শীর্ষ অপরাধী ‘ছোট সাজ্জাদ’র ৬ সহযোগী গ্রেফতার
২৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১৭:১৪ | আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১৯:২৩
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরী থেকে ডাকাতির প্রস্তুতির সময় ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতার ছয় ডাকাত শীর্ষ অপরাধী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদের সহযোগী।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে নগরীর দামপাড়ায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কার্যালয়ের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান উপ কমিশনার (অপরাধ) রইছ উদ্দিন।
এর আগে সোমবার (২৭ জানুয়ারি) রাতে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামির কুলগাঁও খলিল শাহ মাজারের পাশের একটি বাড়ির দোতলা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার ছয়জন হলেন— মো. আসিফ (২২), মো. হাসান (২০), মো. ফয়সাল (১৯), মো. আজিম উদ্দিন (২৩), মো. রিফাদ (১৯) এবং মো. জুয়েল (২০)।
সংবাদ সম্মেলনে উপ-কমিশনার (অপরাধ) রইছ উদ্দিন জানান, গ্রেফতার ছয় ডাকাত চট্টগ্রাম নগরীর তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের সহযোগী, যিনি গত বছরের ৫ ডিসেম্বর পুলিশের ওপর গুলি ছুঁড়ে পালিয়েছিলেন। গ্রেফতার ওই ছয়জনের বিরুদ্ধে নগরীর বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা আছে। ডাকাতির প্রস্তুতির নেওয়ার গোপন সংবাদ পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আরও তিন-চারজন পালিয়েছে। তাদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
উপ-পুলিশ কমিশনার রইছ উদ্দিন বলেন, ‘আসিফ নামে গ্রেফতার এক যুবক এদের সর্দার। ওই এলাকায় তার নেতৃত্বেই ডাকাতির প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি দেশীয় এলজি, ড্রিল মেশিন, কাটার মেশিন, কিরিচসহ ডাকাতি কাজে ব্যবহার করা বিভিন্ন যন্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। আমরা এ অভিযান পরিচালনা করে বেশ কিছু মোবাইল পেয়েছি। এ ছাড়াও তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ এটিএম কার্ড পাওয়া গেছে।’
শীর্ষ অপরাধী সাজ্জাদকে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশ কর্মকর্তা রইছ উদ্দিন বলেন, ‘অতি সম্প্রতি সাজ্জাদকে আমরা গ্রেফতার করেই ফেলেছিলাম। কিন্তু সে পুলিশের ওপর গুলি ছুঁড়ে পালিয়ে যায়। আমরা তার ব্যাপারে সবসময় সক্রিয় রয়েছি। এর আগে তাকে গ্রেফতার করে আইনানুগ প্রক্রিয়ায় জেলে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু সে জামিন নিয়ে বেরিয়ে আবারও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে। তার ওপর আমাদের নজরদারি রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সাজ্জাদের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। আমাদের কাছেও এমন তথ্য রয়েছে। এর প্রমাণ আমরা পেয়েছি। আমরা তাকে গ্রেফতার করতে যখন গিয়েছিলাম তখন এসব অস্ত্র ব্যবহার করেই সে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিল। তাকে দ্রুত গ্রেফতার করা এবং তার কাছ থেকে অবৈধ অস্ত্রগুলো উদ্ধার করাই আমাদের প্রথম লক্ষ্য।
পুলিশ কর্মকর্তা রইছ উদ্দিন বলেন, ‘গত ২৩ তারিখ থেকে প্রত্যেক থানা এলাকাতে বিশেষ অভিযান চালানো হচ্ছে। যেসব এলাকা অপরাধপ্রবণ সেগুলোকে আমরা আলাদাভাবে গুরুত্ব দিচ্ছি। চোর-ছিনতাইকারীদের ধরতে আমাদের পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও নজরদারি বৃদ্ধি করেছি।’
তিনি বলেন, ‘গত ৫ দিনে মোট ১৩১ জন ছিনতাইকারীকে আমরা গ্রেফতার করেছি এবং বিভিন্ন জুয়ার আসরে অভিযান চালিয়ে ৯৩ জন জুয়াড়িকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা বেশ কিছু মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার এবং মাদক উদ্ধার করেছি।’
বিদেশে পলাতক আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেনের সহযোগী হিসেবে ছোট সাজ্জাদ অপরাধজগতে পা রাখেন। তার বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র ও চাঁদাবাজির ১০টি মামলা রয়েছে।
সর্বশেষ গত বছরের ২১ অক্টোবর চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানা এলাকার শমশের পাড়ায় প্রকাশ্যে গুলি করে আফতাব উদ্দিন তাহসিন (২৬) নামে এক যুবককে হত্যা করার অভিযোগ রয়েছে ছোট সাজ্জাদের বিরুদ্ধে। মাইক্রোবাসে চড়ে এসে প্রকাশ্যে গুলি করে পালিয়ে যান তিনি।
৫ ডিসেম্বর তাকে ধরতে নগরীর অক্সিজেন মোড় জালালাবাদ পেট্রোল পাম্পের পেছনে সাততলা ভবনের পঞ্চম তলায় অভিযানে যায় পুলিশ। তাদের উপস্থিতি টের পেয়েই গুলি চালান সাজ্জাদ। গুলিতে পুলিশের দুই সদস্যসহ মোট চারজন গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন।
সারাবাংলা/আইসি/এইচআই