Sunday 07 Dec 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

১৩ নভেম্বর ঘিরে হাই-অ্যালার্ট পুলিশ, দলগুলোকে ঐক্যে থাকার আহ্বান

উজ্জল জিসান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৯ নভেম্বর ২০২৫ ১০:০৫ | আপডেট: ৯ নভেম্বর ২০২৫ ১২:০৮

বাংলাদেশ পুলিশ। ফাইল ছবি

ঢাকা: পুলিশ পুলিশের কাজ করছে। নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে, গ্রেফতার করছে, থানার দৈনন্দিন কাজ করছে। সরকারের হিসাব অনুযায়ী, যা করার তাই করছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী একবছরে পুলিশ শূন্য থেকে ৯০ ভাগে উন্নীত হয়েছে। আর সংস্থাটির মুখপাত্ররা বলছে, দুর্দান্ত গতিতে এগিয়ে চলেছে পুলিশ। যেটি সবার আগে করা দরকার সেটি গুরুত্ব দিয়ে করা হচ্ছে। মাদক, ছিনতাই, ডাকাতি, খুন ধর্ষণসহ নানান অপরাধ প্রতিরোধসহ কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সংগঠনের ঝটিকা মিছিল সামলাচ্ছে পুলিশ। তাদের আটক ও গ্রেফতারও করছে।

এদিকে আগামী ১৩ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত শেখ হাসিনাসহ বেশ কযেকজনের রায়ের দিন ধার্য রয়েছে। ওই দিন আওয়ামী লীগের (কার্যক্রম নিষিদ্ধ) শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা দেশের বাইরে থেকে ঢাকায় ‘লকডাউন’ ঘোষণা করেছে। কথিত এই লকডাউনকে কেন্দ্র করে ঢাকায় রাজনীতির মাঠ উত্তপ্তের আশঙ্কা করছে অনেকেই।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, রাজধানীর যাত্রাবাড়ী-শনির আখড়া এলাকায় ‘লকডাউন’ বাস্তবায়নে নাকি লিয়াকত শিকদারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আর ধানমন্ডি, গুলিস্তান, পল্টন, মতিঝিল, শাহবাগ, রমনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ইসমাইল হোসেন সম্রাট ও মাইনুল হাসান নিখিলকে। গাজীপুরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জাহাঙ্গীর আলমকে। তবে, যে চারজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তারা সবাই দেশের বাইরে। তাদের কথায় সাধারণ কর্মীরা মাঠে নাও নামতে পারে। পুলিশ বলছে, বাইরে থেকে এসব উসকে দেওয়া হচ্ছে, যাতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত থাকে। আন্দোলন উসকে দেওয়ার খবর পুলিশের কাছে এসেছে। পুলিশ এসব তথ্য বিশ্লেষণ করছে। এর পর তারা ব্যবস্থা নেবে।

অপরদিকে আওয়ামী লীগের কথিত ‘লকডাউন’ প্রসঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, সরকারের সঙ্গে কাজ করা বিদ্যমান দলগুলো নিজেরা নিজেদের সামলান আগে। নিজেরা নিজেদের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি বাদ দিয়ে, মতপার্থক্য ভুলে ঐক্য ঠিক রাখুন। রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্য গড়লে, এক হলে, কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা কোনো দল মাঠে পাত্তা পাবে না। আর নিজেরা মারামারি করলে, সুযোগ নেবে তারা। এতে ক্ষতি হবে সবার।

পুলিশ জানিয়েছে, ১৩ নভেম্বরকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে সবধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। থানা পুলিশ হাই-অ্যালার্টে রয়েছে। একইসঙ্গে র‌্যাব, ডিবি পুলিশ, অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও নজরদারি বাড়িয়েছে। অন্যদিকে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনী মাঠে থাকবে। প্রয়োজনে প্রস্তুত থাকা বিজিবিও মাঠে নামার সম্ভাবনা রয়েছে। রোববার (৮ নভেম্বর) দিবাগত রাত থেকে রাজধানীতে ‘বড় অভিযান’-এ নামছে পুলিশ ও যৌথবাহিনী। অভিযানের আওতায় আবাসিক হোটেল, টার্গেট করা বাসা-বাড়িও থাকবে।

পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, পুলিশের এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি নজরদারি ঝটিকা মিছিলের দিকে। ঝটিকা মিছিল বের হলেই যেন তা ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয় এবং সবাইকে যাতে আটক করা হয়। সাদা পোশাকেও পুলিশ সদস্যরা মাঠে নজরদারি করছে। ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) নজরুল ইসলাম বলেন, ‘রাজধানীতে যেকোনো নাশকতার পরিকল্পনা নস্যাৎ করতে প্রস্তুত রয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে রয়েছে। কেউ বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করলে তা দমন করা হবে। ডিএমপির সব ইউনিট মাঠে কাজ করছে।’

জানা গেছে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি আগামী ১৩ নভেম্বর দিনব্যাপী ফ্যাসিবাদবিরোধী দলগুলোর নেতাকর্মীরাও মাঠে সোচ্চার থাকবে। নিজেদের মধ্যে যতই মতবিরোধ থাকুক না কেন ওই দিন তারা ফ্যাসিবাদীদের ঠেকাতে মাঠে অবস্থান নেবে। যারা ‘লকডাউন’ ডেকেছে তাদের প্রতিহত করার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে দলগুলো। ফলে সংঘর্ষ-সহিসংতা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে তা উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সরকারের নীতি-নির্ধারকদের দাবি, কেউ কোনো কিছু করতে পারবে না। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ‘মামলার রায়ের জন্য দিনক্ষণ ধার্য হয়েছে। কেউ বিশৃঙ্খলা করতে চাইলে সরকার তা কঠোর হাতে দমন করবে।’

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর