গভর্নরদের সূচকে ‘ডি গ্রেড’ পেয়েছেন আব্দুর রউফ তালুকদার
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৬:২৭ | আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৮:০৪
ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কভিত্তিক গ্লোবাল ফিন্যান্স ম্যাগাজিনের র্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরদের মূল্যায়ন করা হয়েছে। এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার গভর্নর হিসেবে ‘ডি গ্রেড’ পেয়েছেন। তবে একই র্যাংকিংয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার গভর্নর শক্তিকান্ত দাস পেয়েছেন ‘এ প্লাস’।
এছাড়াও গভর্নর হিসেবে ‘এ প্লাস’ পেয়েছেন আরও দুজন। তারা হলেন- সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর টমাস জর্ডান ও ভিয়েতনামের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর নগুয়েন থি হোং। দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর মধ্যে শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর নন্দলাল ভীরাসিংহে পেয়েছেন ‘এ মাইনাস’ ও পাকিস্তানের কেন্দ্রিয় ব্যাংকের গভর্নর জামিল আহমেদ পেয়েছেন ‘সি মাইনাস’।
গ্লোবাল ফিন্যান্স ম্যাগাজিনের র্যাংকিংয়ে প্রতিবেদনটিতে বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরদের মূল্যায়ন করা হয় পাঁচটি শ্রেণিতে- এ, বি, সি, ডি ও এফ। এরমধ্যে পারফরম্যান্স মূল্যায়নে কম-বেশির ভিত্তিতে এ, বি, সি ও ডি শ্রেণিকে আবার তিনটি উপশ্রেণিতে ভাগ করা হয়। যেমন এ শ্রেণির গভর্নরদের (এ প্লাস), (এ) ও (এ মাইনাস) উপশ্রেণিতে মূল্যায়ন করা হয়েছে। আর কোনো দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক অকার্যকর ও চূড়ান্ত পর্যায়ে ব্যর্থ হিসেবে বিবেচিত হলে সেটির গভর্নরকে র্যাংকিংয়ে আনা হয়েছে ‘এফ’ গ্রেডে।
এতে দেখা যায়, এশিয়ায় গভর্নরদের মধ্যে সেরাদের সেরা বা ‘এ প্লাস’ গ্রেড পাওয়া দুই গভর্নর হলেন প্রতিবেশী দেশ ভারতের রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (আরবিআই) গভর্নর শক্তিকান্ত দাশ ও ভিয়েতনামের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর নগুয়েন থি হং। দক্ষিণ এশিয়ায় শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর নন্দলাল বীরাসিংহে ‘এ মাইনাস’ গ্রেড পেয়েছেন। আর নেপালের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর মহাপ্রসাদ অধিকারী পেয়েছেন ‘বি মাইনাস’ গ্রেড। মূল্যস্ফীতিসহ ভয়াবহ সংকটে থাকা পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর জামিল আহমদও পেয়েছেন ‘সি মাইনাস’।
জানা গেছে, ১৯৯৪ সাল থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গভর্নরদের মূল্যায়ন করে আসছে গ্লোবাল ফিন্যান্স ম্যাগাজিন। সাময়িকীটির বার্ষিক প্রকাশনা হিসেবে নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হচ্ছে ‘সেন্ট্রাল ব্যাংকার রিপোর্ট কার্ড’। ১০১টি গুরুত্বপূর্ণ দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরদের মূল্যায়নের ভিত্তিতে ২০২৩ সালের সবশেষ এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
বাংলাদেশের অর্থনীতির কাঠামোগত দুর্বলতা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সরকারের নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রিয় ব্যাংকের জন্য প্রতিবন্ধকতা হিসেবে দেখছে গ্লোবাল ফিন্যান্স ম্যাগাজিন। বহিস্থ খাতের অনিশ্চয়তা ও চাপের মুখে অর্থনীতি অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। ২০২২ সালের বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির ধাক্কায় যেভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতির বহিস্থ খাতে যে নাজুক পরিস্থিতি তৈরি হয়, সেটা উল্লেখ করে দেশের অর্থনীতির অনিশ্চয়তার চিত্র তুলে ধরেছে তারা।
বাংলাদেশ প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, কোভিড-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। মূল্যস্ফীতির হার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৫ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কিছুটা বেশি হলেও মুদ্রার বিনিময় হার স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে টাকার ৯ দশমিক ৫ শতাংশ অবমূল্যায়ন হয়। দেশের বাজারে ডলার–সংকটে হিমশিম খান আমদানিকারকেরা। রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানি ও খাদ্যমূল্য অনেকটা বেড়ে মূল্যস্ফীতি লাগামহীন হয়ে পড়ে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমতে থাকায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দ্বারস্থ হয় বাংলাদেশ।
সারাবাংলা/জিএস/এনইউ