Monday 06 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে সরকারের বিদায় সময়ের ব্যাপার মাত্র’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২০ আগস্ট ২০২৩ ১৮:১৪ | আপডেট: ২০ আগস্ট ২০২৩ ১৯:২৬

ফাইল ছবি: মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

ঢাকা: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে দেশের নিরীহ গণতন্ত্রকামী মানুষের ওপর গুলি, গুম, খুনসহ সকল প্রকার নির্যাতন চালাচ্ছে। এই থেকেই বোঝা যায়, সরকার বিরোধী মতের আন্দোলনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে সরকারের বিদায় এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।’

রোববার (২০ আগস্ট) বিকেলে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্ যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ভোট ও মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিএনপিসহ গণতন্ত্রকামী সকল রাজনৈতিক দল, নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরক্ষোভাবে সরকারের হাত থেকে দেশ রক্ষার জন্য শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। মানুষ যখন দিন দিন ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথের মিছিলে শরিক হচ্ছে ঠিক সেই সময় সরকার তার পুরনো কায়দায় গুম, গ্রেফতার, নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘২৮ জুলাই থেকে প্রতিদিনই গ্রেফতার ও নির্যাতনের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, সরকার ততই বিরোধী পক্ষকে নির্বাচনী মাঠ থেকে বিতাড়িত করার সকল অপকৌশল গ্রহণ করে চলেছে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার দাবিতে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হবিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে গুলি, টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে বিএনপির শত শত নেতা-কর্মীকে আহত করেছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ঢাকায় দেশব্যাপী ঘোষিত শান্তিপূর্ণ কর্মসূছি শেষে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয় সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পুলিশ ঘিরে রেখেছে। দলীয় কার্যালয় থেকে বের হবার পর ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনসহ বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতার করেছে এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়কে ঘিরে এক ভয়ংকর পরিবেশ সৃষ্টি করেছে, যা কোনো স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক আচরণ হতে পারে না।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘১৮ আগস্ট জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মমিনুল ইসলাম জিসানকে আজিমপুর বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায়। এ খবর শোনার পর কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক শাহাদত হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মো. হাসানুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল রিয়াদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এফ রহমান হল ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দীন মোহাম্মদ বাবর, শিক্ষানবিশ আইনজীবী আরিফ বিল্লাহ জিসানের বাসার সামনে উপস্থিত হলে সাদা পোশাকধারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকেরা তাদের তুলে নিয়ে যায়।’

‘আজ তাদেরকে পুলিশের গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে অস্ত্র হাতে দিয়ে নাটক সাজিয়ে আবারও একই পথে অগ্রসর হচ্ছে’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

কেন্দ্র ঘোষিত দেশব্যাপী পদযাত্রার কর্মসূচি চলাকালে গতকাল হবিগঞ্জে সরকারি বাহিনী তাণ্ডব চালিয়েছে, পুলিশ নেতা-কর্মীদের ওপর নির্মমভাবে বৃষ্টির মত গুলি চালিয়েছে। এ সময় পৌর বিএনপির সভাপতি তাজুল ইসলাম চৌধুরী ফরিদ, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আউয়াল, জেলা যুবদল নেতা- অলিউর রহমান, আমিন শাহ, সদর থানা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আজিজুর রহমান কাজল, হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শাহ রাজিব আহম্মেদ রিংগন, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মাহবুব, ছাত্রদল নেতা শেখ সাজিদুল হকসহ প্রায় দুই শতাধিক নেতা-কর্মী পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হয়। আহত নেতা-কর্মীদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালেও যেতে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন বিএনপির মহাসচিব।

তিনি বলেন, ‘জেলা বিএনপির ১ম যুগ্ম আাহ্বায়ক ও সাবেক পৌর মেয়র জি কে গৌছ এর বাসায় আহত নেতা-কর্মীরা আশ্রয় নিলে পুলিশ তার বাসভবনে হামলা চালিয়ে বিএনপির প্রায় ২০/২৫জন নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।’

এছাড়াও গতকাল নারায়ণগঞ্জ জেলায় পদযাত্রা চলাকালে পুলিশ বিনা উসকানিতে নির্বিচারে গুলি বর্ষণ করে। পুলিশ ও ছাত্রলীগের হেলমেট বাহিনী যৌথভাবে এই নারকীয় তাণ্ডব চালায়। পুলিশি হামলায় জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুল মান্নানসহ অসংখ্য নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন— অভিযোগ মির্জা ফখরুলের।

তিনি বলেন, ‘নেত্রকোনা জেলা বিএনপির শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা কর্মসূচিতে পুলিশ হামলা চালায়। এসময় জেলা ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. রাকিব মিয়া, ছাত্রদল নেতা মো. রফিকুল ইসলাম রফিক, আমতলা ইউনিয়ন যুবদল নেতা বজলুর রাশেদ, ইউনিয়ন ছাত্রদল নেতা রায়হান সোবাহান, ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মো. ফরিদ, বিএনপি নেতা আল-আমিন, ৯নং ওয়ার্ড শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক খাইরুল ইসলাম হীরণ ও ৭নং ওয়ার্ড শ্রমিকদলের সভাপতি মো. শামসু মিয়া গুরুতর আহত হয়।’

সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সকল অপকৌশল বন্ধ করে, জনগণের মনোভাব অনুধাবন করে অবিলম্বে পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। অন্যথায় জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে মানুষের মৌলিক গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনা হবে।’

সারাবাংলা/এজেড/এনইউ

টপ নিউজ ফখরুল বিদায় সরকার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর