Monday 06 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

লোডশেডিং ও সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে সংসদে ক্ষোভ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৫ মে ২০২৪ ২৩:০৮ | আপডেট: ৬ মে ২০২৪ ০৪:৫৭

ঢাকা: বিদ্যুতের লোডশেডিং এবং সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে জাতীয় সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিরোধী দলের চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু। এ সময় তিনি বিদ্যুতের দায়মুক্তি চুক্তি প্রত্যাহারের দাবি জানান।

রোববার (৫ মে) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে দেওয়া বক্তব্যে মুজিবুল হক চুন্নু এসব কথা বলেন। এ সময় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করছিলেন।

মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, এই মৌসুমে গ্রামেগঞ্জে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোথাও ১২ ঘণ্টা, কোথাও ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। আমার এলাকায় ৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। আমি জানি না, সরকার বলেছে ২৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সক্ষমতা আছে। তাহলে বিদ্যুৎ গেল কোথায়?

এ সময় সরকারি দলের সদস্যদের কেউ কেউ আপত্তি করলে চুন্ন বলেন, প্লিজ, লোডশেডিং হয় না গ্রামে? চ্যালেঞ্জ করলাম। আমার এলাকার মানুষ আমাকে বলেছে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে দাওয়াত দিতে আমার এলাকায় একটা দিন থাকার জন্য, লোডশেডিং হয় কি না দেখার জন্য। এর আগেও এই সংসদে আমি বলেছিলাম, আমার এলাকায় বিদ্যুৎ চলে যায়। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আমাকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। আমি আজ চ্যালেঞ্জ চাই না। আমি চাই, উনি সশরীরে আমার এলাকায় যাবেন এই দুই-চার দিনের মধ্যে একদিন। কয় ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে গ্রাম এলাকায়, দেখে আসবেন।

বিদ্যুৎ উৎপাদনে দায়মুক্তি চুক্তি দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে চুন্নু বলেন, আমার প্রশ্ন আরেক জায়গায়— যেসব বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র আছে ভাড়া, তাদের ৪১ শতাংশ সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও বসে আছে। ২০২২-২০২৩ আর্থিক বছরে বসে থাকার কারণে ভাড়া বাবদ ২৬ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। আমি বলতে চাই, ওই যে দায়মুক্তি দিয়ে যেসব চুক্তি আমরা করেছি, এই দায়মুক্তি চুক্তিটা দয়া করে প্রত্যাহার করেন। এই যে বসে বসে জরিমানা দেওয়া হবে বিদ্যুৎ উৎপাদন না করলেও, এই চুক্তি বাতিল করেন। আমাদের বিদ্যুৎ দিলে আমরা বিল দেই। ঠিক ওই সব কোম্পানি বিদ্যুৎ দিলে তাহলে বিল দেবেন। বসিয়ে রেখে এভাবে এক বছরে ২৬ হাজার কোটি টাকা দেবেন, তারপরও আবার লোডশেডিং থাকবে! এই যে অসহনীয় অবস্থা, এই দেশে ঢাকা শহর থেকে কেউ আপনারা বুঝবেন না।

বিজ্ঞাপন

বিদ্যুতের অপচয় বন্ধের আহ্বান জানিয়ে সংসদের বিরোধী দলের এই নেতা বলেন, প্রতিযোগিতামূলক পদক্ষেপের মাধ্যমে বিদ্যুতের ব্যবসা যারা করে, যারা বিদ্যুতের প্লান্ট বসান, অপচয় বন্ধ করেন। বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছেন আইএমএফের কারণে। মন্ত্রী অবশ্য একটা সুন্দর কথা বলেন— ‘সমন্বয়’। সমন্বয় মানে মূল্য বৃদ্ধি করেন, এটা বলতে লজ্জা হয়? আগামী তিন বছর বার বার এই সমন্বয় করবেন। অর্থাৎ মূল্য বৃদ্ধি করবেন। করে ভর্তুকি যদি পুরো তোলেন, এখন যা বিদ্যুতের দাম প্রতি মিনিট তা দ্বিগুণ হয়ে যাবে দুই-তিন বছর পরে। মানুষ কিনতে পারবে কি না, আমি জানি না। আমি বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে বলব, শুধুমাত্র দাম বৃদ্ধি না করে এমন কিছু পদক্ষেপ নেন যে পদক্ষেপের মাধ্যমে জনগণের ওপর চাপ না এসে একটা সহনীয় অবস্থা তৈরি হয়।

সড়ক দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, গত ঈদে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩১৫ জন মারা গেছেন ঈদের আগে ও পরে। প্রতিদিন এখন ১৪ জন মারা যায়। বছরে পাঁচ হাজারের মতো লোক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়। এটা সরকারের সংস্থার হিসাব। ১৭ এপ্রিল ঝালকাঠিতে সিমেন্টবাহী ট্রাকের চাপায় ১৪ জন মারা গেলেন। সে ট্রাকটির চালকের ভারী যানবাহন চালানোর কোনো লাইসেন্সই ছিল না।

সড়ক দুর্ঘটনার আরও উদাহরণ তুলে ধরে চুন্নু বলেন, চট্রগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় ২২ এপ্রিল যে বাসের ধাক্কায় একজন শিক্ষার্থী মারা যায়, সেই গাড়িটার কোনো ফিটনেসই ছিল না। গাড়িটা ৪৩ বছরের পুরনো। এত পুরনো গাড়ি হলে তো দুর্ঘটনা ঘটবেই। কারণ সড়কে যেসব দুর্ঘটনা হয় এর বেশির ভাগেরই কারণ পুরনো গাড়ি, ফিটনেস নেই, ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই।

সড়ক পরিবহণমন্ত্রীকে আরও কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, আপনি একটু শক্ত হোন। ওই পুরোনো গাড়ি, ড্রাইভিং লাইসেন্স ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি-অটোরিকশা যদি রাস্তায় চলাচল না করে, তাহলে এভাবে মানুষগুলো মারা যাবে না। দয়া করে আপনি এ বিষযে ব্যবস্থা নেন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর

টপ নিউজ বিদ্যুতের দাম লোডশেডিং সড়ক দুর্ঘটনা

বিজ্ঞাপন

চলে গেলেন প্রবীর মিত্র
৫ জানুয়ারি ২০২৫ ২৩:৪২

আরো

সম্পর্কিত খবর