ঢাকা: বিদ্যমান ‘মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২’ সংশোধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ সংক্রান্ত জাতীয় সমন্বয় কমিটির ৩০তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বৈঠকের বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা এবং নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিদেশে পাচারকৃত অর্থ ও সম্পদ উদ্ধার কার্যক্রম অধিকতর দক্ষ ও কার্যকর করার লক্ষ্যে বিদ্যমান মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর কতিপয় ধারা যুগোপযোগী করে আইনটি সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, বৈঠকে বিদেশে পাচারকৃত অর্থ ও সম্পদ উদ্ধারের লক্ষ্যে অগ্রাধিকার হিসেবে চিহ্নিত ১১টি কেইসের জন্য গঠিত যৌথ অনুসন্ধান ও তদন্ত দলের কার্যক্রমের অগ্রগতি নিয়ে সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়। চিহ্নিত অগ্রাধিকার কেইসের ক্ষেত্রে ইতোমধ্যে ১০৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে, ১৪টি মামলায় চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে এবং আদালত কর্তৃক ৪টি মামলায় রায় প্রদান করা হয়েছে।
পাশাপাশি ১১টি অগ্রাধিকার কেইসের জন্য ২১টি MLAR সংশ্লিষ্ট দেশে প্রেরণ করা হয়েছে। সভায় অগ্রাধিকার কেইসসমূহে যত দ্রুত সম্ভব চার্জশীট দাখিল, সংশ্লিষ্ট দেশে MLAR প্রেরণ এবং মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিতে কার্যকরি উদ্যোগ গ্রহণের জন্য বৈঠকে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, দেশে মোট ৫৫ হাজার ৬৩৮ কোটি টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি, বিদেশে মোট ১০ হাজার ৫০৮ কোটি টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি অর্থাৎ সর্বমোট ৬৬ হাজার ১৪৬ কোটি টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ সংযুক্ত (Attached) এবং অবরুদ্ধ (Freeze) করা হয়েছে।
বৈঠকে জানানো হয় যে, মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে বিদ্যমান আন্তর্জাতিক মানদণ্ড পরিপালনে বাংলাদেশের অবস্থান মূল্যায়নের জন্য এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ অন মানিলন্ডারিং (এপিজি) কর্তৃক আগামী ২০২৭-২৮ মেয়াদে ৪র্থ পর্বের মিউচুয়্যাল ইভ্যালুয়েশন সম্পন্ন হবে। সভায় মিউচ্যুয়াল ইভ্যালুয়েশনকে সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম হিসেবে বিবেচনাপূর্বক মিউচ্যুয়াল ইভ্যালুয়েশন মোকাবেলায় সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সংস্থা-কে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ সচিব, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (দ্বিপাক্ষিক), অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল, সিআইডি প্রধান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পুলিশ ও বিএফআইইউ’র প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।