পোল্ট্রি শিল্প বর্তমানে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কর্মসংস্থানের খাত-যেখানে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি বেসরকারি বিনিয়োগ রয়েছে। দেশে নিবন্ধিত ৮৫,২২৭টি বাণিজ্যিক এবং প্রায় ১,৯১,০০০টি প্রান্তিক পোল্ট্রি খামার রয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ৬ কোটি ৬৮ লক্ষ ডিম উৎপাদিত হচ্ছে-যা নিঃসন্দেহে এক বড় সাফল্য।দেশীয় প্রাণিসম্পদ শুধু উৎপাদনশীলতার জন্য নয়, গ্রামীণ খাদ্যচাহিদা, সংরক্ষণ সুবিধা, নারীর কর্মসংস্থান ও কৃষির ঐতিহ্যের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বর্তমানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতকে শিল্প হিসেবে দেখা হলেও উৎপাদনের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ এখনও গ্রামীণ সাধারণ মানুষের হাতেই হচ্ছে। শিল্পায়ণ প্রয়োজন, তবে দেশীয় প্রজাতির সুরক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে। বিশেষ করে সংকর জাত তৈরির সময় যেন দেশীয় জাতের মৌলিক বৈশিষ্ট্য হারিয়ে না যায় সেদিকেও লক্ষ রাখতে হবে। দেশীয় জাতের মাছ, মাংস ও প্রাণিসম্পদ বাংলাদেশের অমূল্য সম্পদ, যেগুলো রক্ষা করা এখন সময়ের দাবি। আশার কথা হলো, পৃথিবীর অনেক দেশের যেসব প্রাণিসম্পদ বিলুপ্ত হয়ে গেছে, সেগুলোর অনেকগুলোই আমাদের দেশে টিকে আছে।
এক বছরের বেশি সময় ধরে ডিম ও মুরগির মাংসের বাজারে টানা দর পতনে সংকটে পড়েছে দেশের পোলট্রি শিল্প। প্রান্তিক খামারি থেকে শুরু করে ফিড মিল, ব্রিডার ফার্ম, ওষুধ ও বিপণন খাত– সবখানেই নেমে এসেছে স্থবিরতা। লোকসান সামাল দিতে না পেরে একের পর এক খামার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, কমছে উৎপাদন। এই অবস্থা চলতে থাকলে পোলট্রি শিল্প টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ডিমের উৎপাদন খরচ বাড়লেও পাইকারি বাজারে দাম পড়ে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে লেয়ার খামারিরা। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর প্রতিটি ডিমের দর নির্ধারণ করেছে খামার পর্যায়ে ১০.৫৮ টাকা, পাইকারিতে ১১.০১ টাকা ও খুচরায় ১১.৮৭ টাকা। প্রতিটি ডিমের উৎপাদন খরচ ধরা হয়েছে ১০.১৯ টাকা। অথচ বর্তমানে ঢাকা, গাজীপুরসহ আশপাশের এলাকায় খামার পর্যায়ে ডিম বিক্রি হচ্ছে গড়ে ৭.৮৭ টাকা। রাজধানীর খুচরা বাজারে দাম কিছুটা বেশি হলেও সেটি ৮.৮০ থেকে ৯ টাকার মধ্যেই ঘোরাফেরা করছে। সে হিসাবে প্রতিটি ডিম বিক্রি করে খামারির লোকসান হচ্ছে দুই থেকে ২.৩০ টাকা। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ডিমের দৈনিক উৎপাদন সাড়ে পাঁচ কোটি পিস। ফলে এক মাসেই খামারির লোকসানের পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে প্রায় ৩০০ থেকে ৩৪৮ কোটি টাকা।
ডিমের মতোই দর পতন হয়েছে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির বাজারে। সরকার নির্ধারিত হিসাবে খামার পর্যায়ে প্রতি কেজি ব্রয়লারের দর ১৬৮.৯১ টাকা। অথচ বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২২ টাকায়। ফলে প্রতি কেজিতে লোকসান গুনতে হচ্ছে প্রায় ৪৭ টাকা। সোনালি মুরগির ক্ষেত্রেও কেজিতে লোকসান ৫০ টাকার ওপরে। লোকসান সামাল দিতে না পেরে অনেক খামারি নির্ধারিত সময়ের আগেই মুরগি বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে একদিকে ক্ষতি বাড়ছে, অন্যদিকে উৎপাদন চক্র ভেঙে পড়ছে। খামার পর্যায়ে ডিমের দাম সাত টাকা ৫০ পয়সায় নেমে এলেও খুচরা বাজারে একই ডিম বিক্রি হচ্ছে ৯ থেকে ১০ টাকায়। অর্থাৎ একডজন ডিমে খামারি যেখানে ২০ থেকে ২৬ টাকা লোকসান গুনছেন, সেখানে মধ্যস্বত্বভোগীরা ঠিকই ২০ থেকে ২৪ টাকা মুনাফা করছেন। একই চিত্র ব্রয়লার মুরগির বাজারেও। প্রতি কেজিতে খামারির লোকসান ৪৫ থেকে ৪৭ টাকা, অথচ মধ্যস্বত্বভোগীদের মুনাফা ৪০ টাকার বেশি। পরিস্থিতি যাই হোক, লোকসানের বোঝা শুধু খামারির ঘাড়েই পড়ছে। খামারির কান্না কেউ শোনে না।
ফেনীর সোনাগাজীর সাতবাড়িয়া গ্রামের খামারি মো. ইকবাল হোসাইন সোহাগ বলেন, প্রতিটি ডিম উৎপাদনে খরচ পড়ছে প্রায় ৯ টাকা। কিন্তু বিক্রি করতে হচ্ছে ৭.৫০ টাকায়। প্রতিদিন লোকসান ২২ হাজার টাকার বেশি। মাস শেষে তা দাঁড়ায় প্রায় ৭ লাখ টাকা। তিনি বলেন, শীতকালে সাধারণত ডিমের দাম ভালো থাকে। তবে এ বছর উল্টো। সামনে রমজান আসছে, দাম আরও কমবে। এই ক্ষতি দেখার যেন কেউ নেই।একই উপজেলার সাহেবের হাট এলাকার খামারি মো. নুরনবী জানান, খাদ্য ও ওষুধের দাম বাড়ছে, রোগবালাই লেগেই আছে। অথচ ডিমের দাম উৎপাদন খরচের অনেক নিচে। অনেক খামারি ইতোমধ্যে খামার বন্ধ করে দিয়েছেন। আমরাও টিকে থাকার লড়াই করছি। কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরের ডিম ও মুরগির দর পতনে পোলট্রি খাত কার্যত বিপর্যস্ত। পূর্ব গোবরিয়া গ্রামের খামারি শরিফ ও পশ্চিম গোবরিয়ার হাবিবুর রহমান প্রায় এক কোটি টাকা বিনিয়োগ করে সাড়ে ছয় হাজার লেয়ার মুরগির খামার গড়ে তুলেছেন। এখন প্রতিদিনই লোকসান গুনতে হচ্ছে। দুই মাসে লোকসান দাঁড়িয়েছে অন্তত সাত লাখ টাকা। ডিম ও মুরগির দাম পড়ে যাওয়ায় খামারিরা নিয়মিত ফিড ও ওষুধ কিনতে পারছেন না। কুলিয়ারচরের পোলট্রি ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. আরশ মিয়া বলেন, অনেক খামারে খাদ্য সরবরাহ করাই কঠিন হয়ে পড়েছে। এতে ফিড ও ওষুধ ব্যবসায়ীরাও বিপাকে পড়ছেন। সরকার ডিমের সর্বোচ্চ খুচরা দর নির্ধারণ করলেও ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ করেনি। ফলে দাম বাড়লে বাজার তদারকি জোরদার হলেও দর পতনের সময় খামারির পক্ষে কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যায় না। বছরের বড় একটি সময় এই দর পতন চলতেই থাকে, পরে সরবরাহ সংকটে বাজার আবার অস্থির হয়ে ওঠে।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পোলট্রি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ইলিয়াস হোসেন বলেন, আলু-পেঁয়াজের মতো ডিমও যদি সরকারিভাবে সংরক্ষণের সুযোগ দেওয়া হয়, তাহলে সারা বছর বাজার স্থিতিশীল রাখা সম্ভব।বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসি) পরিস্থিতি মোকাবিলায় ছয় দফা প্রস্তাব দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ডিম ও মাংসের ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ, অফ-সিজনে ভর্তুকি, কোল্ডস্টোরেজে ডিম সংরক্ষণের অনুমোদন, স্বল্পসুদে ঋণ এবং রপ্তানির ব্যবস্থা। খামারিরা বলছেন, আমরা ন্যায্যমূল্য আর একটি স্থিতিশীল বাজার চাই। তা না হলে একের পর এক খামার বন্ধ হবে, কর্মসংস্থান হারাবে হাজারো মানুষ। বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিলের (বিপিআইসিসি) সভাপতি শামসুল আরেফিন খালেদ বলেন, ডিম বা মাংসের দাম বাড়লে সরকারের সব তদারকি সংস্থা সক্রিয় হয়, কিন্তু দর পতনে কোনো সংস্থার পক্ষ থেকেই খামারির স্বার্থে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এভাবেই বছরের অধিকাংশ সময়ই ডিম ও মুরগির দর পতন ঘটছে। তিনি বলেন, বিশ্বের অনেক দেশে এ পরিস্থিতি সামাল দিতে অফ-সিজনে খামারিদের ভর্তুকি দেওয়া হয়। তাছাড়া অতিরিক্ত ডিম সংরক্ষণে কেল্ডস্টোরেজে ব্যবস্থাও করা হয়। আমাদের দেশে এসবের কিছু নেই। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ডিম-মুরগির দাম বছরে মাঝে মাঝে ওঠানামা করে। এখন সবজির প্রাপ্যতা বেশি হওয়ার কারণে ডিমের চাহিদা কমেছে। আবার শীতকালে স্কুলগুলো বন্ধ। হোটেল-রেস্তোরাঁয়ও ডিমের চাহিদা কমেছে। এ ছাড়া অন্য বছরের চেয়ে এবার শীতে সামাজিক অনুষ্ঠানের সংখ্যাও কম। ফলে চাহিদা না থাকায় ডিম-মুরগির দাম কিছুটা কম। তিনি বলেন, খামারির সুরক্ষায় আমরা কৌশলপত্র প্রণয়ন করেছি। এ বছর আমরা আমদানির অনুমতি দেইনি। খামারিদের উৎপাদন খরচ কমাতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।
দেশের পোলট্রি খাতে করপোরেট সিন্ডিকেট ভাঙাসহ সাত দফা দাবি জানিয়েছে প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। সরকার এসব দাবি না মানলে আগামী ১ নভেম্বর থেকে ডিম-মুরগি উৎপাদন বন্ধের হুমকি দিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা। গতকাল শনিবার রাজধানীর ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিপিএ সভাপতি সুমন হাওলাদার।সুমন হাওলাদার বলেন, প্রান্তিক খামারিরা প্রতিকূল পরিবেশেও উৎপাদন চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু পোলট্রি খাদ্যের অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি, করপোরেট সিন্ডিকেটের একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ ও সরকারের কার্যকর তদারকির অভাবে পুরো পোলট্রি খাত গভীর সংকটে নিমজ্জিত।
প্রান্তিক খামারিদের সার্বিক দিক বিবেচনা করে বিপিএ সাত দফা দাবি বাস্তবায়ন করার আহ্বান জানিয়েছে। এগুলো হলো–করপোরেট সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে ফিড, মুরগির বাচ্চা ও ওষুধ-টিকার দাম সরকারের নির্ধারণ করতে হবে। অবিলম্বে করপোরেট প্রভাবমুক্ত, ন্যায্য ও স্বচ্ছ বাজার ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে। প্রান্তিক খামারিদের সংগঠনের প্রতিনিধিদের নীতিনির্ধারণ পর্যায়ে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ফিড, বাচ্চা ও ওষুধের বাজারে নিয়মিত নিরীক্ষাব্যবস্থা চালু করতে হবে। উৎপাদন খরচ অনুযায়ী ১০ শতাংশ লাভ যুক্ত করে ডিম ও মুরগির ন্যায্যদাম নির্ধারণ করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের জন্য প্রণোদনা, সহজ শর্তে জামানতবিহীন ঋণ ও ভর্তুকি দিতে হবে। দুর্নীতিগ্রস্ত ও করপোরেটপন্থি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। সুমন হাওলাদার আরও বলেন, ১৫ দিনের মধ্যে সরকার ১০ থেকে ১২টি কোম্পানির একচেটিয়া বাজার নিয়ন্ত্রণ বন্ধ না করলে এবং তাদের দাবি বাস্তবায়নে ব্যর্থ হলে প্রান্তিক আগামী ১ নভেম্বর থেকে পর্যায়ক্রমে খামার বন্ধ ও ডিম-মুরগি উৎপাদন স্থগিত কর্মসূচি শুরু করবে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, মুরগি উৎপাদনের ১০ শতাংশ আসে দেশের ১০ বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠান থেকে। বাকি ৯০ শতাংশের জোগান দেন ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা। ক্ষুদ্র খামারিরা লোকসান গুনলেও মুনাফা করছেন করপোরেট খামারিরা গাজীপুরের ক্ষুদ্র খামারি আবদুর রহমান বলেন, বড় বড় কোম্পানি ডিম-মুরগির পাশাপাশি বাচ্চা, খাদ্য, ওষুধসহ সব রকম পোলট্রি উপকরণ উৎপাদন করে। এতে তাদের ডিম ও মুরগি উৎপাদনে খরচ কম হয়। বিপরীতে ক্ষুদ্র খামারিরা করপোরেট প্রতিষ্ঠান থেকেই বাচ্চা, খাদ্যসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ কেনে। আবার সংরক্ষণ ও বাজার ব্যবস্থাপনায় অংশগ্রহণ না থাকায় ছোট খামারিরা কুলিয়ে উঠতে পারছে ।
বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক মহাপরিচালক বলেন, কন্ট্রাক্ট ফার্মিংয়ের সুফল হলো উৎপাদন খরচ কমছে। কিন্তু খামারিদের এ মুরগি বাজারজাতের স্বাধীনতা নেই। প্রান্তিক খামারিদের রক্ষায় খাদ্য ও বাচ্চার দাম প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরকে সার্বক্ষণিক মনিটর করতে হবে। বিদ্যুৎ বিল কৃষির হারে নিতে হবে। জটিল রোগের টিকা ও ওষুধ বিনামূল্যে দিতে হবে। খামারিদের সমিতির আওতায় এনে জামানত ছাড়া ঋণের ব্যবস্থা করা জরুরি। প্রতিটি উপজেলার প্রধান বা বড় বাজারে সমিতির নামে দু-তিন শতক জায়গায় মুরগি ও ডিম বিক্রির দোকান নির্মাণ করে দিলে খামারিরা সরাসরি পণ্য বাজারজাত করার সুযোগ পাবেন বলে জানান তিনি। এ ব্যাপারে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, ‘ফিডেই খামারিদের ব্যয় হচ্ছে ৭০ শতাংশ। তাই খাদ্য উৎপাদন খরচ কমাতে উদ্যোগ নেওয়া হবে।’ পোলট্রি খাতের পণ্য আমদানিতে ট্যাক্স কমানোর ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমদানি পণ্যে বেশি ট্যাক্স নেওয়া হচ্ছে। এটি কীভাবে কমানো যায়, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে।
লেখক: অধ্যাপক, গবেষক, সাবেক পরিচালক, বার্ড, কুমিল্লা, সাবেক ডিন, সিটি ইউনিভার্সিটি