Sunday 29 Dec 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

১৪ বছর পর চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সম্মেলন শনিবার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১৮:১৮ | আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৪ ২০:০৯

চুয়াডাঙ্গা: দীর্ঘ ১৪ বছর পর চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সম্মেলন হতে যাচ্ছে। সম্মেলনকে ঘিরে জেলাজুড়ে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। এ আয়োজন সফল করতে নেতাকর্মীরা কাজ করে যাচ্ছেন। চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির ইতিহাসে খোলা ময়দানে ব্যাপক আয়োজনে সম্মেলন এই প্রথম।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকাল ৯টায় শহরের টাউন ফুটবল মাঠে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এতে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। উদ্বোধন করবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিজ্ঞাপন

সম্মেলনে বিশেষ অতিথি থাকবেন বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বাবু জয়ন্ত কুমার কুন্ডু।

সম্মেলনে ভোটের মাধ্যম্যে নেতা নির্বাচন করে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে। এতে জেলা বিএনপির সভাপতি পদ একজন, সাধারণ সম্পাদক পদে দুজন ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে চার জন প্রার্থীর প্রার্থীতা চূড়ান্ত হয়েছে। সম্মেলনে কাউন্সিলর ৮০৮ জন। তাদের ভোটে একজন সভাপতি, একজন সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে তিনজন নির্বাচিত হবেন।

সভাপতি পদে একক প্রার্থী হওয়ায় জেলা বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবু বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হচ্ছেন। সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদের প্রার্থীরা জয়ী হতে ভোটারদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন প্রার্থীরা। বিএনপির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জেলায় অনুর্ধ্ব ১৫১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির অবশিষ্ট নেতা পরবর্তীতে নির্বাচিত হবেন।

বিজ্ঞাপন

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের ২ ডিসেম্বর চুয়াডাঙ্গা শহরতলী দৌলাতদিয়াড়ে বঙ্গজ বিস্কুট ফ্যাক্টরী চত্বরে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সম্মেলনে হাজী মোজাম্মেল হক সভাপতি ও সহিদুল ইসলাম বিশ্বাসকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। সর্বশেষ ২০২১ সালে মাহমুদ হাসান খান বাবুকে আহ্বায়ক ও শরীফুজ্জামান শরীফকে সদস্য সচিব করে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। তবে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি বাস্তবায়ন, আন্দোলন-সংগ্রাম, মামলা, হামলা, গ্রেফতারের কারণে নির্ধারিত সময়ে সম্মেলন করতে পারেনি জেলা বিএনপি। খানিকটা দেরীতে হলেও এবার জেলা বিএনপি বড় আয়োজনে সম্মেলন করতে যাচ্ছে।

এদিকে সম্মেলনকে ঘিরে জেলা ও উপজেলা শহর, শহরতলী ও গ্রামের আনাচে কানাচে পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে। সকলে তাদের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে দোয়া ও সমর্থন চাচ্ছেন। বিশেষ করে পোস্টার, ছোট-বড় বিলবোর্ড, ব্যানারে ছেয়ে গেছে চুয়াডাঙ্গা শহর। রাস্তার মোড়ে মোড়ে সাঁটানো বিভিন্ন ব্যক্তিগত পোস্টার-বিলবোর্ড-ব্যানার। শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শহীদ হাসান চত্বর, চৌরাস্তার মোড়, স্টেশন রোড, কলেজ রোড, রেলবাজার, টাউন ফুটবল মাঠ, নতুন বাজার, হাসপাতাল রোড, হাসপাতাল চত্বরসহ বিভিন্ন এলাকায় লাগানো হয়েছে পোস্টার, বিলবোর্ড ও ব্যানার।

গত ১৪ নভেম্বর সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হয়। আগামী ২৩ নভেম্বর জেলা বিএনপির সম্মেলনে এ তিনটি পদে ভোট গ্রহণ করা হবে।

