Monday 06 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

৩০ স্কুলছাত্রের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচার, শিক্ষক গ্রেফতার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৯ মে ২০২৪ ২২:৩০ | আপডেট: ২০ মে ২০২৪ ১০:৪৫

ঢাকা: রাজশাহীতে ১০ বছরের কমবয়সী ৩০ স্কুলছাত্রের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচারের অভিযোগে আব্দুল ওয়াকেল নামে এক শিক্ষককে (৩৩) গ্রেফতার করেছে ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি)। তিনি কাটাখালী আশরাফ মেমোরিয়াল মডেল স্কুলের শিক্ষক। পাশাপাশি তিনি একটি কোচিং সেন্টার চালাতেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিআইডির কাছে ওই শিক্ষকের বিকৃত অপরাধের কথা স্বীকার করেছেন। তবে তার আগে সিআইডি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে এ ব্যাপারে জানতে পারে।

বিজ্ঞাপন

সিআইডি বলছে, যৌন নিপীড়নের দৃশ্যগুলো ভিডিও ধারণ করে ওই শিক্ষক নিজের মোবাইল ফোন, পেনড্রাইভ, কম্পিউটার এবং হার্ডডিস্কে সংরক্ষণ করে রাখতেন। সার্চ ইঞ্জিন এ সব তথ্য পৌঁছে দেয় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ন্যাশনাল সেন্টার মিসিং অ্যান্ড এক্সপ্লয়েটেড চিলড্রেন (এনসিএমইসি) নামে এক প্রতিষ্ঠানের কাছে।

তারা আইওএম, ইউএনওডিসি, এনসিএমইসিসহ বহু আন্তর্জাতিক সংস্থার অংশীদার হওয়ায় চাইল্ড অ্যাবিউজ সংক্রান্ত কন্টেন্টটি সিআইডিতে পাঠানো হয়। এ তথ্যের ভিত্তিতে সিআইডি’র নিজস্ব ক্রিমিনাল ইন্টেলিজেন্স টিম তদন্ত শুরু করে। স্থানীয় ভুক্তভোগী অনেক ছাত্র ও অভিভাবকরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে তদন্ত দলের কাছে শিক্ষক মো. আব্দুল ওয়াকেলের শিশু নির্যাতন সম্পর্কে ভয়ঙ্কর তথ্য সরবরাহ করে।

এসব তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার (১৮ মে) সিআইডির একটি বিশেষ টিম তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে রাজশাহী শহরের শ্যামপুর ডাঁশমারী এলাকায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত মো. আব্দুল ওয়াকেলকে গ্রেফতার করে। সিআইডি হেডকোয়ার্টারের মিডিয়া শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( অ্যাডিশনাল এসপি) আজাদ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বিজ্ঞাপন

প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, আব্দুল ওয়াকেল কাটাখালীর আশরাফ মেমোরিয়াল মডেল স্কুলের শিক্ষক। ছাত্রাবস্থায় তিনি একটি একটি কোচিং সেন্টারে শিক্ষকতা করতেন। তখন থেকেই তিনি কোচিংয়ের ছাত্রদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে সখ্য গড়ে তুলতেন। পরবর্তীতে ভুক্তভোগীদের কৌশলে কোচিং সেন্টার, নিজ বাড়িতে অথবা কখনো কখনো আশেপাশের বাগানে নিয়ে যেতেন। শিশু-কিশোর ছাত্রদের চকলেট এবং মোবাইল গেম খেলতে দিতেন।

তারা যখন গেম নিয়ে প্রচণ্ড ব্যস্ত থাকত তখন তাদের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচার করতেন তিনি। আগে থেকেই সেট করে রাখা মোবাইল ক্যামেরায় ভিডিও ধারণ করে তা সংরক্ষণ করে রাখতেন ওয়াকিল। নিপীড়নের শিকার শিশুরা সবাই তার ছাত্র ছিল।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওয়াকেল স্নাতক পড়ার সময় থেকেই ছেলে শিশুদের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচারের কথা স্বীকার করেছেন। মূলত সেই কারণেই তিনি কোচিং সেন্টার চালু করেছিলেন। এ পর্যন্ত সে ৩০ জন স্কুলছাত্রকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন তিনি।

তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, পেনড্রাইভ এবং কম্পিউটারের একাধিক হার্ডডিস্কে স্কুলছাত্রদের বিপুল পরিমাণ নগ্ন ছবি, ভিডিও এবং চাইল্ড পর্নোগ্রাফির কন্টেন্ট পাওয়া গেছে।

ওয়াকিলের বিরুদ্ধে তার বর্তমান কর্মস্থল আশরাফ মেমোরিয়াল মডেল স্কুলের প্রধান শিক্ষক বাদী হয়ে ঢাকার পল্টন থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেছেন। তার কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন, দুটি হার্ডডিস্ক ও দুটি পেনড্রাইভ উদ্ধারের কথা জানিয়েছে পুলিশ।

পল্টন থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সেন্টু মিয়া মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সারাবাংলা/ইউজে/একে

টপ নিউজ বিকৃত যৌনাচার শিক্ষক গ্রেফতার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর