কাউন্সিলের মাধ্যমে আমাকে দলের সভাপতি করা হয়েছে দাবি— মফিজুল ইসলামের

ঢাকা : নিজেকে গণফোরামের বর্তমান সভাপতি দাবি করে সাবেক সংসদ সদস্য মফিজুল ইসলাম খান কামাল বলেছেন, একটি জাতীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে আমাকে দলের সভাপতি করা হয়েছে। গণফোরামের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ড. কামাল হোসেন ও ডা. মিজানুর রহমান আমাকে বহিষ্কার করার ক্ষমতা রাখেন না। আর ড. কামাল হোসেন এখন গণফোরামের কেউ নন। তিনি গণফোরাম থেকে অর্থাৎ রাজনীতি থেকে ২০২৩ সালের ২৭ অক্টোবর অবসর নিয়েছেন।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এমন দাবি করেন তিনি। গণফোরাম নেতা ড. মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া, অ্যাডভোকেট আবুল কাসেম ও অধ্যক্ষ উজ্জল ভৌমিক এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

নির্বাচন কমিশনেও আমি গণফেরামের সভাপতি হিসেবে স্বীকৃত এমন দাবি করে মফিজুল ইসলাম খান আরও বলেন, তবে তাদের ওয়েবসাইটে আমার নাম কেন নাই— সে বিষয়টি নির্বাচন কমিশন ভাল বলতে পারবে। এছাড়া তাদের ওয়েবসাইটে কারিগরি সমস্যাও থাকতে পারে।

এদিকে মফিজুল ইসলাম খান-এর এমন দাবি ও বক্তব্যের প্রসঙ্গে গণফোরামের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ডা. মিজানুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘মফিজুল ইসলাম খান গণফোরামের কেউ নন। দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে জাতীয় কাউন্সিলে কেন্দ্রীয় কমিটির দুই-তৃতীয়াংশের অধিক নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে সর্বসম্মতিক্রমে তাকে বহিস্কার করা হয়েছে। তার বহিষ্কার আদেশের কপি নির্বাচন কমিশনেও পাঠানো হয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে ২০২৪ সালের নির্বাচনে তার বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণের অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মফিজুল ইসলাম খান বলেন, ‘রাজনীতিতে অসত্য কথা বলা হয়। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা মিথ্যা।’

তিনি বলেন, ‘আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি। কিন্তু যখন দেখেছি, নির্বাচন সঠিকভাবে হচ্ছে না, তখন আমরা নির্বাচন থেকে সরেও দাঁড়িয়েছি।’

সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে তার নেতৃত্বে গণফোরামে সকলকে যোগদানের আহ্বান জানিয়ে মফিজুল ইসলাম খান বলেন, ‘গণফোরাম ন্যায় নীতি এবং মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের একটি রাজনৈতিক দল। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যারা নেই, তাদের সঙ্গে গণফোরাম থাকতে পারে না।’

সংবাদ সম্মেলনে ২০২৩ সালে গণফেরামের বিশেষ কাউন্সলে ড. কামাল হোসেনের লিখিত বক্তব্য তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়েছে, ১৯৯০ সালে বাংলাদেশের বিরাজমান রুগ্ন রাজনীতির বিপরীতে সুস্থধারার রাজনীতি প্রতিষ্ঠার সংক্ষা দেশের বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ-রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, কুটনীতিবিদ, আইনজীবী, পেশাজীবি, বৃদ্ধিজীবি ও প্রগতিশীল চিন্তা-চেতনার সচেতন নাগরিকদের নিয়ে গণফোরামের জন্ম হয়েছিল। দলের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আপনাদের নিয়ে পথ চলেছি, জাতীয় সমস্যা ও সংকট নিরসনে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমার বয়স এবং শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় এখন আর সক্রিয়ভাবে সভাপতির দায়িত্ব পালন করা সম্ভব হচ্ছে না। এমতাবস্থায় আমি সমস্ত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে, তথা গণফোরাম-এর সভাপতি পদ থেকে, অব্যাহতি নেয়ার ঘোষণা দিচ্ছি।’

ওই কাউন্সিল অধিবেশনেই ড. কামাল গণফোরামের সভাপতি হিসেবে মফিজুল ইসলাম কামাল খানকে সর্বসম্মতিক্রমে সভাপতি ঘোষণা করেন এবং এরপর দলের আর কোন জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়নি বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়।

সারাবাংলা/ এএইচএইচ/আরএস

গণফোরাম ড. কামাল হোসেন