ঢাকা: জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন মিলে নতুন জোটের ঘোষণা দিয়েছে।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)-তে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নতুন এ জোটের ঘোষণা দেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। এ সময় এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান ভূঁইয়া মঞ্জুসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জোটের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এটি হবে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অঙ্গীকার রক্ষা ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বিনির্মাণে আগ্রহীদের রাজনৈতিক ও নির্বাচনী ঐক্য’। ঘোষণায় আরও বলা হয়, এই জোট বিকশিত হবে ‘নতুন বাংলাদেশ’–এর রাজনীতি গড়ার পরবর্তী ধাপ হিসেবে।
নাহিদ ইসলাম জানান, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে সমন্বিত ইশতেহার তৈরি, যৌথ আন্দোলন এবং সমন্বিত সাংগঠনিক গঠনের বিষয়ে শিগগিরই বিস্তারিত ঘোষণা দেওয়া হবে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশকে আর কখনো পুরোনো রাজনীতির অচলায়তনে ফেরত যেতে দেওয়া হবে না। ’২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের পর যে পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছিল, তা দেড় বছরে পুরোপুরি বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। নানা শক্তি সংস্কারের বিরোধিতা করেছে, বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু আমরা পরিবর্তনের পক্ষে যারা আছি, তারা গণঅভ্যুত্থানের লক্ষ্য পূরণে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছি।’
তিনি জানান, সংস্কারপন্থী রাজনৈতিক শক্তিগুলো এরই মধ্যে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে এবং এই ঐক্য প্রক্রিয়া আরও বিস্তৃত হবে। নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের মানুষকে বার্তা দিচ্ছি, গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিগুলো ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। বাংলাদেশকে কোনোভাবেই পুরোনো রাজনীতির পথে ফেরত যেতে দেব না।’
৫ আগস্টের ঐতিহাসিক পরিবর্তনের পর বাংলাদেশের রাজনীতি আর আগের অবস্থায় নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নানান আলামত দেখা যাচ্ছে যে, বাংলাদেশ হয়তো আগের মতো হয়ে যেতে পারে। মানুষের ভেতরে হতাশা ও ভীতি তৈরি হচ্ছে। তাই সাহস জোগাতেই আমরা এসেছি। এই পরিবর্তনের যাত্রাকে অব্যাহত রাখতে আমরা শক্তি-সামর্থ্য দিয়ে কাজ করব।’
নির্বাচনকে কেবল ক্ষমতা পরিবর্তনের প্রক্রিয়া হিসেবে না দেখে রাজনৈতিক সংস্কার ও দেশ বদলের সুযোগ হিসেবে দেখা উচিত বলেও মত দেন তিনি। নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশের গত ১৬ বছরের লড়াই ছিল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াই। আমরা নির্বাচনকে রাজনৈতিক সংস্কারের নির্বাচনে পরিণত করতে চাই। অর্থনৈতিক মুক্তি ও দেশ বদলের যাত্রাকে এগিয়ে নিতে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনে অংশ নেব।’
গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটের নেতারা জানান, জাতীয় মর্যাদা, রাষ্ট্রীয় সংস্কার ও অর্থনৈতিক মুক্তিকে সামনে রেখে তারা এই জোট গঠন করেছেন এবং ভবিষ্যতে আরও রাজনৈতিক দলকে এই প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হবে।
সংবাদ সম্মেলনে তিন দলের নেতারা বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা ধরে রেখে ও ভবিষ্যৎ নির্বাচনে সমন্বিত ভূমিকা রাখতে। একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক কাঠামো দাঁড় করাতে এই জোট কাজ করবে।
জানা গেছে, শুরুতে গণঅধিকার পরিষদ জোট গঠনের আলোচনায় থাকলেও শেষ পর্যন্ত না থাকার সিদ্ধান্ত জানায়। ফলে চূড়ান্ত ঘোষণায় তাদের নাম রাখা হয়নি।