‘দুঃচিন্তা-ক্ষোভ-বেদনা বাবরকে বৃদ্ধ করে ফেলেছে’
১৬ জানুয়ারি ২০২৫ ১৯:৫৯ | আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫ ২১:৫১
ঢাকা: দুঃচিন্তা, ক্ষোভ, বেদনা লুৎফুজ্জামান বাবরকে বৃদ্ধ করে ফেলেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বিকেলে কারামুক্ত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরকে নিয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কববের শ্রদ্ধা জানানোর পর তিনি এ মন্তব্য করেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘এখন থেকে ১৭ বছর আগে লুৎফুজ্জামান বাবর যখন কারাগারে যান, তখন টগবগে যুবক ছিলেন। তাকে মিথ্য অভিযোগে অন্যায়ভাবে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে করাগারে আবদ্ধ রাখা হয়েছে। প্রায় ছয় বছর তাকে কনডেম সেলে রাখা হয়েছে। এই নিপীড়ন, এই নির্যাতন, দুইটা মামলায় মৃত্যুদণ্ড, একটি মামলায় যাবজ্জীবন, এই দুঃচিন্তা, এই মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়ার কারণে যে ক্ষোভ, যে বেদনা, এটা তাকে প্রায় বৃদ্ধ করে ফেলেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আল্লাহর কাছে শোকর করি যে, মহামান্য আদালত তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে এসব মামলা থেকে মুক্তি দিয়েছেন।’
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘গত ১৬ বছর ধরে অবিরাম লড়াই করেছি স্বৈরাচার শাসকের বিরুদ্ধে। এর ধারাবিহকতায় জুলাই আগস্টে ছাত্রশ্রমিক জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের লড়াইয়ের একটা পর্যায় অতিক্রম করেছি। ফ্যাসিবাদী শাসনের পতন হয়েছে, ফ্যাসিবাদের প্রধান পলায়ন করেছে। আমরা এখন আমাদের সেই এক দফার অন্যতম দফা গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছি।’
তিনি বলেন, ‘লুৎফুজ্জামান বাবর বিএনপর নিবেদিত নেতা। এতদিন জেলে থাকায় তিনি দারুণ অসুস্থ। এ অবস্থাতেও ঘরে, পরিবারের কাছে না গিয়ে এসেছিলেন শহিদ জিয়ার মাজার জিয়ারত করতে। লুৎফু্জ্জামান বাবরের মতো বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মী এখনো কারারুদ্ধ আছেন, আমরা তাদের মুক্তির জন্য দোয়া করেছি। ভবিষ্যতে যেন এভাবে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেটা নিশ্চিত করার জন্য একটা গণতান্ত্রিক মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চাই।’
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আপনারা জানেন ইতিহাস বারবার কীভাবে আমাদের সামনে আছে। আমরা গণতন্ত্রের আশায় মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত করেছি। লাখো মানুষ জীবন দিয়েছি। কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যে সেই সময় যারা দায়িত্বে ছিলেন, তারা একদলীয় স্বৈরশাসন কায়েম করেছিল। আর সেই একদলীয় স্বৈরাশানের কবরের ওপর বহুদলীয় গণতন্ত্রের বাগান রচনা করেছিলেন জিয়াউর রহমান।’
‘কিন্তু, তার কয়েক বছরের মাথায় সামরিক শাসক এরশাদ জোর করে ক্ষমতা দখল করে আবার গণতন্ত্রকে হরণ করে। নয় বছর অক্লান্ত সংগ্রাম করে গণতন্ত্র, বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন খালেদা জিয়া। আবার সেই আওয়ামী লীগ এবং তাদের দোসর এরশাদের দল গত ১৫-১৬ বছর ধরে এই দেশটাকে নরক বানিয়ে রেখেছিল। তাদের হাত থেকে গণতন্ত্রমুক্ত করার লড়াইয়ে ডান, বাম, মধ্যবাম, মধ্যডান- সবাইকে যুগপৎ আন্দোলনে একত্র করেছেন তারেক রহমান। আর আন্দোলনের সেই বেগ আরও বেশি বেগবান হয়েছে জুলাই আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে এবং তার মধ্য দিয়ে আরেকবার আমরা গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সুযোগ পোয়েছি’- বলেন নজরুল ইসলাম খান।
তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি লুৎফুজ্জামান বাবরের মতো আরও যারা গণতন্ত্রের জন্য নানা ধরনের নিপীড়ন, নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, জীবন দিয়েছেন, তাদের সকলের ত্যাগের বিনিময়ে আমরা গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সুযোগ পাব।’
সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম