ঈদের আগে ২ সপ্তাহে রেমিট্যান্স এসেছে সাড়ে ১৯ হাজার কোটি টাকা
২০ জুন ২০২৪ ২০:১৫ | আপডেট: ২০ জুন ২০২৪ ২৩:৩২
ঢাকা: ঈদুল আজহা সামনে রেখে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের পালে হাওয়া লেগেছে। চলতি জুন মাসের প্রথম ১৪ দিনে দেশে প্রবাসী আয় এসেছে ১৬৪ কোটি ৬৭ লাখ মার্কিন ডলার। ১ ডলার ১১৮ টাকা হিসাবে বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১৯ হাজার ৪৩২ কোটি টাকা। সে হিসাবে এই দুই সপ্তাহে গড়ে প্রতিদিন রেমিট্যান্স এসেছে এক হাজার ৩৮৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, জুনের প্রথম সপ্তাহে রেমিট্যান্স আসে ৭২ কোটি ৬২ লাখ ডলার। পরের সপ্তাহে এর গতি আরও বেড়ে যায়। এ সপ্তাহে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ৯২ কোটি ৫ লাখ ডলার।
জুনের প্রথম এই দুই সপ্তাহে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৩৯ কোটি ৪০ লাখ ডলার। বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে চার কোটি মার্কিন ডলার। বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে মাত্র ৪২ লাখ ডলার। বাকি ১২০ কোটি ৮১ লাখ ডলার এসেছে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতি বছর দুই ঈদ, বিশেষ করে ঈদুল আজহার আগে রেমিট্যান্সের প্রবাহ বেড়ে যায়। এর সঙ্গে গত মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক এক লাফে ডলারের দাম ৭ টাকা বাড়িয়ে ১১৭ টাকা নির্ধারণ করলে সেটিও রেমিট্যান্সের প্রবাহ বেড়ে যাওয়ার পেছনে ভূমিকা রেখেছে।
আরও পড়ুন- ঈদের আগে প্রতিদিন রেমিট্যান্স এসেছে ১৪০০ কোটি টাকা
এদিকে গত বছরের জুনে প্রবাসীরা দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন ২১৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার। এটি আগের ৩৫ মাসের হিসাবে এক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স। এ মাসের প্রথম ১৪ দিনে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে, শেষ ১৬ দিনে তার এক-তৃতীয়াংশ রেমিট্যান্স দেশে এলেও গত বছরের জুনের সর্বোচ্চ রেমিট্যান্সের রেকর্ড ভেঙে যাবে।
এর আগে এ বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ২১০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল, দ্বিতীয় মাস ফেব্রুয়ারিতে এসেছিল ২১৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার। মার্চে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স কিছুটা কমে ১৯৯ কোটি ৬৮ লাখ ৫০ হাজার ডলারে দাঁড়ায়। কিছুটা বেড়ে রেমিট্যান্স হয় ২০৪ কোটি ডলার। আর সর্বশেষ গত মে মাসে এসেছে ২২৫ কোটি ডলার।
বিভিন্ন অর্থবছরভিত্তিক রেমিট্যান্স
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের মে পর্যন্ত) রেমিট্যান্স এসেছে দুই হাজার ২৯৫ কোটি ৬৮ লাখ মার্কিন ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছিল দুই হাজার ১৬১ কোটি ডলার।
এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রবাসীরা দুই হাজার ১০৩ কোটি ডলার ও ২০২০-২১ অর্থবছরে দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন। এ ছাড়াও ২০১৯-২০ অর্থবছরে এক হাজার ৮২০ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের এক হাজার ৬৩১ কোটি ডলার, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এক হাজার ৪৯৮ কোটি ডলার, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এক হাজার ২৭৬ কোটি ৯৪ লাখ ডলার, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এক হাজার ৪৯৩ কোটি ডলার ও ২০১৪-১৫ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এক হাজার ৫৩১ কোটি ৬৯ লাখ ডলার রেমিট্যান্স দেশে এসেছে।
পঞ্জিকাবর্ষ হিসাবে রেমিট্যান্স
২০২৩ সালে প্রবাসী দুই হাজার ১৯২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন। ২০২২ সালে এর পরিমাণ ছিল দুই হাজার ১২৭ কোটি ডলার। আর ২০২১ সালে দুই হাজার ২০৭ কোটি ৮৫ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা, যা এখন পর্যন্ত এক পঞ্জিকাবর্ষে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্সের রেকর্ড।
এর আগে ২০২০ সালে দুই হাজার ১৭৪ কোটি ১৮ লাখ ডলার, ২০১৯ সালে এক হাজার ৮৩৩ কোটি মার্কিন ডলার, ২০১৮ সালে এক হাজার ৫৫৩ কোটি ৭৮ লাখ ডলার, ২০১৭ সালে এক হাজার ৩৫৩ কোটি ডলার, ২০১৬ সালে এক হাজার ৩৬১ কোটি ডলার এবং ২০১৫ সালে এক হাজার ৫৩১ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স আসে দেশে।
সারাবাংলা/জিএস/টিআর