পৃথক হত্যা মামলায় সাবেক ২ আইজিপি রিমান্ডে
৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১০:০০ | আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:২৫
ঢাকা: হত্যা মামলায় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের আট ও শহীদুল হকের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এছাড়া অপহরণ মামলায় ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সুপার নিউমারারি পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) আব্দুল্লাহিল কাফির আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আক্তারুজ্জামানের আদালত এ আদেশ দেন।
এদিন বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলন চলাকালে মোহাম্মদপুরে মুদি দোকানদার আবু সায়েদ হত্যা মামলায় মামুনের ও রাজধানীর নিউমার্কেট থানা এলাকায় ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ হত্যা মামলায় শহীদুলের এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে তাদের উত্তরা থেকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গ্রেফতারের পর তাদের গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে নেওয়া হয়।
কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের ওপর পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালালে গত ১৯ জুলাই বিকেল ৪টার দিকে মোহাম্মদপুর থানার বছিলায় ৪০ ফিট চৌরাস্তায় মুদি দোকানদার আবু সায়েদ নিহত হন।
এ ঘটনায় গত ১৩ আগস্ট ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালতে এস এম আমীর হামজা নামে এক ব্যক্তি মামলা করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ সাত জনকে আসামি করা হয়। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন। এজাহার হিসেবে গ্রহণ করতে মোহাম্মদপুর থানাকে নির্দেশ দেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত কমিশনার মো. হারুন অর রশীদ ও যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার।
গত ১৯ জুলাই বিকেল ৫টায় নিউমার্কেটের ১নং গেটের সামনে গুলিতে নিহত হন ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ। এ ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ১৩০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়। নিহত ব্যবসায়ীর ভাগনি জামাই আব্দুর রহমান বাদী হয়ে গত ২১ আগস্ট নিউমার্কেট থানায় এ মামলা করেন।
মামলার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাবেক সংসদ সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, সাবেক মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত, সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব চৌধুরী জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক আইজিপি শহীদুল হক, সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদসহ অনেকে।
এদিকে হাজারীবাগ থানার অপহরণ মামলায় কাফির বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়েছে, আসামি কাফি ধানমন্ডি জোনে অতিরিক্ত উপ-কমিশনারের পদে নিয়োজিত থাকাকালে মামলার অপর সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ, পুলিশ কর্মকর্তা মারুফ হোসেন সরদার, হাজারীবাগ থানার ওসি ইকরাম আলী মিয়া এবং আসামি মাইনুদ্দিন কাজলসহ অজ্ঞাতপরিচয় ১০/১২ জন মিলে ২০১৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি ধানমন্ডি থেকে মামলার বাদী ইঞ্জিনিয়ার আরিফ মাঈন উদ্দিনকে অপহরণ করে। এরপর হাজারীবাগ থানাধীন অজ্ঞাত স্থানে আটকে রেখে মুক্তিপণ চেয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ বাদীর পরিবার থেকে আদায় করে।
এর আগে, গত সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) কাফীর বিরুদ্ধে মরদেহ পুড়িয়ে ফেলার অভিযোগে আশুলিয়া থানায় একটি মামলা এবং হাজারীবাগ থানায় একটি মামলা হয়েছে।
পরে সোমবার বিমানবন্দর থেকে ডিবি পুলিশ কাফীকে আটক করে। তার বিরুদ্ধে গত ৫ আগস্ট ঢাকার আশুলিয়ায় ছাত্র-জনতাকে হত্যার পর আগুনে পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগ রয়েছে।
সারাবাংলা/কেআইএফ/এমও