Friday 03 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চট্টগ্রামে কোটা বাতিলের দাবিতে সড়ক অবরোধ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৫ জুলাই ২০২৪ ২২:২৮ | আপডেট: ৫ জুলাই ২০২৪ ২২:৩০

চট্টগ্রাম ব্যুরো: প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালে হাইকোর্টের রায় বাতিলের দাবিতে এবার চট্টগ্রাম নগরীতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার (৫ জুলাই) বিকেলে নগরীর দুই নম্বর গেইট এলাকায় অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এতে এই সড়কে প্রায়ই এক ঘণ্টা  যান চলাচল বন্ধ ছিল।

এর আগে গতকাল (বৃহস্পতিবার) ও আগের দিন (বুধবার) কোটা বাতিলের দাবিতে চট্টগ্রাম-হাটহাজারী আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছিলেন শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. ইব্রাহিম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা বিকেল পাঁচটায় প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী দুই নম্বর গেইটে অবস্থান নেই। এরপর ৫টা ৫০ মিনিটে সেখান থেকে সরে যায়। পুলিশ আমাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছে। সরকারি চাকরিতে প্রথম গ্রেড থেকে ২০ গ্রেড পর্যন্ত প্রতিবন্ধী ছাড়া সব কোটা বাতিলের দাবিতে সারা বাংলাদেশে টানা তিনদিন আমাদের কর্মসূচি আছে।’

‘আগামীকালও (শনিবার) একই জায়গায় আমরা অবস্থান নেব। সব কলেজের ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও থাকবে। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’

খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ নেয়ামত উল্লাহ সারাবাংলাকে বলেন, ‘বিকেল পাঁচটার দিকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা সড়কে অবস্থান নিয়েছিলেন। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। শ’খানেক পুলিশ ঘটনাস্থলে নিয়োজিত ছিল। শিক্ষার্থীরা সড়কে অবস্থান নেওয়ায় প্রায় আধা ঘণ্টার মতো যান চলাচল বন্ধ ছিল। পরে তারা চলে গেলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।’

বিজ্ঞাপন

২০১৮ সাল পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে মোট ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। এ কোটা পদ্ধতি সংস্কার করে সব ধরনের কোটা ১০ শতাংশের মধ্যে নামিয়ে আনার দাবিতে ওই বছর আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা। ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে ওই আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনের মুখে ওই বছরের ৪ অক্টোবর পরিপত্র জারি করে সব ধরনের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে কোটাব্যবস্থাই বাতিল করে সরকার।

ওই সময় ৩০ শতাংশ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তান-নাতি-নাতনি কোটা, ১০ শতাংশ নারী কোটা, ১০ শতাংশ জেলা কোটা, ৫ শতাংশ ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী কোটা ও ১ শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটা চালু ছিল সরকারি চাকরিতে। ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি-১ শাখা থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে নবম গ্রেড থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত সরাসরি নিয়োগে সব ধরনের কোটা বাতিল করা হয়।

ওই পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা ২০২১ সালের জুন মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। রিটের শুনানি নিয়ে ২০২১ সালের ৬ ডিসেম্বর বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল জারি করেন। রুলে সরকারি চাকরিতে ৯ম গ্রেড থেকে ১৩ম গ্রেড পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও তাদের সন্তানদের ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত বাতিল করে জারি করা পরিপত্র কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।

রিটের শুনানি নিয়ে ৫ জুন ঘোষণা করা রায়ে হাইকোর্ট পরিপত্রের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা বাতিলের অংশটি অবৈধ ঘোষণা করেন। এরপরই শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা আবার ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে’র ব্যানারে নতুন করে কোটাবিরোধী আন্দোলন শুরু করেছেন।

বিজ্ঞাপন

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো— ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে; ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সব গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে, তবে সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করে কোটা রাখা যেতে পারে; সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না; কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে; দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

সারাবাংলা/আইসি/এনইউ

অবরোধ কোটা চট্টগ্রাম টপ নিউজ দাবি বাতিল সড়ক

বিজ্ঞাপন

না ফেরার দেশে অঞ্জনা
৪ জানুয়ারি ২০২৫ ০১:৫৪

এই তাসকিনকে সমীহ করবেন যে কেউ
৪ জানুয়ারি ২০২৫ ০১:৪৭

আরো

সম্পর্কিত খবর