‘নতুন’ বিপিএলের শুরুতে রান উৎসব, বরিশালের দুর্দান্ত জয়
৩০ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৭:১১ | আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৯:০৩
এবারের বিপিএল হবে নতুন আঙ্গিকে, অনেক আগ থেকেই এমন কথা বলে আসছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। মাঠের বাইরের বিষয়ের সঙ্গে মাঠের খেলাতেও পরিবর্তন আনার আভাস দেওয়া হয়েছে। বিপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে সেটা দেখাও গেল। চার-ছক্কার ফুলঝুড়িতে প্রথম ম্যাচে রীতিমত রান উৎসব দেখা গেল। রান উৎসবের ম্যাচে ৪ উইকেটের দুর্দান্ত জয় পেয়েছে টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশাল।
বিপিএলে মিরপুরের পিচে সচরাচর বড় রানের দেখা মিলে না। এবার ‘পরিবর্তনের’ কথা বলে পিচেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। ব্যাটিং সহায়ক পিচ বানানোর চেষ্টা করেছে বিসিবি। তার সুফল মিলল উদ্বোধনী ম্যাচে। প্রথমে ব্যাটিং করে ইয়াছির আলি রাব্বির ৯৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংসে ভর করে ১৯৭ রানের বিশাল স্কোর গড়েছিল দুর্বার রাজশাহী। পরে ফাহিম আশরাফ ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে সেই রান পেরিয়ে জিতেছে ফরচুন বরিশাল।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রানের পাহাড় ডিঙিয়ে জিতলেও বরিশালের শুরুটা কিন্তু খুবই বাজে হয়েছে। ইনিংসের প্রথম বলেই ফিরেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তামিম ইকবালও বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেননি (৫ বলে ৭ রান)। চারে নামা কাইল মায়ার্স ৫ বলে ৬ রান ও পাঁচে নামা মুশফিকুর রহিম ১১ বলে ১৩ রান করে যখন ফিরলেন ঢাকার স্কোর তখন ৪/৫১। একপ্রান্ত আগলে রেখে খেলতে থাকা তাওহিদ হৃদয় ২৩ বলে ৩২ রান করে ফিরেছেন দলীয় ৬১ রানের মাথায়।
তারপর বরিশালের জয়ের কথা ক’জনই বা ভেবেছিলেন! কিন্তু ফাহিম আশরাফকে নিয়ে ভিন্ন গল্প লিখেছেন অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ। মোহাম্মদ নবিকে রেখে শাহিন শাহ আফ্রিদি ও ফাহিম আশরাফকে ক্রিজে পাঠিয়ে দেওয়ার ‘গেম’ খেলেছেন বরিশাল অধিনায়ক তামিম ইকবাল। সেটা কাজেও লাগল দারুণভাবে।
সাতে নেমে ৩ ছয়ে ১৭ বলে ২৭ রান করে দলের রান রেটের চাপ কিছুটা কমিয়েছেন শাহিন। পরে ফাহিম আশরাফ এসে জুটি বাঁধেন মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে। দুজন শেষ দিকে স্রেফ কচুকাটা করেছেন রাজশাহীর বোলারদের। সপ্তম উইকেট জুটিতে মাত্র ৩৫ বলে ৮৮ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন দুজন।
মাহমুদউল্লাহ মাত্র ২৬ বলে ৫টি চার ৪টি ছয়ে ৫৬ রানে অপরাজিত ছিলেন। ফাহিম আশরাফ ২১ বলে ৫৪ রান করে অপরাজিত ছিলেন। পাকিস্তানি অলরাউন্ডার চার মেরেছেন ১টি, আর ছক্কা ৭টি! ১৮.১ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে জয়ের জন্য ২০০ রান তোলে বরিশাল। রাজশাহীর হয়ে ৩১ রানে তিন উইকেট নিয়েছেন তাসকিন আহমেদ।
এর আগে রাজশাহী বড় স্কোর গড়লেও শুরুটা তাদের ভালো হয়নি। ইনিংসের দ্বিতীয় ও চতুর্থ ওভারে দুই উইকেট তুলে নেন বরিশালের ক্যারিবিয়ান পেস বোলিং অলরাউন্ডার কাইল মায়ার্স। শুরুতে দুই উইকেট পরে যাওয়াতে রাজশাহী এরপর তেঁড়েফুঁড়ে খেলতে পারেনি। তৃতীয় উইকেটে ধীরেসুস্থে এগুচ্ছিলেন অধিনায়ক এনামুল হক বিজয় ও ইয়াছির আলি রাব্বি। তবে সেট হওয়ার পর রীতিমতো ঝুড় তুলেছিলেন ইয়াছির।
রানের গতি বাড়াতে গিয়ে এনামুল হক বিজয় ফিরেছেন ৫১ বলে ৬৫ রান করে। ৪টি চার ৫টি ছয়ে এই রান করেন বিজয়। তৃতীয় উইকেটে দুজনের জুটি ছিল ৮৭ বলে ১৪০ রানের। ইয়াছির শেষ পর্যন্ত ব্যাটে দাপট দেখিয়েছেন।
শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৪৭ বলে ৯৪ রান করে। ইয়াছির চার মেরেছেন ৭টি, আর ছক্কা ৮টি। বরিশালের হয়ে কাইল মায়ার্স দুটি ও ফাহিম আশরাফ একটি উইকেট নিয়েছেন। শাহিন শাহ আফ্রিদি ৪ ওভারে ৩৩ রান খরচায় ছিলেন উইকেটশূণ্য।
সারাবাংলা/এসএইচএস