‘আমাদের চাওয়া একটাই, জুলাই গণহত্যার বিচার’
২৭ জানুয়ারি ২০২৫ ২৩:০৫ | আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২৫ ২৩:০৬
ঢাকা: ‘আমি গর্বিত, যে আমি শহিদ আহনাফের মা। কিন্তু সে যদি বেঁচে থাকতো! তখনও তো আমি গর্ববোধ করতে পারতাম! তাহলে কেনো তাকে শহিদ হতে হলো?’ কান্না জড়ানো কন্ঠে কথাগুলো বলছিলেন, জুলাই গণআন্দোলনের গণহত্যার শিকার নিহত আহনাফের মা। নিহতদের স্বজনদের এখন একটাই দাবি, ‘চাই সুষ্ঠু বিচার। তাদের বক্তব্যে উঠে আসে, স্বৈরাচারি সরকারের পতনই আমাদের শান্তি নয়। সন্তান হত্যার বিচার আমরা চাই।’
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নানা ঘটনা তুলে ধরতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালায় চলছে প্রথম আলোর বিশেষ আয়োজন ‘জুলাই-জাগরণ’ প্রদর্শনী। সেই প্রদর্শনীর আলাপচারিতা অনুষ্ঠানে অংশ নেয়, জুলাই আন্দোলনের নিহতদের স্বজনরা।
মাত্র ৬ বছরের ছোট্টো শিশু নিহত জাবির ইব্রাহিম। তার বাবা বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের লড়াই ও আন্দোলনের কথা শুনতে শুনতেই আমার ছয় বছরের মেধাবী শিশু জ্বালাময়ী হয়ে উঠে। সে নিজেই সেই আন্দোলনে যেতে চায়। তাকে শুধু মাত্র এই গণআন্দোলন দেখাতে নিয়েছিলাম। কে জানতো সে আর ফিরে আসবে না।’
অনুষ্ঠানে অতিথিদের বক্তব্যে সামিনা লুৎফা বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম একটি গণতান্ত্রিক দেশ, একজন স্বৈরাচারির পতন। সেই স্বৈরাচারমুক্ত স্বাধীন দেশ আমরা পেয়েছি। কিন্তু সেটি অনেক মেধাবী তরুণদের রক্তের বিনিময়ে। এ কথা আমাদের মনে রাখতে হবে। এই দেশে যেনো আর কোনো শোষকের স্থান হয়। যে দেশ আমরা পেলাম, আবু সাঈদ, মুগ্ধ, নাঈমা বা আহনাফের রক্তের বিনিময়ে, সে দেশকে আর ফ্যাসিস্টের হাতে যেতে দেওয়া যাবে না।’
প্রদর্শনীর ‘সত্যে তথ্যে জুলাই’ অংশে আছে পত্রিকা, প্রতিবেদনের নিদর্শন। ছবি আছে ‘ক্যামেরায় বিদ্রোহ’ এবং ‘জুলাই-জাগরণ’ অংশে। ‘রক্তাক্ত স্মারক’ অংশে সাজানো আন্দোলন দমন করতে পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনীর ব্যবহৃত প্রাণঘাতী বুলেট ও রাবার বুলেটের খোসা, ছররা গুলি, গ্রেনেডের পিন, কাঁদানে গ্যাসের খোসা।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালার দোতলায় এই প্রদর্শনী চলবে আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত।
সারাবাংলা/এফএন/ এইচআই