‘জনদাবি উপেক্ষা করে তফসিল দিলে পরিণতি হবে ভয়ংকর’
১৪ নভেম্বর ২০২৩ ১৮:৫২ | আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২৩ ২০:০২
ঢাকা: জনদাবি উপেক্ষা করে তফসিল ঘোষণা করলে পরিণতি ভয়ংকর হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) বিকেলে অনলাইনে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
রিজভী বলেন, ‘জনগণের দাবি উপেক্ষা করে একতরফা নির্বাচন করার জন্য উন্মত্ত-উদ্ভ্রান্ত হয়ে গেছে সরকার। শেখ হাসিনা তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে তফসিল ঘোষণার পাঁয়তারা করছেন। আমরা কঠোর ভাষায় হুঁশিয়ার করে দিতে চাই, এই তফসিল নাটক বন্ধ করুন। আগে পদত্যাগ করুন। কেয়ারটেকার সরকারের হাতে ক্ষমতা দিন। তারপর তফসিল ঘোষণা করুন। দাবি না মানলে পরিণতি হবে ভয়ংকর।’
‘এই তফসিলে বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না। কেয়ারটেকার সরকার ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। জনগণ ৫৭ সেকেন্ডে নৌকা মার্কায় ৪৩ সিল মারার নির্বাচন বাংলাদেশের মাটিতে কোনো অবস্থাতেই হতে দেবে না’— বলেন রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মিলিত বিবেকবোধের চাঁপ অনুভব করেন না বলেই জ্যান্ত মানুষ ধরে আগুনে নিক্ষেপ করতে হুকুম দিচ্ছেন। গত কয়েকদিন ধরে লাগাতার এই সহিংস হুংকারে দেশের গণতন্ত্রকামী প্রতিটি মানুষ চরম আতংকে পতিত হয়েছে।’
রিজভী বলেন, ‘ইতিহাস এই স্বাক্ষ্য দেয় যে, আগুন সন্ত্রাস, ধ্বংসযজ্ঞ, গুম-খুন-ভাঙচুর, সহিংসতার আঁতুরঘর আওয়ামী লীগ। আওয়ামী দুঃশাসনে পিষ্ট প্রতিবাদী মানুষকে নিশ্চিহ্ন এবং শান্তিপূর্ণ আন্দোলন প্রশ্নবিদ্ধ করতে বরাবরই দলীয় ও রাষ্ট্রশক্তিকে দিয়ে সন্ত্রাস নাশকতার চালিয়ে আসছে। অগ্নিসন্ত্রাস শব্দটিকে ব্যবহার করে বিএনপির ওপর চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। অপরাধ করে তারা, আর চাপিয়ে দেয় বিএনপির লোকজনের ওপর।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার মতো আওয়ামী লীগের নেতা-মন্ত্রী এমপিরা খুন, গুম, চোখ তুলে নেওয়া, হাত-পা কেটে দেওয়া, গুলি করে মারার হুমকিতে বিরোধী রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ছাড়াও সুশীল সমাজের মানুষেরা আতংকে থাকেন। বেগম খালেদা জিয়াকে হত্যা করতে তার গুলশান অফিসের দরজা পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নেতা গেলেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ।’
রিজভী বলেন, ‘অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন করার তাগিদ দেওয়ায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসকে একের পর এক হত্যার হুমকি দিচ্ছে ছাত্রলীগ নেতারা। এমনকি এই হুমকির বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে খারিজ করে দিচ্ছেন আদালত।’
তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামের বাঁশখালীর আওয়ামী লীগ নেতা মুজিবুল হক চৌধুরী পিটার হাসকে পেটানোর হুমকি দিয়েছেন। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী হাসান ইনান পিটার হাসকে জবাই করার হুমকি দিয়েছেন। কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ফরিদুল আলম পিটার হাসকে খুন করার হুমকি দিয়েছেন। কিন্তু এসব হুমকিদাতার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। ফলে বিদেশিরাও আছে চরম আতংকে।’
রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সোশ্যাল হারমনি ও ডেমোক্রোসিতে বিশ্বাসী নয়। তারা প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ঘৃণা প্রচারের সংস্কৃতিতে বিশ্বাসী। এজন্যই কুৎসিত ভাষায় আক্রমণ, কটুবাক্য ব্যবহার, টিপ্পনী কাটাসহ নানামাত্রার জুলুম ও নিষ্ঠুরতা নামিয়ে আনা হয় বিরোধী দলের ওপর। এই জবরদস্তিমূলক দুঃশাসন যে কোনো মুহূর্তে উলটে যেতে পারে, সেটি আওয়ামী লীগ কখনও চিন্তা করে না।’
সারাবাংলা/এজেড/এনইউ