Monday 06 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের ৫২তম শাহাদাৎ বার্ষিকী আজ

সারাবাংলা ডেস্ক
১০ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৯:৩৭

ঢাকা: মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদ বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন ও বীর বিক্রম মহিবুল্লাহর ৫২তম শাহাদাৎ বার্ষিকী আজ। ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর খুলনার রূপসায় সম্মুখ যুদ্ধে শহিদ হন এই দুই বীর যোদ্ধা।

দেশ স্বাধীনের মাত্র ৬ দিন আগে খুলনাকে শত্রুমুক্ত করতে রণতরী ‘পলাশ’, ‘পদ্মা’ ও ‘গানবোট পানভেল’ নিয়ে যাত্রাকালে শিপইয়ার্ডের অদূরে বিমানের নিক্ষিপ্ত গোলায় ‘পলাশে’ থাকা এই দুই সূর্যসন্তানসহ অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা শহিদ হন। পরে স্থানীয়রা তাদের মৃতদেহ রূপসা নদীর পূর্ব পাড়ে সমাহিত করেন।

বিজ্ঞাপন

প্রতি বছরের ন্যায় এবারও এই দুই শহিদ বীরের স্মরণে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে রূপসা প্রেসক্লাব। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, ১০ ডিসেম্বর সকালে মাজার প্রাঙ্গণে পুষ্পস্তবক অর্পণ, বিকেল ৩টায় ক্লাব মিলনায়তনে স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিল এবং ১২ ডিসেম্বর রাতে ক্লাব ক্রীড়া চত্বরে ৮ দলীয় ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে রুহুল আমিনের শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে রোববার (১০ ডিসেম্বর) গ্রামের বাড়িতে বীরশ্রেষ্ঠ শহিদ মো. রুহুল আমিন স্মৃতি যাদুঘর এবং উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নানা কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়েছে।

স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য যে সাত জন বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবে ভূষিত হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলা বর্তমানে সোনাইমুড়ী উপজেলার দেওটি ইউনিয়নের বাগপাঁচড়া গ্রামের রুহুল আমিন একজন। বর্তমানে গ্রামটির নাম শহিদ রুহুল আমিন নগর রাখা হয়েছে। ১৯৩৪ সালে বাগপাঁচড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন রুহুল আমিন। মাতা জুলেখা খাতুন ও পিতা মোহাম্মদ আজাহার পাটোয়ারী। তিন ছেলে ও চার মেয়ে নিয়ে ছিল তাদের সংসার।

বিজ্ঞাপন

রুহুল আমিন শিক্ষা জীবন শুরু করেন বাগপাঁচড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তারপর ভর্তি হন আমিশাপাড়া কৃষক উচ্চ বিদ্যালয়ে। ১৯৫১ সালে নৌ-বাহিনীতে নায়েক হিসেবে চাকরি জীবন শুরু করেন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযদ্ধে অংশ নেন। মুক্তিযুদ্ধে ২নং সেক্টরে যুদ্ধরত রুহুল আমিন ছিলেন নৌ-বাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ‘পলাশ’র প্রধান ইঞ্জিনরুমে আর্টিফিসার।

বাঙালীর চূড়ান্ত বিজয়ের মাত্র ছয় দিন পূর্বে ডিসেম্বর মাসের ১০ তারিখে খুলনা শিপইয়ার্ডের কাছে অধিনায়কের জাহাজ ত্যাগের নির্দেশ অমান্য করে রূপসা নদীতে বাংলাদেশের যুদ্ধজাহাজ পলাশকে রক্ষা করতে গিয়ে পাকিস্তান বিমান বাহিনীর নিক্ষিপ্ত গোলায় এ বীর শহিদ হন। মুক্তিযুদ্ধে বীরোচিত ভূমিকা ও মহান আত্মত্যাগের জন্য তাকে স্বীকৃতি স্বরূপ সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবে ভূষিত করা হয়।

বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের দুই ছেলে ও তিন মেয়ে সহ পাঁচ সন্তান। বড় ছেলে বাহার ২৫ বছর আগে মারা যান। তার পরিবারের লোকজন সিলেটে বসবাস করছে বলে জানা যায়। ছোট ছেলে শওকত আলী (৫৭) ও তিন মেয়ে নূরজাহান বেগম (৬৬), রিজিয়া বেগম (৬০), ফাতেমা বেগম (৫৮)। এর মধ্যে তিন মেয়ে সবাই স্বামী-সন্তান নিয়ে চট্টগ্রামে সরকারের বরাদ্ধ দেয়া বাড়ীতে বসবাস করছেন। তারা সবাই শিক্ষিত ও অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল। একমাত্র ছোট ছেলে শওকত ও তার স্ত্রী-মেয়ে নোয়াখালীর গ্রামে বাড়িতে থাকেন।

অপরদিকে বীর বিক্রম মোহাম্মদ মহিবুল্লাহ ১৯৪৪ সালের ৩১ আগস্ট চাঁদপুরের শাহেদপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মো. সুজাত আলী ও মায়ের নাম রফিকাতুন্নেছা। তিনি ১৯৬২ সালে নৌবাহিনীতে যোগদান করেন এবং একই সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী তার গ্রামের বাড়ি পুড়িয়ে দেয়। দেশ স্বাধীনের পর রুহুল আমীনকে বীরশ্রেষ্ঠ ও মহিবুল্লাহকে বীর বিক্রম উপাধিতে ভূষিত করা হয়।

সারাবাংলা/বিএস/আরআইটি/এনএস

টপ নিউজ বীর বিক্রম মহিবুল্লাহ বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর