হাজারীবাগে আগুন
‘ভবনটিতে সেফটি প্ল্যান ছিল না, দেওয়া হয়েছিল নোটিশ’
১৭ জানুয়ারি ২০২৫ ১৮:৩৭ | আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২৫ ২১:৩৬
ঢাকা: রাজধানীর হাজারীবাগের ফিনিক্স লেদার নামে কারখানায় লাগা আগুন ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিটের চেষ্টায় পৌনে তিন ঘণ্টা পর বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ফায়ার সার্ভিস বলছে, কারখানাটিতে কোনো ধরনের ফায়ার সেফটি প্লান ছিল না। এ কারনে কর্তৃপক্ষকে বেশ কয়েকবার নোটিশও দেওয়া হয়েছিল।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেনেন্স) লে. কর্নেল মো. তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘এটি একটি পুরাতন ভবন। ভবনটিতে মিশ্র পদার্থ, কাঁচামাল, প্লাস্টিক, গার্মেন্টস পণ্য এবং ওপরে ছিল জুতার কারখানা। জুতার কারখানায় বিভিন্ন দাহ্য পদার্থ রয়েছে। আমরা ভয় পাচ্ছিলাম আগুন বিস্তার লাভ করলে অনেক প্রাণহানির ঘটনা ঘটতো। সেটি আমরা রোধ করতে পেরেছি, এটি আমাদের বড় সফলতা।’
আরও পড়ুন-হাজারীবাগের আগুন পৌনে ৩ ঘণ্টায় নিয়ন্ত্রণে
তিনি বলেন, ‘ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে অনেকটা বেগ পেতে হয়েছে। এখনো পুরোপুরি নেভেনি। আরও কিছু সময় কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘সাত তলা ভবনের পঞ্চম তলায় ছিল গুদামটি। সেখান থেকে আগুনের সূত্রপাত হলেও তা ওপরের তলাগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ে। প্রত্যেক ফ্লোরে এতবেশি মালপত্র আছে যা আগুন লাগার পর নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় বেশি লেগেছে। এখনো আগুন লাগার কারন জানা যায়নি। এ ছাড়া কেউ হতাহত হয়েছে এমনটাও মেলেনি। আগুন পুরোপুরি নিভে গেলে ডাম্পিংয়ের কাজ করা হবে।’
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘এটি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের মতোই। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় লেগেছে প্রায় ৩ ঘণ্টা। আমাদের সক্ষমতার পুরোপুরি কাজে লাগানো যায়নি। কারণ পানির সংকট, ভেতরের দাহ্য বস্তু, উৎসুক জনতার ভিড় ও চাপা (সরু) রাস্তা।
তিনি আরও বলেন, ‘ভবনটিতে ছিল প্লাস্টিক, লেদারসহ দাহ্য বস্তুর কারখানা। ছিল না কোনো অগ্নিনিবারক যন্ত্র। ভবনে ফায়ার সেফটির কোনো প্ল্যান ছিল না। কয়েকবার নোটিশও দেওয়া হয়েছিল ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে।’
আগুন ভবনটির ৫, ৬ ও ৭ তলা পর্যন্ত ছড়িয়েছে জানিয়ে ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘নিচের দিকে আগুন ছিল না। আগুনের সূত্রপাত এখনো বের করা যায়নি। তবে ইলেকট্রনিক শর্ট সার্কিট কিংবা সিগারেটের কারণে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। তবে তদন্তের পর মূল কারণ জানা যাবে।’
মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী আরও বলেন, ‘সরকারের আইনে ফায়ার সেফটি অবশ্যই থাকতে হবে। কিন্তু এই ভবনটিতে দাহ্য পদার্থ থাকার পরেও কোনো ফায়ার সেফটি ছিল না। আগুন ছড়িয়ে পড়লে হতাহতের ঘটনা ঘটতে পারতো।’
তিনি বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিসের সব ইকুইপমেন্ট এখানে আনা সত্ত্বেও আমরা কাজ করতে পারিনি। কারণ এখানকার রাস্তা অনেক ছোট এবং ভবন একটির সঙ্গে আরেকটি লাগানো। আমরা ১৩টি ইউনিট এনেছিলাম, কিন্তু সব ইউনিট কাজ করতে পারিনি।’
ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আগুন নিয়ন্ত্রণ হলেও এখনো নির্বাপণ হয়নি। আগুন নির্বাপণের পর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে।’
সারাবাংলা/ইউজে/এইচআই