গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে খুলনায় বিক্ষোভ
৮ এপ্রিল ২০২৫ ২০:২০
খুলনা: গাজায় ইসরায়েলি সন্ত্রাসীদের বর্বরোচিত গণহত্যা বন্ধ ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে ‘গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে খুলনায় বিক্ষোভ ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৩টায় খুলনা মহানগরী ইসলামী ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। নগরীর ডাকবাংলো মোড়ে মিছিল পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর খুলনা মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি ও মহানগরী ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি প্রিন্সিপাল শেখ জাহাঙ্গীর আলম।
এ সময় তিনি বলেন, গাজায় ইহুদিদের গণহত্যা পৃথিবীর ইতিহাসে জঘণ্য ও নিকৃষ্টতম যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ। এই অপরাধে অবৈধ ইসরায়েলের পৃথিবীর মানচিত্রে অস্তিত্বের কোনো নৈতিক অধিকার নাই।
তিনি আরও বলেন, আগে ইসরায়েল ফিলিস্তিনে হামলা করলে মধ্যপ্রাচ্য থেকে প্রতিবাদ হতো, এখন হয় না। এর কারণ, মধ্যপ্রাচ্যও এখন পুঁজিবাদের অংশ হয়ে গেছে। কাজেই আমাদের এ লড়াই পুঁজিবাদী ও সাম্রাজ্যবাদী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে।
তিনি বলেন, আজ আমরা ব্যথিত, মর্মাহত মানবতার ইতিহাসে এর চাইতে বর্বরতা আর কিছু হতে পারে না। যেখানে অন্যায়ভাবে ফিলিস্তিনের নিরীহ নিরাপদ মুসলিমদের ওপর বর্বর ইজরায়েল গোষ্ঠী হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের দেহ বাংলাদেশে আর মন পড়ে আছে ফিলিস্তিনে। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কোনো কার্যকর ভূমিকা রাখছে না। আজ এই বিক্ষোভ থেকে তাদেরকে ধিক্কার জানাই। আমরা মনে করি প্রতিটি শান্তিকামী মানুষ এই বর্বরতার নিন্দা জানাচ্ছে। অনতিবিলম্বে এই হত্যা বন্ধ করতে হবে। ইজরায়েলের সঙ্গে বিশ্বের সব দেশকে ব্যাবসা-বাণিজ্য ও সব প্রকার সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে।
শেখ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, জায়নবাদী ইসরায়েলিরা সব প্রকার আইনকানুন, নীতি-নৈতিকতা ও যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে উপর্যুপরি বিমান হামলার মাধ্যমে পুরো গাজা নগরী ধ্বংসের শহর ও মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছে। তারা প্রতিনিয়ত মানবতাবিরোধী অপরাধ করে প্রমাণ করেছে ইসরায়েল কোনো রাষ্ট্র নয়, বরং মধ্যপ্রাচ্যের অবৈধ ও সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্র।
তিনি বলেন, অবিলম্বে গাজায় ধ্বংস ও হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করতে জাতিসংঘ, ওআইসিসহ বিশ্ব সংস্থাগুলোকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। অন্যথায় মুসলিম বিশ্ব ঘরে বসে তামাশা দেখবে না। তিনি আরও বলেন, গাজায় ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী যা করছে, তা কোনো যুদ্ধ নয়; বরং তা মানবতাবিরোধী অপরাধ। তাদের নির্মমতা ও নিষ্ঠুরতা থেকে রেহাই পাচ্ছে না নারী, শিশু, বৃদ্ধসহ বেসামরিক স্থাপনাও। এমনকি হাসপাতাল ও দাতব্য প্রতিষ্ঠানও তাদের জিঘাংসা থেকে মুক্ত থাকেনি।
ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও মহানগরী সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি রাকিব হাসানের পরিচালনায় বক্তৃব্য দেন ও উপস্থিত ছিলেন সোনাডাঙ্গা থানা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি ও খুলনা মহানগরী ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি জাহিদুর রহমান নাঈম, খুলনা জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি আবু ইউসুফ ফকির, সেক্রেটারি ইলিয়াস হোসাইন, মহানগরী দফতর সম্পাদক ইসরাফিল হোসেন, সাহিত্য সম্পাদক বেলাল হোসেন, প্রকাশনা সম্পাদক আদনান যুবরাজ, এইচ আর ডি সম্পাদক সেলিম শেখ, ছাত্র আন্দোলন সম্পাদক ইমরানুল হক, আইন সম্পাদক আব্দুর রশি, বিএল কলেজ সভাপতি হযরত আলী, সিটি কলেজ সভাপতি মিলন হোসেন রাজ, খুলনা সদর উত্তর থানার সভাপতি এহসান মাহবুব সাকিব, খুলনা সদর দক্ষিণ থানার সভাপতি জুবায়ের হোসেন, সোনাডাঙ্গা দক্ষিণ থানার সভাপতি নাঈমুল ইসলাম, সোনাডাঙ্গা উত্তর থানার সভাপতি হাফেজ মুহিবুল্লাহ ও খুলনার দারুল কুরআন সিদ্দিকিয়া মাদরাসার সভাপতি হাবিবুল্লাহ রাজুসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
সারাবাংলা/এইচআই