ঢাকা: ক্ষমতায় গেলে ২০২৪ সালের জুলাই গণ-আন্দোলনের যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দৃঢ় অঙ্গীকার করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে বিএনপি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সভায় ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জুলাই যোদ্ধাদের মধ্যে অনিশ্চয়তা ও শঙ্কা রয়েছে যে অন্তর্বর্তী সরকারের পর নতুন সরকার এলে তাদের নিরাপত্তা কীভাবে নিশ্চিত হবে। বিএনপি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় এলে এই যোদ্ধাদের নিরাপত্তার পূর্ণ দায়িত্ব নেবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘চব্বিশের জুলাই যোদ্ধা যারা আছে, তাদের অনেকের মধ্যেই শঙ্কা আছে এই অন্তর্বর্তী সরকারের পরে নতুন সরকার আসলে তাদের নিরাপত্তার কী ব্যবস্থা হবে। আমি খুব পরিষ্কার করে, দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই জনগণের ভোটে আমরা নির্বাচিত হয়ে এলে জুলাই যোদ্ধা সবাইকে আমরা নিরাপত্তা দেব।’
তিনি বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সংগ্রামে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় এবং এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্তদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা রক্ষা করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আগামী নির্বাচন সেই নির্বাচন যেখানে সিদ্ধান্ত হবে আমরা একটি উদার গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ব, নাকি একটি পশ্চাৎপদ রাষ্ট্রের দিকে ফিরে যাব।’
তিনি জনগণকে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এই নির্বাচনই ঠিক করে দেবে দেশ সামনে এগোবে নাকি পিছিয়ে যাবে।
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, যারা একসময় স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল, তারা আজ আবার নতুন করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করার চেষ্টা করছে।
এসব শক্তি মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা ধ্বংস করতে চায় এবং দেশে গণতান্ত্রিক উত্তরণ ব্যাহত করতে চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে।
বিএনপিকে হেয় করার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন দলটির মহাসচিব।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের বন্ধু, সহকর্মী ও সন্তান হাদির ওপর আক্রমণ হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।’
তিনি দাবি করেন, হামলাকারীকে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং সে আওয়ামী লীগের একজন সন্ত্রাসী। অথচ একটি পক্ষহীন উদ্দেশ্যে এই ঘটনার জন্য বিএনপিকে দায়ী করার চেষ্টা করছে।
২৫ ডিসেম্বর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরাকে সামনে রেখে দলীয় নেতাকর্মীদের জেগে ওঠার আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘২৫ তারিখে আমাদের নেতা আসছেন। সেদিন সমগ্র বাংলাদেশকে কাঁপিয়ে জাতীয়তাবাদের পতাকা তুলে ধরব। আসুন, আমরা সবাই জেগে উঠি দেশের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার জন্য।’
সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদসহ দলের সিনিয়র নেতারা। তারা সবাই বিজয় দিবসের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রাম জোরদারের আহ্বান জানান।