তামিমের মতো সাকিবের জন্যও বিসিবির অপেক্ষা
৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১৯:০৫ | আপডেট: ৮ জানুয়ারি ২০২৫ ২২:৫০
গত বছরের সেপ্টেম্বরে এক সাক্ষাৎকারে সাকিব আল হাসান বলেছিলেন ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শেষ করতে চান। কিন্তু গত ০৫ আগস্টের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বদলের পর পাল্টে গেছে সাকিবের ভাগ্যও। দেশে ফিরতে চেয়েও পারেননি। মানসিক অবস্থা বিবেচনা করে যাননি ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও। এর মধ্যে অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বোলিং থেকে। তাই প্রশ্নটা উঠেই যায় চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে কি সাকিব খেলতে পারবেন?
ভারত সফরে কানপুর টেস্টের আগে সাকিব অবসর ঘোষণা দেন টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি থেকে। যদিও বলেছিলেন প্রয়োজন মনে করলে টি-টোয়েন্টিতে ফিরতে পারেন এই অলরাউন্ডার। সেই সংবাদ সম্মেলনেই জানান, ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলতে চান ক্যারিয়ারের বিদায়ী টেস্ট। সেটা আর সম্ভব হয়নি দর্শক-সমর্থকদের প্রতিবাদের মুখে। যেহেতু পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন সাকিব, সেই হিসেবে নিরাপত্তার ইস্যুতে সাকিবকে দেশে না ফেরার নির্দেশনা দেয়া হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে।
যদিও কদিন আগে বিপিএলের ঢাকা পর্ব চলাকালীন মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের প্রেসবক্সে এসে বিসিবি সভাপতি বলেছিলেন, সাকিবকে ফেরাতে শেষ চেষ্টা করে দেখবেন তিনি। আজ সেই ধারাবাহিকতায় প্রধান নির্বাচকের কাছে প্রশ্ন গেল সাকিবের ভবিষ্যত নিয়ে। যদিও প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু সিলেট গিয়েছিলেন চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলা না খেলা নিয়ে তামিম ইকবালের সিদ্ধান্ত জানতে। তামিম এখনই সিদ্ধান্ত জানাননি, সময় চেয়েছেন আরও দুই-তিনদিন।
বিপিএলের ডামাডোলে বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে বড় দুই তারকার ভবিষ্যত নিয়ে কথা বলতে গিয়ে লিপু জানান, সাকিবকে দলে রাখা না রাখা নিয়ে পরিস্কার কোনো নির্দেশনা পাননি তারা। কারণ বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষায় এখনো সাকিব উৎরাতে পেরেছেন কিনা, এই বিষয়ে জানে না বিসিবির নির্বাচক প্যানেল।
‘সাকিবের ব্যাপারে কোন নির্দেশনা আসেনি। প্রথম যে পরীক্ষা দিলেন, সেখানে তিনি উত্তীর্ণ হতে পারেননি, খুবই বিস্ময়কর। আমাকে নিশ্চিত হতে হবে তিনি ব্যক্তি পর্যায়ে আবার একটা পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়েছেন কি না এটা একটু খোঁজ নিয়ে জানতে হবে।’, বলেন লিপু।
সারের হয়ে কাউন্টি ক্রিকেট খেলতে গিয়ে বোলিং অ্যাকশন নিয়ে আম্পায়ারদের প্রশ্নের মুখে পড়েন সাকিব। ইংল্যান্ডের লাফবোরো ইউনিভার্সিটিতে বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষা দিলেও সাকিব পাশ করেননি। পরবর্তীতে চেন্নাইয়ের এক বোলিং ল্যাবে দুই দফায় দিয়েছেন বোলিং টেস্ট। প্রথম দফাতে ব্যর্থ হলেও দ্বিতীয় দফার টেস্টের ফলাফল এখনো আসেনি।
এদিকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য দল ঘোষণার শেষ সময় আগামী রোববার। এর মধ্যে সাকিব বোলিং পরীক্ষায় পাশ পারলে আপাতত একটি সমস্যার সমাধান হবে। তবে তার রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা রয়েই যাচ্ছে, সেটা পরিস্কার হয়ে উঠল লিপুর কথায়।
সাকিবকে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলে রাখা প্রসঙ্গে প্রধান নির্বাচক বলেন, ‘এটা আসলে আমরা নির্বাচক মন্ডলীরা বোর্ডের কাছ থেকে জানতে চেয়েছি যে তিনি আমাদের এ প্রক্রিয়ার জন্য অ্যাভেইলঅ্যাবল আছেন কি না। সেটা এখনও আমরা উত্তর পুরোপুরি পাইনি। আংশিক একটা পেয়েছি। যেহেতু আবার একটা শোনা যাচ্ছে তিনি অংশগ্রহণ করেছেন (বোলিং পরীক্ষায়)। সেটার জন্যও অপেক্ষা করতে হবে। প্রতিটি মিনিটই হয়তো গুরুত্বপূর্ণ, আশা করি এক-দুই দিনের মধ্যে পরিষ্কার হয়ে যাবে বিষয়গুলো।’
সারাবাংলা/জেটি