Saturday 13 Dec 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ছদ্মবেশে থাকা আ.লীগের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা জরুরি: নাহিদ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৭:২৮ | আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৯:০৪

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। ছবি কোলাজ: সারাবাংলা

ঢাকা: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; এটি আওয়ামী লীগের নির্বাচনবিরোধী সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ।

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘গতকালের ঘটনা কোনো একক ব্যক্তি বা প্রার্থীর ওপর হামলা নয়। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া একটি ধারাবাহিক পরিকল্পনারই অংশ এটি। এমন পরিস্থিতিতে ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য অটুট রেখে সম্মিলিতভাবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলাই এখন সবচেয়ে জরুরি।’

বিজ্ঞাপন

তিনি অভিযোগ করেন, ‘দিল্লিতে বসে আওয়ামী লীগ এসব পরিকল্পনা করছে এবং ভারত সরকারের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মদদ ছাড়া এ ধরনের তৎপরতা সম্ভব নয়। তার ভাষায়, এসব কার্যক্রম জঙ্গি তৎপরতার শামিল।’ এ বিষয়ে বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসকে জবাবদিহির আওতায় এনে সরকারিভাবে তাদের ডেকে বিষয়টি স্পষ্ট করার দাবি জানান তিনি।

নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘একজন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত গণহত্যাকারীকে আশ্রয় দিয়ে ভারত সরকার এরই মধ্যে নৈতিক অপরাধ করেছে। এখন তারা আওয়ামী লীগকে সহায়তার মাধ্যমে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।’

এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘শুধু রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করলেই আন্দোলন টিকবে না। সমাজ ও রাজনীতি থেকে যদি আওয়ামী লীগ ও ফ্যাসিবাদী শক্তির প্রশ্নের সমাধান না করা যায় এবং গণপ্রতিরোধ জোরদার না হয়। তবে, প্রকৃত নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে না। জনগণই আমাদের আসল নিরাপত্তা— জনগণের ওপর ভর করেই রাজনৈতিক দায়িত্ব পালন করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘সরকার প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করবে; তবে প্রশাসন, পুলিশ ও ছদ্মবেশে থাকা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।’

নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেন, ‘গণঅভ্যুত্থানকে পরিকল্পিতভাবে ভেরিফাই ও নরমালাইজ করে আওয়ামী লীগকে রাজনীতির মাঠে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। মিডিয়া ও টকশোর মাধ্যমে তাদের উপস্থিতি বাড়ানো হচ্ছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের গোপন বৈঠক, কোর্টপাড়ায় ‘জয়বাংলা’ স্লোগান, টকশোতে আওয়ামীপন্থী বুদ্ধিজীবীদের অংশগ্রহণ এবং ভোটের মাঠে জাতীয় পার্টিকে প্রস্তুত করার চিত্র—সব মিলিয়ে এটি আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের একটি সুপরিকল্পিত আয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা নানা পরিচয়ে সমাজে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে। এ কারণে সরকারকে আরও কঠোর অবস্থান নিতে হবে—এ কথা প্রধান উপদেষ্টাকে জানানো হয়েছে।’

এ সময় তিনি নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা রাখার আহ্বান জানান, যাতে তারা সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে। ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় জড়িতদের আজকের মধ্যেই গ্রেফতার এবং শুধু হামলাকারী নয়, পুরো পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচনি রাজনীতিতে প্রতিযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবে এবং পরস্পরের বিরুদ্ধে বক্তব্যও আসতে পারে। তবে তা যেন কখনো সীমা অতিক্রম না করে। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগকে কোনো সুযোগ বা সুবিধা না দেওয়ার বিষয়ে সবাই ঐকমত্যে পৌঁছেছেন।’

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর