ভাষাসৈনিক গোলাম আরিফ টিপুর জানাজা সম্পন্ন
১৫ মার্চ ২০২৪ ১৫:৪৯ | আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৪ ১৭:২৪
ঢাকা: আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর, ভাষাসৈনিক ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী গোলাম আরিফ টিপুর জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। শুক্রবার (১৫ মার্চ) বিকেল সোয়া ৩টার দিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে তার জানাজার নামাজ হয়।
পরে তার মরদেহে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপর বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
তার মরদেহ পল্টনে অবস্থিত বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির অফিস মুক্তি ভবনে নেওয়া হবে। এরপর নেওয়া হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
আজ সকাল ৮টার দিকে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান গোলাম আরিফ টিপু। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। সম্প্রতি তিনি বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে ল্যাব এইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
গোলাম আরিফ টিপু একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ভাষা সৈনিক। ১৯৫২ সালে রাজশাহীতে বাংলা ভাষা আন্দোলন তার নেতৃত্বেই সংগঠিত হয়। তিনি রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের রাজশাহী অঞ্চলের যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ভাষা আন্দোলনে বিশেষ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ২০১৯ সালে একুশে পদক প্রদান করে।
গোলাম আরিফ টিপু ১৯৫৮ সালে একজন আইনজীবী হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি একাধিকবার রাজশাহী আইনজীবী সমিতির সভাপতি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য এবং বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হন।
ভাষা সংগ্রামী গোলাম আরিফ টিপুর মরদেহ আজ সকালেই হাসপাতাল থেকে তার বেইলি রোডের বাসায় নেওয়া হয়। সেখানকার মসজিদে জুমার নামাজের পর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে তার মরদেহ আন্তর্জাতিক মানবতা বিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে নেওয়া হবে তার দলের কার্যালয় মুক্তিভবনে। বিকেল ৪টায় সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য গোলাম আরিফ টিপুর মরদেহ নেওয়া হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে।
উল্লেখ্য, ১৯৩১ সালের ২৮ আগস্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কমলাকান্তপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন গোলাম আরিফ টিপু। তাঁর বাবা আফতাব উদ্দিন আহমদ ছিলেন জেলা রেজিস্ট্রার। ৯ ভাইবোনের মধ্যে টিপু দ্বিতীয়।
গোলাম আরিফ টিপু কালিয়াচর বিদ্যালয় থেকে ১৯৪৮ সালে মাধ্যমিক ও রাজশাহী কলেজ থেকে ১৯৫০ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। একই কলেজ থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক সম্পন্নের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৫৪ থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি আইনজীবী, মুক্তিযোদ্ধা ও ভাষা আন্দোলন কর্মী ছিলেন।
সারাবাংলা/কেআইএফ/এনইউ
