চট্টগ্রাম ব্যুরো: দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য আগামী জানুয়ারি মাস থেকে কুরআন শিক্ষা কার্যক্রম চালু হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ মিলনায়তনে ‘আন্তর্জাতিক আরবি ভাষা দিবস’ উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় উপদেষ্টা এ কথা জানান। চবির আরবি বিভাগ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে কুরআন শিক্ষা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। ধর্মীয় ও নৈতিক মূল্যবোধ তৈরির লক্ষ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশন পরিচালিত মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রকল্পের আওতায় এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আসছে জানুয়ারিতে শুরু হবে এই কার্যক্রম।’
আরবি শিক্ষার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘আরবি হাজার বছরের ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ ভাষা। এ ভাষা কেবল যোগাযোগের মাধ্যম নয়, এটা সাহিত্য, সংস্কৃতি, দর্শন ও তত্ত্বীয় জ্ঞানের ভান্ডার। এ ভাষার গুরুত্ব, তাৎপর্য ও প্রভাব সবিস্তারে বলার অবকাশ রাখে না। পৃথিবীর ২০টিরও বেশি দেশে প্রধান ভাষা আরবি। বিশ্বের ৪০০ মিলিয়নের বেশি মানুষ এ ভাষায় কথা বলে। আরবি বিভাগে যারা লেখাপড়া করেন তাদের জন্য সারা পৃথিবীতে স্কলারশিপের দরজা খোলা আছে। আরববিশ্ব, তুরস্ক এমনকি ইংল্যান্ডেও আরবিতে পড়ে এমফিল, পিএইচডি, এমএ করার সুযোগ আছে।’
আরবি বিভাগের শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আরবিতে পড়ে কেন স্ক্রিপ্ট বাংলায় লিখবেন, এটা অবশ্যই আরবিতে লিখতে হবে। আরবির শিক্ষকরা আরবিতেই থিসিস লিখবে, বাংলায় নয়। আরবি বিভাগের শিক্ষার্থীদের উত্তরপত্র আরবি ছাড়া অন্য ভাষায় গ্রহণ না করার জন্য শিক্ষকদের প্রতি অনুরোধ জানাই।’
শিক্ষাঙ্গণে রাজনীতির নেতিবাচক প্রভাব উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা আমাদের জ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে বাধা। শিক্ষক নেবো আমার দলের, শিক্ষক বানাবো আমার কর্মীকে-এই কালচার পরিহার করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়কে কোনো নির্দিষ্ট দলের রাজনৈতিক কেন্দ্র পরিণত হতে দেওয়া উচিত নয়।’
চবির আরবি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন তালুকদারের সভাপতিত্বে সভায় চবি উপাচার্য মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার, উপ-উপাচার্য ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান ও ড. মো. কামাল উদ্দিন, কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন ইকবাল শাহীন খান বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে আরবি ভাষা ও সাহিত্যে অবদান এবং আরবি শিক্ষায় স্কলারশিপ প্রদান ও আরবি গ্রাজুয়েটদের কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখার জন্য ৩২ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।