চবি অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ
৩১ জানুয়ারি ২০২৪ ২০:৩৬ | আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২৪ ২১:৪৮
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ করেছেন ওই বিভাগের এক ছাত্রী।
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিরীণ আখতারের কাছে ওই শিক্ষার্থী এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন। এছাড়া একই অভিযোগে বিজ্ঞান অনুষদের সামনে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধনও করেছেন।
লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, বিজ্ঞান বিভাগের ওই শিক্ষক ছাত্রীর স্নাতকোত্তর থিসিসের সুপারভাইজার হিসেবে আছেন। থিসিস শুরু হওয়ার পর থেকে ওই শিক্ষক অভিযোগকারী ছাত্রীর জোর করে হাত চেপে ধরা, শরীরের বিভিন্ন অংশে অতর্কিতে ও জোরপূর্বক স্পর্শ করা, কথাবার্তায় অসঙ্গত ও অনুপযুক্ত শব্দের ব্যবহার করে যৌন হয়রানি করেন। এরপর কেমিক্যাল দেওয়ার অজুহাতে নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন।
ছাত্রীর বক্তব্য এমন, ‘গত ৬ জানুয়ারি, আনুমানিক সকাল ১০টা ১০ মিনিটে আমি ল্যাবে একা কাজ করা অবস্থায় তিনি (শিক্ষক) প্রবেশ করেন। তার অনেক ঠান্ডা লাগছে একথা বলে আমাকে জড়িয়ে ধরেন। আমি তাকে ধাক্কা মেরে নিজেকে ছাড়িয়ে নিই এবং তৎক্ষণাৎ আমার ল্যাবমেট এসে উপস্থিত হওয়ায় আমি কোনোরকমে বেঁচে যাই। তারপর আমি ও আমার ল্যাবের বাকি মেয়েরা মিলে ল্যাবে আর একা না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।’
গত ১৩ জানুয়ারি দুপুর ১২টার দিকে ওই শিক্ষক কেমিক্যাল দেয়ার বাহানা করে রুমে ডেকে নিয়ে দরজা বন্ধ করে ধর্ষণের চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ করেন ওই ছাত্রী। তার বক্তব্য, ‘ফ্রিজ থেকে কেমিক্যাল বের করার সময় আমাকে পেছন থেকে জোরপূর্বক জড়িয়ে ধরেন। শরীরের বিভিন্ন স্থানে অনাকাঙ্খিত স্পর্শ করেন। আমি তাকে ধাক্কা মেরে রুম থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলে তিনি দরজা বন্ধ করে আমাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। আমি ধ্বস্তাধস্তি করে উনার রুম থেকে বেরিয়ে আত্মরক্ষা করি। আমি তৎক্ষণাৎ বিষয়টি আমার ল্যাবের বাকি দু’জন মেয়েকে অবগত করি। ইতোপূর্বে তারাও এমন অনাকাঙ্খিত আচরণের শিকার হয়েছে।’
পরবর্তীতে মধ্যস্থতার কথা বলে ওই শিক্ষক আরও একবার ছাত্রীকে প্রায় ২৫ মিনিট তার কক্ষে আটকে রাখেন বলে অভিযোগ করেন ওই ছাত্রী।
লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন, ‘আমার সাথে ঘটে যাওয়া এই জঘন্যতম ঘটনার কারণে আমি শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রচণ্ড বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছি। তাই আমার দৈনন্দিন প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রমে চালিয়ে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে। আমি আমার থিসিস ল্যাবে অনিরাপত্তায় ভুগছি। নিরাপত্তাহীনতার কারণে থিসিস কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়।’
এ অভিযোগে বিষয়ে জানতে চাইলে ওই অধ্যাপক বলেন, ‘এমনিতেই আমি বিভিন্ন অসুখ-বিসুখ নিয়ে আছি, তার ওপর এ অভিযোগ। আমি ৩১ বছরের শিক্ষকতা জীবন পার করছি, কিন্তু এমন তিক্ত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়নি। আমি জানি না, এটা আমার কোনো পাপের ফল কি না। তারা আমার বিরুদ্ধে এমন একটি ভয়ঙ্কর অভিযোগ তুলেছে, যার সঙ্গে আমার বিন্দুমাত্র সম্পর্ক নেই।’
ছাত্রীর অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে উপাচার্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন নিরোধ সেলের আহবায়ক শিরীণ আখতার সাংবাদিকদের বলেছেন, অভিযোগ খতিয়ে দেখে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
সারাবাংলা/আরডি/এনইউ