ইবি: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) সাবেক সহ-সমন্বয়ক নাহিদ হাসানের বিরুদ্ধে বিদেশি অধ্যাপকের সই জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। তিনি অর্থনীতি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ নিউ অরলিন্সের অধ্যাপকের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে তিনি একটি ভুয়া চাকরির প্রস্তাব বা অফার লেটার তৈরি করেছেন বলে জানা যায়।
স্বাক্ষর জালিয়াতি করা ওই নথিতে নাহিদ উল্লেখ করেন, ইউনিভার্সিটি অফ নিউ অরলিন্স-এর অর্থনীতি ও অর্থসংস্থান বিভাগ থেকে ১২ নভেম্বর ২০২৫-২০২৬ শিক্ষাবর্ষের জন্য তিনি টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট (TA) পদের প্রস্তাব পেয়েছেন। যার মেয়াদ শুরু হবে আগামী ১৪ আগস্ট, ২০২৬ থেকে ১৩ মে, ২০২৭ সাল পর্যন্ত। এছাড়া এই পদের জন্য তাকে বাৎসরিক ১৮,০০০ (আঠারো হাজার) মার্কিন ডলার উপবৃত্তি (Stipend) প্রদান করা হবে বলে উল্লেখ করেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুল-টাইম গ্র্যাজুয়েট ছাত্র হিসেবে তালিকাভুক্ত থাকবেন এবং নন-রেসিডেন্ট ফি মওকুফ পাবেন।
এছাড়া আরেকটি জালিয়াতি করা নথিতে দেখা যায়, উল্লিখিত প্রস্তাবটি নাহিদ হাসান গত ১৪ নভেম্বর গ্রহণ করেছেন এবং তাতে তিনি স্বাক্ষর করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দফতরে খোঁজ নিলে জানা যায়, প্রথমে এই অফার লেটারসহ আবেদন করলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত হওয়ার জন্য ইউনিভার্সিটি অফ নিউ অরলিন্সের ওই অধ্যাপককে মেইল করে। তবে প্রতিক্রিয়া না আসায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সারির এক ব্যক্তির বিশেষ সুপারিশে এই মূল সনদ উত্তোলনের চেষ্টা করে নাহিদ হাসান। সর্বশেষ তথ্য মতে সেই সুপারিশের পর তার মূল সনদটির প্রিন্ট সম্পন্ন হয়েছে। তবে এখনও হস্তান্তর করা হয়নি।
তবে নথিতে স্বাক্ষরকারী হিসেবে নাম থাকা ইউনিভার্সিটি অব নিউ অরলিন্সের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও অর্থনীতিতে পিএইচডি সমন্বয়কারী ড. কবীর হাসান জানান তিনি এমন কোনও সই করেননি। তিনি বলেন, “ছেলেটি আমার সই জালিয়াতি করে একটি অফার লেটার তৈরি করেছে। এটি সুস্পষ্টভাবে অন্যায়।”
তিনি তার ক্ষতি হোক এটা চান না এবং ভবিষ্যতে তার এ ধরনের অনৈতিক কাজ থেকে বিরত থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেন।
জাল নথি তৈরি সম্পর্কে জানতে চাইলে নাহিদ হাসান বলেন, ‘আমার ভুল হয়েছে। মূল সনদ উত্তোলনের জন্য বেশকিছু প্রক্রিয়া আছে। সেই জন্য এটি করা হয়েছে। এক জুনিয়রকে বললে সে এই অফার লেটারটি প্রস্তুত করে দেয়। তবে এটি করা আমার একেবারেই উচিত হয়নি।’
এসব অভিযোগের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. ওয়ালিউর রহমান বলেন, ‘আমরা প্রাথমিক ভাবে যাচাই-বাছাই করে তার সনদটি প্রস্তুত করেছি। তবে অনেক ক্ষেত্রে ভালোভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়না। এছাড়া কারো কারো স্পেশাল সুপারিশেও কাজ করতে হয়। তবে যে অভিযোগটি জানতে পেরেছি তা খতিয়ে দেখা হবে।’