Monday 06 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ

শায়রুল কবির খান
১৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৫:৩৯ | আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৫:৪০

অনেক চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্যে দিয়ে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ ৫৩ বছর পার করে ৫৪ বছরের পদাপর্ণ করছে আজ ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪ মহান বিজয় দিবসে। স্বাধীনতার ঊষালগ্নে দুর্নীতি, লাগামহীন লুটপাট, নির্যাতন-নিপীড়ন, মামলা, গ্রেফতার, হত্যার মতো ভয়াবহ পরিস্থিতিতে আসে ১৯৭৫ সালের আগস্ট পটপরিবর্তন।

ওই বছরের ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতির মধ্য দিয়ে সিপাহি-জনতা মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফের বন্দিশালা থেকে বিচক্ষণ সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে মুক্ত করে জনতার কাতারে নিয়ে আসে। সে দিন তার আবির্ভাবেই বাংলাদেশ রক্ষা পায়। ন্যায় বিচার ও অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে মানবিক মর্যাদায় ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে’র ভিত্তিতে জাতিরাষ্ট্র হিসেবে বিশ্ব দরবারে প্রতিষ্ঠা পায়।

বিজ্ঞাপন

অর্থনৈতিক অর্জনে যে দুটি মৌলিক ক্ষেত্র জিয়াউর রহমান প্রতিষ্ঠা করে গেছেন, আজ পর্যন্ত তার ওপর বাংলাদেশের অর্থনীতি নির্ভরশীল। এর বিকল্প এখনো তৈরি হয়নি, যা বৈদেশিক মূদ্রা আয়ের প্রধান উৎস হিসেবে পরিচিত। এই উৎস দুটির দ্বার উন্মচিত ও বিকশিত হয় শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রত্যক্ষ নেতৃত্বে। তার সুফল পেয়ে যাচ্ছে এই দেশে এবং অদূর ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যায়।

ঢাকার পুরাতন শহরের বাসিন্দা নুরুল কাদেরের মালিকানাধীন দেশ গার্মেন্টস দেশে প্রথম রফতানিমুখী পোশাক কারখানা হিসেবে ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রত্যক্ষ সহায়তায় গড়ে ওঠে এই পোশাক শিল্প।

১৯৭৭ সালে সৌদি আরবের বাদশাহ খালিদ বিন আব্দুল আজিজের আমন্ত্রণে সৌদি আরব যান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক ও আধুনিক স্বনির্ভর বাংলাদেশের রূপকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। তিনি উপহার হিসেবে সঙ্গে নিয়ে যান বেশ কিছু নিম গাছের চারা। বাদশাহ খালিদ বিন আব্দুল আজিজকে উপহার দেওয়ার সময় তিনি বলেন, ‘গরিব মানুষের দেশের গরিব রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে আপনার জন্য আমার এ সামান্য উপহার।’

বিজ্ঞাপন

বাদশাহ খালিদ বিন আব্দুল আজিজ থেকে এখন পর্যন্ত বহু দেশ থেকে বহু মূল্যবান উপহার পেয়েছেন, পেয়ে আসছেন। কিন্তু এমন মূল্যবান উপহার তিনি পাননি। আবেগে আপ্লুত বাদশাহ জড়িয়ে ধরেন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে। বলেন, ‘আজ থেকে সৌদি আরব ও বাংলাদেশ পরস্পর অকৃত্রিম বন্ধু।’ তিনি বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য অর্থ সাহায্য দিতে চান।

সে প্রস্তাবে রাজি হননি জিয়াউর রহমান। তিনি বলেন, আমাদের দেশের মানুষ গরিব, কিন্তু তারা কঠোর পরিশ্রম করতে জানে। আপনার দেশের উন্নয়ন কাজের জন্য হাজার হাজার শ্রমিক দরকার। একটি নব্য স্বাধীন মুসলিম দেশের জন্য যদি আন্তরিকভাবে সাহায্য করতে চান, তাহলে আমার দেশের বেকার মানুষদের কাজ দিন।

বাদশাহ খালিদ বিন আব্দুল আজিজ রাজি হলেন। উন্মোচিত হলো এক নতুন দিগন্ত। তখন থেকে বাংলাদেশ থেকে লাখ লাখ মানুষ সৌদি আরব গিয়ে নিজেদের ভাগ্য বদলসহ স্বাবলম্বী হয়ে ফিরেছেন বাংলাদেশে।

রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের দেওয়া সেই নিমের চারাগুলোও আজ মহীরূহ হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে সৌদি জুড়ে। মরুভূমিতে যেন টিকে গেছে আধুনিক স্বনির্ভর বাংলাদেশের স্মৃতি উঁচু করে। আরাফাতের ময়দানে সবুজ শীতল ছায়া দিয়ে চলেছে অসংখ্য নিম গাছ। সৌদি আরবে ১৯৭৭ সাল থেকে নামকরণ করা হয় ‘জিয়া ট্রি’, বাংলায় বলা হয় ‘জিয়া গাছ’। আর আরবিতে কেউ কেউ বলেন ‘জিয়া সাজারাহ’।

লেখক: রাজনৈতিক বিশ্লেষক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মী

সারাবাংলা/টিআর

জিয়াউর রহমান শায়রুল কবির খান

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর