Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এদেশ ছিল আওয়ামী লীগের ইনকামের জায়গা, কলিজা ছিল অন্য দেশে: জামায়াত আমির

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৪ জানুয়ারি ২০২৫ ২১:৩৮ | আপডেট: ৪ জানুয়ারি ২০২৫ ২১:৩৯

শনিবার কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ মাঠে জেলা কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান

ঢাকা : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, “আওয়ামী লীগ প্রত্যেকটা প্রকল্পে চুরি করেছে। ব্যাংকগুলোকে ফোকলা করেছে। ডাকাত ‘এস আলম গ্রুপকে’ লেলিয়ে দিয়ে ইসলামী ব্যাংক ডাকাতি করেছে শেখ রেহানা। শেখ হাসিনার বোনের মেয়ে লন্ডনের এমপি নির্বাচিত হয়ে মন্ত্রী পর্যন্ত হয়েছেন। এখন তিনি দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত। সেখানে দুর্নীতি দমন কমিশন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এটা বাংলাদেশ এবং জাতির জন্য লজ্জাজনক হলেও তারা লজ্জা পেয়েছে বলে মনে হয় না। বাংলাদেশ ছিল তাদের ইনকাম সোর্সের জায়গা। আর তাদের কলিজা ছিল অন্য দেশে। আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের সন্তান দেশে নেই। সবার ঠিকানা বেগম পাড়ায়। তারা দেশকে যদি ভালবাসতো তাহলে তারা দেশেই থাকতো।”

বিজ্ঞাপন

শনিবার (০৪ জুলাই) কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ মাঠে জেলা কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কুষ্টিয়া জেলা আমীর অধ্যাপক মাওলানা আবুল হাশেমের সভাপতিত্বে ও জেলা সেক্রেটারি সুজা উদ্দিন জোয়ারদার এবং পৌর আমীর মো. এনামুল হকের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনের সদস্য সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান।

বিজ্ঞাপন

জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, “রূপপুর পারমানবিক কেন্দ্রে একটি প্রকল্প থেকে ৫৭ হাজার কোটি টাকা চুরি করেছে। মেগা উন্নতির কথা বলে মেগা ডাকাতি করা হয়েছে। একটা পদ্মা ব্রীজ তৈরি করতে যে পরিমাণ টাকা খরচ করা হয়েছে, তা দিয়ে ৪টা পদ্মা ব্রীজ করা যেত। তারা আবার বড় বড় কথা বলে। তারা লুটপাট করে বেগম পাড়ায় বাড়ি করেছে।”

তিনি বলেন, “জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় এলে আমরা এমন একটা জাতি গড়বো; তখন ইনশাআল্লাহ এই দেশের মানুষ আর বিশ্বের কোথাও চাকরির জন্য যাবে না। যেভাবে ১৭৫৭ সালের আগে বিশ্বের মানুষ এদেশে আসতো চাকরির জন্য। এই দেশ আবার পুরনো গৌরব ফিরে পাবে। আমরা সেই গৌরবটা ফিরিয়ে আনতে চাই।”

আমীরে জামায়াত বলেন, “১৯৪৭ এবং ১৯৭১ সালে কিছু অঙ্গীকারের ভিত্তিতে আমরা দুইবার স্বাধীনতা অর্জন করেছি। যারা অঙ্গীকার করেছিলেন জাতিকে অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার; তারা কেউ সে অধিকার ফিরিয়ে দেয়নি, কথা রাখেনি। তারা জাতির সঙ্গে বেঈমানি করেছেন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট এর পূর্ব পর্যন্ত যারা মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতাকে নিজেদের বাপ-দাদার তালুক মনে করতেন, তারা চেতনার কথা বলে সেই তালুক লুন্ঠন করেছেন। গণহত্যা চালিয়েছেন। তাদের সন্তানেরা ধর্ষণের সেঞ্চুরি করেছেন। সাড়ে ১৫ বছরে তাদের লুন্ঠনের হিসেব বেরিয়েছে ২৬ লাখ কোটি টাকা।”

‘শিক্ষা ব্যবস্থাকে শেষ করে দিয়েছে’ মন্তব্য করে জামায়াত আমির বলেন, “শেষ করবে না কেন? তাদের সন্তান তো এদেশে লেখাপড়া করে না। তারা তিলে তিলে শিক্ষা ব্যবস্থাকে নষ্ট করে জাতির মেরুদন্ড ধ্বংস করে দিয়েছে। চাকরি প্রার্থীরা কোটাজালে বন্দী; যা পৃথিবীর কোথাও নেই। বাকীটাও আওয়ামী লীগের দখলে। তাদের আনুগত্য না করলে কারো কপালে চাকরিসহ কোনো কিছুই জুটত না।”

তিনি বলেন, “এই বৈষম্যের বিরুদ্ধেই আমাদের সন্তানেরা রাস্তায় নেমেছিল। তারা বলেছিল যে, কোটা সংস্কার করো, বিলুপ্তি নয়। কিন্তু শেখ হাসিনা তাদের সাথে প্রতারণা করেছে আদালতের মাধ্যমে। ছাত্ররা দেখল যে, তাদের সাথে ধোঁকাবাজি করা হয়েছে। তারা হেফাজতে ইসলামের অসংখ্য নেতাকর্মীকে খুন করেছে। তেমনটা করেও ছাত্রআন্দোলনকে দমন করতে পারেনি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বলেছিল যে, এই আন্দোলন দমন করতে কয়েক লক্ষ মানুষ মারতে হবে। দেখা গেল, ক্ষমতার শেষদিনও সেই চেষ্টা করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল যে, কয়েক কোটিও যদি হত্যা করতে হয়, তাও তোমরা আন্দোলন দমন করো।”

তিনি আরও বলেন, “গত জুলাই আগস্টে প্রায় দুই হাজার ছাত্র-জনতার জীবন কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ৩৪ হাজার মানুষ তারা জীবনের তরে পঙ্গু হয়ে গেছে। ৩শ’র বেশি মানুষ মেরুদন্ডে গুলির আঘাতে প্যারালাইজড হয়ে বিছানায় পড়ে আছে। জীবনে আর বসতে পারবে না, দাঁড়াতেও পারবে না। নিজের হাতে নিজের কাজ করতে পারবে না। এমনকি নিজের হাতে আল্লাহর দেওয়া রিজিক তুলে খেতে পারবে না।”

সারাবাংলা/জিএস/আরএস

ডা. শফিকুর রহমান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর