অপহরণের নাটক সাজিয়ে মামলা, অবশেষে ধরা
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৯:২২ | আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৯:৪৪
নোয়াখালী: আত্মগোপনে গিয়ে অপহরণের নাটক সাজিয়ে প্রতারণার অভিযোগে শের আলী (৩২) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে নোয়াখালী জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দেড়টার দিকে নোয়াখালী গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দিন আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এরআগে, রোববার দিবাগত রাত ৯টার দিকে কক্সবাজার জেলার পৌর বাস টার্মিনালের মারছা বাস কাউন্টারের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
শের আলী জেলার কবিরহাট উপজেলার নলুয়া গ্রামের সামছুদ্দিনের ছেলে।
জানা যায়, অপহরণের নাটক সাজিয়ে ভিকটিম নিজেই আত্নগোপনে ছিলেন। এরপর ভিকটিম তার চাচাকে দিয়ে অপহরণ মামলা করান।
পুলিশ জানায়, জেলার হাতিয়া বাজার এলাকার মোবারকের (৩২) সঙ্গে চট্টগ্রাম হালিশহর এলাকায় একই সাথে সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালানোর সুবাদে শের আলীর সাথে ওস্তাদ সাগরেদের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০২২ সালের ২২ জুলাই মোবারক মোটরসাইকেল কিনতে শের আলীকে নিয়ে চট্টগ্রাম কাপ্তাই রাস্তার মাথাধীন মৌলভী বাজার মোটর সাইকেল শো-রুমে যায়। মোবারক লুঙ্গি পড়ে যান এবং কথিত ভিকটিম শের আলী প্যান্ট পড়ে যাওয়ায় সে মোবারককে মোটরসাইকেল কেনার টাকা তার কাছে রাখার জন্য বললে মোবারক মোটরসাইকেল কেনার এক লাখ ২০ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল শের আলীর কাছে রাখতে দেন।
পুলিশ আরও জানায়, মোবারক মোটরসাইকেল শো-রুমে ঢুকে দরদাম করে রেজিস্ট্রেশন করার জন্য ছবি ও ভোটার আইডি কার্ড প্রিন্ট করার জন্য অন্য দোকানে যান। এ সুযোগে শের আলী মোবারকের টাকা ও মোবাইল সেট নিয়ে পালিয়ে নিজ এলাকায় চলে আসেন। ২০২২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর মোবারক ও তার বন্ধু ইউসুফ নলুয়া জনতা বাজারে এসে ওই বিষয়ে স্থানীয় লোকজনকে জানালে সেখানে সালিশ বৈঠক হয়। সালিশে বিষয়টি অমীমাংসিত থাকায় স্থানীয় লোকজন বিষয়টি সমাধানের জন্য হাতিয়ার হরণী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আক্তার হোসেনের শরণাপন্ন হন। একই দিন মোবারক ও শের আলী হরণী ইউনিয়নের বয়ারচর বাজারে যান। মোবারক সেখানে শের আলীকে একটি দোতলা বিল্ডিং ঘরে রেখে চেয়ারম্যানকে আনার জন্য গেলে শের আলী কৌশলে পালিয়ে যান।
ভুক্তভোগীরা জানান, পরবর্তীতে তার চাচা দেলোয়ার হোসেন বিটু শেরআলী ও তার ছেলে মারুফ অপহরণ হয়েছে বলে দাবি করেন। তার সঙ্গে জায়গা-জমি নিয়ে পূর্ব বিরোধ থাকা শামছুল হক মাঝিসহ ওই এলাকার আরও নয় জনের বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ১২ জুলাই আদালতে অপহরণ মামলা করেন তার চাচা। আদালতের নির্দেশে কবিরহাট থানায় উক্ত বিষয়ে নিয়মিত মামলা রুজু হয়। এরপর পরই কবিরহাট থানা পুলিশ তদন্ত করে। পরবর্তীতে মামলার তদন্তভার ডিবি নোয়াখালীতে ন্যস্ত হয়।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, কথিত ভিকটিম শেরআলী পেশায় একজন ড্রাইভার। সে খুবই চতুর ও ধূর্ত প্রকৃতির। সে ঘনঘন মোবাইল সিম পরিবর্তন করায় তার সঠিক অবস্থান নির্ণয় করা কঠিন হয়ে পড়ছিল। তার মোবাইল নম্বরের কললিস্ট পর্যালোচনায় দেখা যায়, সে কক্সবাজার, বান্দরবান, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা, গাজীপুর, মুন্সীগঞ্জসহ একেক সময় একেক স্থানে অবস্থান করেছেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। কথিত ভিকটিম শেরআলীকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিজ্ঞ আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে।
সারাবাংলা/এনইউ