সভাপতি পদে একক প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র ক্রয় করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহবায়ক ও কেন্দ্রীয় উপ-কোষাধ্যক্ষ মাহমুদ হাসান খান বাবু।

সাধারণ সম্পাদক পদে ২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র ক্রয় করেন। এদের একজন চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব শরীফুজ্জামান শরীফ এবং অপরজন জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য মিলিমা রহমান ওরফে মিলি বিশ্বাস।

সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মনোনয়নপত্র গ্রহণ করেন ৪ জন প্রার্থী। তারা হলেন- চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য মীর্জা ফরিদুল ইসলাম শিপলু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সফিকুল ইসলাম পিটু, দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ মিল্টন ও জেলা যুবদলের অর্থ সম্পাদক মোমিনুর রহমান।

চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সম্মেলনের কাউন্সিলর মুন্সী আওরঙ্গজেব বেল্টু বলেন, ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচিত হবে এটা খুবই আনন্দের বিষয়। গণতান্ত্রিক উপায়ে নেতা নির্বাচিত হলে, তারা আমাদের মূল্যায়ন করবে। নির্বাচিত নেতারা বিএনপিকে শক্তিশালী করবে। মানুষের পাশে দাঁড়াবে। নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ন করবে, এমন নেতাই আমাদের প্রয়োজন।

সাংগঠনিক সম্পাদক প্রার্থী খালিদ মাহমুদ মিল্টন জানান, এর আগে কাউন্সিলের মাধ্যমে নেতা নির্বাচিত হয়নি। আমি নির্বাচনে একজন প্রার্থী। আশা করি নির্বাচনে বিজয়ী হবো। সম্মেলন সফলভাবে শেষ হবে বলে আমি আশা করছি।

সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মিলিমা রহমান বলেন, বিএনপি একটি সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল। আর এ রাজনৈতিক দলে গণতন্ত্র অব্যাহত থাকবে এটাই স্বাভাবিক। ১৭ বছর স্বৈরাচার সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা গণতান্ত্রিক ধারায় বিএনপিকে গড়ে তুলতে চাই।

জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শরীফুজ্জামান শরীফ বলেন, ২০২১ সালে বিএনপির আহবায়ক কমিটি গঠিত হয়। জেলার ৪১টি ইউনিয়নের ৩৬৯টি ওয়ার্ড কমিটি সম্মেলনের মাধ্যমে শেষ করা হয়েছে। সম্মেলনে প্রত্যক্ষ ভোটে নেতা নির্বাচন করা হয়। পৌর কমিটিও সম্মেলন করে গঠন করা হয়েছে। জেলায় এই প্রথম প্রত্যক্ষ ভোট ও স্বচ্ছ ব্যালটের মাধ্যমে আগামী ২৩ নভেম্বর জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
জাতীয়তাবাদী দল শহীদ জিয়ার আদর্শের দল। আমরা গণতন্ত্র বিশ্বাস করি। আর এই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দিক নির্দেশনায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমরা কাউন্সিল শেষ করবো। আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের অত্যচার-নির্যাতনের পর এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। তাই নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হবে।

সভাপতিত্ব করবেন বিএনপি’র চুয়াডাঙ্গা জেলা আহবায়ক ও কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-কোষাধাক্ষ্য মাহমুদ হাসান খান বাবু। সঞ্চালক থাকবেন চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব শরীফুজ্জামান শরীফ।

চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সম্মেলন পরিচালনা কমিটির নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট শাজাহান মুকুল বলেন, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যে ৩টি পদে সাতজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তবে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় মাহমুদ হাসান খান বাবুই হচ্ছেন জেলা বিএনপির সভাপতি। ৮০৮ জন কাউন্সিলর তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে নেতা নির্বাচিত করবেন।

সারাবাংলা/এসআর

১৪ বছর পর সম্মেলন চুয়াডাঙ্গা বিএনপি সম্মেলন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর