Wednesday 01 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

স্যাটেলাইট ইন্টারনেট চালু করবে সরকার

সারাবাংলা ডেস্ক
১৫ নভেম্বর ২০২৪ ২২:২০ | আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২৪ ০০:৩২

স্যাটেলাইট ইন্টারনেট। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: দেশে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহিদদের আত্মত্যাগের ফসল ঘরে তুলতে বর্তমান স্যাটেলাইট ইন্টারনেট চালুর লক্ষ্যে টেলিকম নিয়ন্ত্রক খসড়া নির্দেশিকা চূড়ান্ত করতে জনগণের মতামত চেয়েছে।

এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, স্যাটেলাইট ইন্টারনেট চালুর এ পদক্ষেপ ব্যাকহোলিং, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও গ্রাহকের ডেটা ব্যবহারের পাশাপাশি ডিজিটাল বিভাজন দূর করে সেতু বন্ধনে নতুন দ্বার উন্মোচনে সহায়ক হবে। কেননা এর মাধ্যমে ইলন মাস্কের স্টারলিংক এবং বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় অন্যান্য কোম্পানিগুলোর বাংলাদেশের বাজারে প্রবেশের পথ প্রশস্ত করতে পারে।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) গত ২৯ অক্টোবর তাদের ওয়েবসাইটে এনজিএসও স্যাটেলাইট পরিষেবা অপারেটরের জন্য খসড়া নিয়ন্ত্রক এবং লাইসেন্সিং নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে। নির্দেশিকা চূড়ান্ত করতে ১৮ নভেম্বরের মধ্যে মতামত চেয়েছে।

দেশে ডাটা পরিষেবায় বিপ্লব ঘটাবে বিবেচনায় দেশের মোবাইল ফোন অপারেটর এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডাররা স্যাটেলাইট ইন্টারনেট চালুর পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে। তাদের মতে এই উদ্যোগ ডিজিটাল বিভাজন দূর করে সেতু বন্ধনে নতুন সুযোগ উন্মোচন করতে পারে।

খসড়া নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, কোম্পানি আইন ১৯৯৪-এর অধীনে ‘জয়েন্ট স্টক কোম্পানি ও ফার্ম নিবন্ধক’র অধীনে নিবন্ধিত মালিকানা, অংশীদারিত্ব এবং কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে এনজিএসও স্যাটেলাইট সিস্টেম এবং পরিষেবাগুলো নির্মাণ, মালিকানা, রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনার লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবে।

এত আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ১০০ শতাংশ এফডিআই বা বিদেশি অংশীদারিত্ব বা যৌথ উদ্যোগ বা অনাবাসী বাংলাদেশি (এনআরবি) থেকে বিনিয়োগ এনজিএসও স্যাটেলাইট সিস্টেম এবং পরিষেবাগুলো নির্মাণ, মালিকানাধীন, রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনা করতে পারবে। খসড়া নির্দেশিকা অনুযায়ী লাইসেন্সের মেয়াদ হবে পাঁচ বছর।

বিজ্ঞাপন

এতে আরও বলা হয়, লাইসেন্সধারী এনজিএসও স্যাটেলাইট পরিষেবাগুলো প্রদানের জন্য ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবা, ইন্ট্রানেট পরিষেবা (দেশীয় ডেটা যোগাযোগ), ইন্টারনেট অব থিংস ও মেশিন-টু-মেশিন সংযোগ, গতি পরিষেবায় আর্থ স্টেশন, আর্থ এক্সপ্লোরেশন স্যাটেলাইট পরিষেবা, রিমোট সেন্সিং ও আবহাওয়া সংক্রান্ত পরিষেবা এবং বিটিআরসি দ্বারা অনুমোদিত অন্য কোনো পরিষেবা অনুমোদন পাবে।

তবে অপারেটররা সরাসরি-টু-হোম পরিষেবা, সম্প্রচার পরিষেবা, স্যাটেলাইট আইএমটি-ভিত্তিক পরিষেবা বা টেলিযোগাযোগ পরিষেবা প্রদানের জন্য অনুমোদিত নয়।

আবেদন বা প্রসেসিং ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ টাকা। যার মধ্যে অধিগ্রহণ ফি ১০ হাজার ইউএস ডলার এবং বার্ষিক ফি ৫০ হাজার ডলার। এছাড়াও বার্ষিক স্টেশন/টার্মিনাল ফি ২০ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।

লাইসেন্সধারীকে তার বার্ষিক নিরীক্ষিত মোট রাজস্বের ৫ দশমিক ৫ শতাংশ বিটিআরসিকে দিতে হবে। গ্রস রাজস্বের আরও ১ শতাংশ বাধ্যতামূলক হিসেবে ‘মহাকাশ শিল্পের উন্নয়ন এবং ব্যবস্থাপনায় অবদান’র অংশ হিসাবে জমা দিতে হবে।

লাইসেন্সধারীকে অবশ্যই সেবা শুরুর আগে বাংলাদেশের মধ্যে অন্তত একটি গেটওয়ে সিস্টেম স্থাপন করতে হবে। তবে বিটিআরসি লাইসেন্সধারীদের অতিরিক্ত গেটওয়ে স্থাপনে উৎসাহিত করছে।

বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমানার মধ্যে স্থাপন করা যেকোনো ব্যবহারকারীর টার্মিনাল অবশ্যই এই স্থানীয় গেটওয়ের মাধ্যমে এবং পরিবেশিত হতে হবে। খসড়া অনুযায়ী বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পরিষেবার জন্য এই টার্মিনালগুলো থেকে সমস্ত ট্রাফিক অবশ্যই এই স্থানীয় গেটওয়ের মাধ্যমে হতে হবে।

এনজিএসও গেটওয়ে আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট ডাটা ট্রাফিক পরিচালনার জন্য আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়ের সাথে সংযুক্ত হবে।

রবি আজিয়াটার চিফ কর্পোরেট এবং নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা শাহেদ আলম বাসসের সঙ্গে আলাপকালেবলেন, ‘ডাটা পরিষেবায় বিপ্লব ঘটানোর সম্ভাবনার স্বীকৃতি হিসেবে আমরা দেশে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট চালু করার উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।’

এই অগ্রগতি ব্যাকহোলিং, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং গ্রাহক ডেটা ব্যবহারের মতো ক্ষেত্রে নতুন সুযোগের পথ প্রশস্ত করতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তৈমুর রহমান বলেন, ‘আমরা মনে করি এই নতুন পরিষেবা চালুর আগে জনসাধারণের পরামর্শ নেওয়ার নিয়ন্ত্রকের উদ্যোগটি প্রশংসনীয়। আমরা এ উদ্যোগের প্রশংসা করি।’

তিনি আরও বলেন, ‘জনসাধারণের পরামর্শ নেওয়ার এ প্রক্রিয়াটি এর ভবিষ্যত দিকনির্দেশনা তৈরিতে সহায়ক হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’

গ্রামীণফোনের হেড অব কমিউনিকেশন্স শরফুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘মানুষের জীবন, সমাজ, অর্থনীতি এবং সামগ্রিকভাবে দেশে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম যেকোনো নতুন প্রযুক্তিকে স্বাগত জানায় গ্রামীণফোন।’

তিনি আরও বলেন, ‘যেকোনো নতুন লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে বৈষম্যহীন আচরণ নিশ্চিত করা উচিত। যার মাধ্যমে বর্তমানে বাজারে থাকাসহ নতুন বাজারে আসা সবার মধ্যে প্রতিযোগিতার থাকে।’

গ্রাহকদের ইন্টারনেট সেবা প্রদানে নিয়োজিত সংস্থাগুলোর প্ল্যাটফর্ম ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশও (আইএসপিএবি) যেকোনো নতুন প্রযুক্তিকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত। তার আগে এটিতে যাওয়ার আগে প্রথমে এই প্রযুক্তির প্রয়োজনীয়তা চিহ্নিত করার ওপর জোর দিয়েছে তারা।

আইএসপিএবি সভাপতি মো. এমদাদুল হক জানান, দেশ ও শিল্পের জন্য উপযুক্ত হলে তারা সবসময় নতুন প্রযুক্তিকে স্বাগত জানায়। তিনি বলেন, ‘নতুন প্রযুক্তিকে স্বাগত জানাতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। তবে প্রযুক্তিটি দেশ ও জনগণের জন্য উপযোগী কি না তা আগে বিবেচনা করা উচিত।’

সারাবাংলা/পিটিএম

চালু টপ নিউজ ডিজিটাল বৈষম্য দূর সরকার স্যাটেলাইট ইন্টারনেট

বিজ্ঞাপন

ফিরে দেখা ২০২৪ / ছবিতে বছর ভ্রমণ
১ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:৪৫

আরো

সম্পর্কিত খবর