্থনৈতিক সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে।