বিএনপি পুনর্গঠনে চূড়ান্ত আন্দোলনে নামছেন নাসিম
২৪ আগস্ট ২০২৩ ২১:৫০
ঢাকা: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) পুনর্গঠনে চূড়ান্ত আন্দোলনে নামছেন কামরুল হাসান নাসিম। বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ‘আসল বিএনপি’র উদ্যোক্তা হিসেবে খ্যাত নাসিম বলেছেন, ‘আত্মশুদ্ধি, নতুবা বিলুপ্তি- যেকোনো একটি পথ বিএনপিকে বেছে নিতে হবে।’
২০১৫ সালের ৯ জানুয়ারি বিএনপি পুনর্গঠনের ডাক দিয়ে সাড়া ফেলেন কামরুল হাসান নাসিম। দেশের অন্যতম বড় দল বিএনপির ‘পাঁচটি অসুখ’ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি দলটি পুনর্গঠনের ঘোষণা দেন।
নাসিমের অভিযোগ- বিএনপি দলটি জাতীয়তাবাদী নয়, ‘জামায়াতেবাদী’ দল হয়ে পড়েছে; নাশকতাকে রাজনীতির হাতিয়ার হিসেবে সঙ্গী করেছে; বিদেশি শক্তির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে; জনস্বার্থ সংরক্ষণের রাজনীতি দলটি করছে না’ এবং দুই শীর্ষ নেতৃত্ব খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান দল পরিচালনায় ব্যর্থ এবং প্রাসঙ্গিক বাস্তবতায় তারা দলের অবৈধ নেতৃত্ব।
এ অভিযোগগুলোকেই বিএনপির ‘গুরুতর পাঁচটি অসুখ’ বলে চিহ্নিত করে এর সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করছেন নাসিম। বিবৃতিতে তিনি বলেন, অসুখগুলো সারিয়ে বিএনপিকে মূলধারার গণতন্ত্রমনা পরিচ্ছন্ন দল করতে বিশ্বাসযোগ্য কাউন্সিলের বিকল্প নেই।
নাসিম বলেন, নয়া পল্টন কার্যালয়ের সামনে প্রতীকী উচ্চ আদালত বসিয়ে কাউন্সিল করতে হবে। পাঁচটি অসুখ সারাতে হবে। দল কোনো দণ্ডিত ব্যক্তি দ্বারা পরিচালিত হতে পারে না। আবার দলের মধ্যেই যখন কোনো গণতন্ত্র নেই, রাষ্ট্রের কাছে কেন তাহলে গণতন্ত্র চাওয়া হচ্ছে? এই বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে দানব হয়ে উঠবে। কাজেই পুনর্গঠন করেই বিএনপির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে হবে। পথ এখন দুটি- আত্মশুদ্ধি নতুবা বিলুপ্তি।
বিএনপির এ সংস্কারের লক্ষ্যে আগামী ৬ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিএনপি অফিসের সামনে প্রতীকী উচ্চ আদালত বসানোর তারিখ ঘোষণা করবেন বলে বিবৃতিতে জানিয়েছেন নাসিম। তিনি বলেন, দীর্ঘ আট বছর লেগে থাকার পর বিএনপির অগণিত নেতাকর্মীসহ বিএনপি পুনর্গঠনের চূড়ান্ত উদ্যোগে দেশবাসীর সহযোগিতা চাই। সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং দেশের সব নিবন্ধিত সংগঠনকেও পাশে চাই।
এ আন্দোলনের শুরুর বছর অর্থাৎ ২০১৫ সালে নাসিম প্রায় ৩০টির মতো কর্মসূচি পালন করেন। ওই বছরের ২৬ নভেম্বর তিনি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘জাতীয়তাবাদী জনতার নিম্ন আদালত’ বসাতে সক্ষম হন। সেই প্রতীকী আদালত থেকে দুটি রায় পান- দলের গঠনতন্ত্র স্থগিত করা হলো; এবং জাতীয়তবাদী জনতার উচ্চ আদালত দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বসবে।
সংস্কার প্রক্রিয়াকে চূড়ান্ত ফলফলের দিকে নিয়ে যেতে নাসিম ও তার অনুসারীরা ২০১৬ সালের ২ জানুয়ারি, ১৭ জানুয়ারি, ১৭ মে ও ৫ সেপ্টেম্বর মোট চারবার দলীয় বিপ্লবের মহড়ার আদলে বিএনপির নয়া পল্টন কার্যালয় অভিমুখে যাত্রা করেন এবং প্রতিবারই বাধার মুখে পড়েন। ২০২২ সালের শেষ ভাগেও নাসিমের নেতৃত্বে একটি মিছিল বিএনপি কার্যালয় অভিমুখে গিয়েছিল, যেটিও বিএনপির নেতাকর্মীরা প্রতিহত করেন।
লেখক, গবেষক, কবি, আবৃত্তিকার, গায়ক ও নির্মাতার মতো বিভিন্ন পরিচয়ে পরিচিত কামরুল হাসান নাসিম। বিবৃতিতে তিনি বলেন, এসব পরিচয়ে নিজের দার্শনিক অভিজ্ঞান নিয়ে মানুষের সামনে হাজির হলেও রাজনৈতিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকেই মৃত্যুঝুঁকি জেনেও এ দলীয় বিপ্লবের পথে তিনি হাঁটছেন।
সারাবাংলা/ইএইচটি/টিআর