ঢাকা: শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষ্যে রাজধানীর মিরপুরের বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছেন। এরপর শ্রদ্ধা জানাতে স্মৃতিসৌধ সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, শীতের কারণে সকালে মানুষের উপস্থিতি কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে। দলে দলে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন ব্যানার ও স্লোগানসহ শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
১৯৭১ সালের এই দিনে দখলদার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার আল-বদর, আল-শামসরা নির্মমভাবে বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে। দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তি-সংগ্রামের ইতিহাসে দিনটি কালো অধ্যায় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এদিন জাতি মহান মুক্তিযুদ্ধে ঘৃণ্য হত্যাকাণ্ডের শিকার তার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে।

শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে এসেছে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ছবি: সারাবাংলা
নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিসংগ্রামের শেষলগ্নে পুরো দেশের মানুষ যখন চূড়ান্ত বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে, ঠিক তখনই এ দেশীয় নরঘাতক রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও শান্তি কমিটির সদস্যরা মেতে ওঠে বুদ্ধিজীবী হত্যাযজ্ঞে। বিজয়ের চূড়ান্ত মুহূর্তে বাঙালিকে মেধাশূন্য করার এ নৃশংস নিধনযজ্ঞ সেদিন গোটা জাতিসহ পুরো বিশ্বকেই হতবিহ্বল করে দেয়।

ছবি: সারাবাংলা
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মাত্র দুদিন আগে, ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাতের অন্ধকারে ঘাতকচক্র কেবল ঢাকা শহরেই প্রায় দেড়শ বুদ্ধিজীবী ও বিভিন্ন পেশার কৃতী মানুষকে চোখ বেঁধে নিয়ে যায় অজ্ঞাত স্থানে। সেই রাতে তালিকা ধরে ধরে শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী-সাহিত্যিক, সংস্কৃতিসেবী ও পদস্থ সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাদের ঘর থেকে টেনে-হিঁচড়ে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে হত্যা করে ফেলে রাখা হয় নিস্তব্ধ অন্ধকারে।
১৯৭২ সালে বাংলাদেশে জাতীয়ভাবে প্রকাশিত বুদ্ধিজীবী দিবসের সংকলন, পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ ও আন্তর্জাতিক সংবাদ সাময়িকী নিউজউইকের সাংবাদিক নিকোলাস টমালিনের রচিত নিবন্ধ থেকে জানা যায় যে, শহিদ বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা মোট এক হাজার ৭০ জন।