টিউলিপ কিভাবে রাশিয়া গিয়ে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন: সিপিডি
১৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১৯:৫৬ | আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫ ০০:৩৭
ঢাকা: সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, টিউলিপ আরেকটি দেশের রাজনৈতিক দলের সদস্য। তিনি বাংলাদেশের নাগরিক না, এমনকি কমন সিটিজেনও না। তিনি কিভাবে প্রধানমন্ত্রী খালার সঙ্গে রাশিয়া গিয়ে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। পারিপার্শ্বিক তথ্যের ভিত্তিতে টিউলিপের পদত্যাগ অবধারিত ছিল। আর্থিক কেলেঙ্কারিসহ তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছিল। তিনি পদত্যাগ করতে দেরি করে ফেলেছেন।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘টিউললিপের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণীত হলে তাকে এমপির পদ থেকেও সরে দাঁড়াতে হবে। এমনকি লেবার পার্টির সদস্য পদও হারাতে পারেন।’
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) প্রবাসী আয় বৃদ্ধিতে করণীয় শীর্ষক সেমিনার ও আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বিজয়ী দলের সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন এসব কথা বলেন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অভিবাসন বিশ্লেষক ও ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য প্রফেসর ড. মো. বেলাল হোসেন, ডিবেটিং সোসাইটির মডারেটর অধ্যাপক ড. মো. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর আলম ও প্রফেসর ড. কাজী আহসান হাবীব ও বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর তামান্না বেগম। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটি।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘বিদেশি হাইকমিশন ও ব্যাংকগুলোকে প্রবাসীদের সেবায় আরও বেশি আন্তরিক হতে হবে। এয়ারপোর্টের প্রবাসী লাউঞ্জে যে বার্গার দেওয়া হচ্ছে, তা তারা খেতে অভ্যস্ত কি না সেটা বুঝতে হবে। প্রবাসীরা সোনার হরিণ। তাদের সঠিকভাবে লালন পালন করা প্রয়োজন। তাদের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে হবে। বর্তমানে আমাদের প্রেরিত কর্মীদের মধ্যে বেশিরভাগই অদক্ষ। তাই বেশি করে দক্ষ কর্মী বিদেশে পাঠানোর ওপর গুরুত্ব দিলে রেমিট্যান্স আরও বাড়বে। বিগত সরকারের আমলে যে অর্থ পাচার হয়েছে তা তাদের বৈধ উপার্জিত অর্থ ছিল না।’
সেমিনারে মূল প্রবন্ধে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ‘দেশের চারিদিকে বর্তমানে যে চাকচিক্য দেখা যাচ্ছে তা অভিবাসীদের রেমিট্যান্সের কারণেই সম্ভব হচ্ছে। তাদের পাঠানো অর্থ বাংলাদেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি হিসেবে বিশেষভাবে কাজ করছে। এ সকল রেমিট্যান্স যোদ্ধারাই দেশের রিয়েল হিরো। অভিবাসী শ্রমিকদের প্রবল দেশাত্মবোধ রয়েছে। তারা বিগত ছাত্র-জনতার আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে রেমিট্যান্স পাঠানো বন্ধ করে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন নিশ্চিত করেছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘নানা শর্তের বেড়াজালে আইএমএফ চার বিলিয়ন ডলার ঋণ প্রদান করেছে। অথচ প্রবাসীরা কোন শর্ত ছাড়াই গত বছরে ২৭ বিলিয়ন ডলার দেশে পাঠিয়েছে। দেশের কর্মক্ষম ২৫ শতাংশ মানুষের কর্মসংস্থান হয় অভিবাসনের মাধ্যমে। বৈদেশিক কর্মসংস্থান না করা গেলে বাংলাদেশের দরিদ্র মানুষের সংখ্যা আরও ১০ শতাংশ বেড়ে যেত।’
কিরণ বলেন, ‘আমরা দেখেছি পতিত আওয়ামী সরকারের শাসন আমলে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছরে গড়ে ১৬ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে মুজিব পরিবারের বিরুদ্ধে ৫৯ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। যার সঙ্গে পতিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের যোগসূত্রতা রয়েছে।’
সেমিনার শেষে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস-২০২৪ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও রানারআপ বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের বিতার্কিকদের নগদ অর্থ পুরস্কারসহ ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।
সারাবাংলা/জিএস/এমপি
টিউলিপ সিদ্দিক সিপিডি সিপিডি নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন