শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়াল ভারত
৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১২:৫১ | আপডেট: ৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১৫:৪৪
ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়িয়েছে ভারত। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি। এখনো সেখানেই তিনি অবস্থান করছেন।
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রের বরাত দিয়ে বুধবার (৮ জানুয়ারি) শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর খবর দিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস। এ খবর এমন সময়ে এলো যখন জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের দাবি জোরালো হয়ে উঠছে। ইতোমধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে তাকে প্রত্যর্পণের অনুরোধও করা হয়েছে ভারত সরকারের কাছে।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিচারকাজ যেখানে চলছে, সেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এরইমধ্যে তার বিরুদ্ধে দুই দফা গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। এ ছাড়া গুম, জুলাই-আগস্টে গণহত্যা ও বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার বাংলাদেশি পাসপোর্ট বাতিলের খবরও মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসউইং।
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। তবে কবে এই মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে, সেটি উল্লেখ করা হয়নি প্রতিবেদনে। ভিসার মেয়াদ কতদিনের জন্য বাড়ানো হয়েছে, সে তথ্যও জানা যায়নি।
খবর বলছে, ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় ফরেনার্স রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিস (এফআরআরও) শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিল। তবে শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিক আশ্রয় (অ্যাসাইলাম) দেওয়া নিয়ে গুঞ্জন ছিল। মন্ত্রণালয়ের সূত্র এ ধরনের কোনো সম্ভাবনার কথা অস্বীকার করেছে। কারণ ভারতে শরণার্থী বা রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো আইন নেই।
আরও পড়ুন- গুম-গণহত্যায় জড়িত অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়। এরপর সারা দেশে বিভিন্ন স্থানে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যা, গুমসহ বিভিন্ন অভিযোগে শতাধিক মামলা হয়েছে। এরমধ্যে জুলাই-আগস্ট গণআন্দোলনে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং আওয়ামী লীগের সবশেষ ১৬ বছরের শাসনামলে গুমের অভিযোগে বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।
এর আগে, গত অক্টোবরে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন ট্রাইব্যুনাল। গত সোমবার (৬ জানুয়ারি) একই আদালত জোরপূর্বক গুমের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন। তাদের গ্রেফতার করে ১২ ফেব্রুয়ারি হাজির করার নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিচারকাজ এগিয়ে নিতে এরই মধ্যে ভারতের কাছে তাকে প্রত্যর্পণের অনুরোধওম জানিয়েছে সরকার। গত ২৩ ডিসেম্বর নয়া দিল্লিকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছে। তবে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তেমন কিছু জানানো হয়নি।
আরও পড়ুন- শেখ হাসিনাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
হিন্দুস্তান টাইমসের গত ৩ জানুয়ারির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত সম্ভবত শেখ হাসিনাকে ফেরত দেবে না। ভারত সরকারের একটু সূত্র হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেছিল, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিষয়টি ভারত সরকারকে জানানো হলেও এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়নি।
এদিকে ২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে গঠিত স্বাধীন তদন্ত কমিশন এরইমধ্যে কাজ শুরু করেছে। ওই কমিশনের প্রধান মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমান সোমবার বলেছেন, সরকার অনুমতি দিলে তদন্তের অংশ হিসেবে তারা শেখ হাসিনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে ভারতে যেতে চান।
সারাবাংলা/ইআ