মারা যাননি ওস্তাদ জাকির হোসেন, ভর্তি আইসিইউতে
১৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ০২:৩৪ | আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:৪১
কিংবদন্তী তবলাবাদক ওস্তাদ জাকির হোসেন যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোর একটি হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি আছেন। তার শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন।
বেশকিছু গণমাধ্যমে জাকির হোসেনের মৃত্যুসংবাদ প্রচারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে রোববার (১৫ ডিসেম্বর) রাতে তার বন্ধু বংশীবাদক রাকেশ চৌরাসিয়া ও ব্যবস্থাপক নির্মল বাগচীর বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে পিটিআই।
রাকেশ চৌরাসিয়া জানান, হৃদযন্ত্রের জটিলতা নিয়ে জাকির হোসেন হাসপাতালে ভর্তি। নির্মল বাগচী জানিয়েছেন, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যাও রয়েছে তার।
নির্মল বাগচী বলেন, হৃদযন্ত্রের সমস্যা নিয়ে জাকির হোসেন দুই সপ্তাহ ধরে সান ফ্রান্সিসকোর একটি হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তার শারীরিক অবস্থা ভালো নেই। এখন তিনি আইসিইউতে ভর্তি আছেন। আমরা তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।
এর আগে টাইমস অব ইন্ডিয়া, দ্য হিন্দু, হিন্দুস্তান টাইমসসহ ভারতের প্রথম সারির সব গণমাধ্যমে জাকির হোসেনের মৃত্যুর খবর প্রচারিত হয়। আনন্দবাজারের খবরে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শোকবার্তার কথাও জানানো হয়। পরে জাকির হোসেনের স্বজনরা জানান, অবস্থা সংকটাপন্ন হলেও তিনি মারা যাননি।
জাকির হোসেনের বোন খুরশিদ পিটিআইকে বলেন, ভাইয়ের অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। তবে তিনি এখনো বেঁচে আছেন। ভারতসহ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা তার ভক্তসহ সবার প্রতি আহ্বান, তার জন্য প্রার্থনা করুন। গণমাধ্যমগুলোর প্রতি অনুরোধ, দয়া করে আপনারা তার মৃত্যুর ভুল সংবাদ প্রচার করবেন না। তিনি এখনো শ্বাস নিচ্ছেন। এই সংবাদ বিভিন্ন মাধ্যমে দেখা আমাদের জন্য অত্যন্ত বাজে অনুভূতি।
জাকির হোসেনের বাবা আল্লাহ রাখাও ছিলেন প্রখ্যাত তবলাবাদক। বাবার হাতেই হাতেখড়ি জাকিরের, বাবার পথ অনুসরণ করেই তারও তবলাবাদক হয়ে ওঠা। এ বছরেই ৬৬তম আসরে তিন তিনটি গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড জিতে নিয়েছেন জাকির হোসেন। এর আগেও পেয়েছেন দুটি।
প্রায় ছয় দশকের ক্যারিয়ারে ভারতীয়সহ বৈশ্বিক পরিসরের বিখ্যাত সব সংগীত ও যন্ত্রশিল্পীর সঙ্গে কাজ করেছেন জাকির হোসেন। ১৯৭৩ সালে তিনি ইংলিশ গিটারিস্ট জন ম্যাকলফলিন এবং ভারতীয় বেহালাবাদক এল শংকর ও ‘ঘটমের ঈশ্বর’খ্যাত থেটাকুড়ি হরিহর ‘ভিক্ষু’ বিনয়াক্রমকে নিয়ে গড়ে তোলেন ব্যান্ডদল ‘শক্তি’। ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতের সঙ্গে জ্যাজ ধারার অনবদ্য ফিউশনের মাধ্যমে এই দলটি জনপ্রিয়তার শিখড়ে পৌঁছে যায়।
ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতে অনন্য অবদানের জন্য জাকির হোসেনকে ১৯৮৮ সালে পদ্মশ্রী, ২০০২ সালে পদ্মভূষণ ও ২০২৩ সালে পদ্মবিভূষণ পুরস্কারে ভূষিত করে ভারত সরকার।
সারাবাংলা/টিআর