আকিফের তোপে রংপুরের আটে আট
১৭ জানুয়ারি ২০২৫ ২২:৪১ | আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২৫ ২২:৪৪
ইফতিখার আহমেদের ফুল লেংথের বলে হাঁটু গেড়ে লফটেড স্লগ সুইপ করলেন শামীম হোসেন পাটোয়ারি। স্কয়ার লেগ বাউন্ডারিতে সামনের দিকে ডাইভ করে ক্যাচটা ধরলেন রংপুর রাইডার্সের রকিবুল হাসান। সাথেসাথেই যেন ফুঁসে উঠল জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের গ্যালারি। একইসাথে চিটাগং কিংসের সমর্থকেরা বেরিয়ে যেতে থাকলেন আসন ছেড়ে। কারণ চিটাগং কিংসের জয়-পরাজয়ের ওই সুক্ষ্ম লাইনে ছিলেন দাঁড়িয়ে শামীম। হ্যাঁ, চিটাগং ম্যাচ হয়তো হেরেছে ইনিংসের শেষ বলে। কিন্তু ম্যাচ কার্যত চিটাগংয়ের হাত থেকে ছিটকে যায় ব্যক্তিগত ৩৮ রানে শামীম আউট হওয়ার পরই।
রংপুর রাইডার্সের ১৬৫ রানের লক্ষ্য ছুঁতে গিয়ে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৩১ রান তুলতে পেরেছে চিটাগং। ৩৩ রানের এই জয়ে বিপিএলে টানা আট ম্যাচ জিতল রংপুর। আর স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় বাংলাদেশি দল হিসেবে জিতল টানা ১১ ম্যাচ। বিপিএলের আগে গ্লোবাল সুপার লিগেও ফাইনালসুহ জিতেছিল টানা তিন ম্যাচ। তবে বিপিএলের ইতিহাসে টানা সর্বোচ্চ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের। ২০২২-২৩ মৌসুমের আসরে টানা ১১ ম্যাচ জিতেছিল চারবারের শিরোপাজয়ী দলটি।
রান তাড়ায় শুরুতেই বিপদে পড়ে চিটাগং। রকিবুলের করা ইনিংসের প্রথম বলেই ক্যাচ দিয়ে ফেরেন উসমান খান। পারভেজ হোসেন ইমন, আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান গ্রাহাম ক্লার্করা এরপর কিছু রান তুললেও তোপ দাগাতে অপেক্ষায় ছিল আকিফ জাভেদ। এই বাঁহাতি পেসারের তোপে ৫৩ রানের মধ্যেই চার উইকেট হারায় বন্দর নগরীর দল।
নাঈম ইসলামকে সাথে নিয়ে শুরুর সেই চাপ সামলে উঠেন শামীম। ওয়ানডে স্টাইলের ব্যাটিংয়ে দুজন মিলে ৪৭ বলে ৫১ রান। সেখানেই যা একটু লড়েছে চিটাগং। অবশ্য আকিফের গতির তোপের সাথে শেখ মাহেদীর স্পিনেও বেশ ধুঁকেছেন শামীমরা। চার ওভারে ২৫ রান দিয়ে উইকেট শূন্য ছিলেন মাহেদী। তবে পূর্ণ কোটার বোলিং করে ৩২ রান দিয়ে চার উইকেট নেন আকিফ। মাত্র এক উইকেট পেলে আজ দুর্দান্ত বল করেছেন তিন ওভারে মাত্র ১৫ রান দেয়া বাঁহাতি স্পিনার রকিবুল।
টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই চিটাগংয়ের দুই পেসারের তোপের মুখে পড়ে রংপুর। বিনুরা ফার্নান্দো আর অভিষিক্ত মারুফ মৃধার দুর্দান্ত সুইং-মুভমেন্টের সাথে খাপ খাওয়াতে শুরুর কয়েক ওভারে বেশ সংগ্রামই করেছে রংপুরের টপ অর্ডার। অবশ্য কিংসের প্রথম সাফল্য এসেছে স্পিনার আলিসের হাত ধরে। ওপেনার তৌফিক তুষার আলিসের বলে মিড অফে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন দলীয় নয় রানে।
এরপর তিনে নামা সাইফ হাসানের সাথে ৪১ বলে ৫৪ রানের জুটিতে দলকে ম্যাচে ফেরান ওপেনার স্টিভেন টেলর। যদিও এই জুটিতে অবদান বেশি ব্যক্তিগত ৮ রানে জীবন পাওয়া টেলরেরই। ৫৪ রানে জুটিতে তার অবদান ৩৫। সাইফ ফিরেছেন আলিসের দ্বিতীয় শিকার হয়ে। রান পাননি ইফতিখারও।
তবে পাঁচে নামা খুশদিল আজ খেলেছেন হাত খুলে, এই ম্যাচেও দিয়েছেন ধারাবাহিকতার পরিচয়। ৭ ছক্কা আর দুই চারে মাত্র ২৮ বলে খেলেছেন ৫৯* রানের ইনিংস। ৭ ছক্কার তিনটাই টানা মেরেছেন দারুণ শুরু করা বাঁহাতি পেসার মারুফকে। ইনিংসের ১৮তম ওভারে স্বদেশি মোহাম্মদ ওয়াসিমকেও পিটিয়েছেন তিন ছক্কা আর এক চারের প্যাকেজে। অবশ্য ওয়াসিমের বাউন্সারেও তার হাতে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন খুশদিল।
দুটি করে উইকেট নেন আলিস ও ওয়াসিম। একটি করে উইকেট পেয়েছেন আরাফাত সানি ও বিনুরা ফার্নান্দো। মূলত বিনুরার বলেই বেশি ভুগেছে রংপুর। প্রথম তিন ওভারে মাত্র ৭ রান খরচা করেছিলেন এই বাঁহাতি শ্রীলংকান বোলার। স্পেল শেষ করেছেন চার ওভারে ১৪ রান দিয়ে।
সারাবাংলা/জেটি