আইডিয়ালের সেই ছাত্রীকে সেইফ হোমে পাঠানোর নির্দেশ
১৭ আগস্ট ২০২৩ ১৮:৩৭ | আপডেট: ১৭ আগস্ট ২০২৩ ২০:১০
ঢাকা: ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির দাতা সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। সেইসঙ্গে খন্দকার মুশতাক আহমেদকে বিয়ে করা আইডিয়ালের ওই ছাত্রীর বয়স জানতে সেইফ হোমে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বয়স না জানা পর্যন্ত ওই ছাত্রী সমাজসেবা অধিদফতরের অধীনে সেইফ হোমে (নিরাপদ হেফাজতে) থাকবে।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) বিচারপতি শেখ জাকির হোসেন ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদেশে আদালত বলেছেন, আইডিয়ালের ছাত্রীর বয়স নিয়ে আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষ পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন। তাই ওই ছাত্রীর বয়স জানা জরুরি। এর আগে, হাইকোর্ট আসামি খন্দকার মুশতাক আহমেদ, আইডিয়ালের ছাত্রী ও তার বাবার বক্তব্য শোনেন।
আদালতে আসামির পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা। রাষ্ট্রপক্ষে জামিনের বিরোধিতা করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল হাশেম ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজুর রহমান লিখন।
এর আগে, গত ১৬ আগস্ট কলেজছাত্রীকে প্রলোভন ও ধর্ষণের অভিযোগে আইডিয়ালের গভর্নিং বডির দাতা সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদের জামিন আবেদন শুনতে অপারগতা প্রকাশ করেন হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চ।
ওই সময় বিচারপতি আবু তাহের সাইফুর রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ অপারগতা প্রকাশ করে জামিন আবেদনটি ফেরত দেন।
এর আগে, কলেজছাত্রীকে প্রলোভন ও জোরপূর্বক ধর্ষণের অভিযোগে গত ১ আগস্ট রাজধানীর মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির দাতা সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। ভুক্তভোগী কলেজছাত্রীর বাবা মো. সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এর বিচারক বেগম মাফরোজা পারভীনের আদালতে এ মামলার আবেদন করা হয়। মামলার অন্য আসামি হলেন- ওই কলেজের অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশেদী।
পরে আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গণ্য করে নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহণের আদেশ দেন।
মামলার এজহারে বাদী উল্লেখ করেন, তার মেয়ে (ভুক্তভোগী) মতিঝিল আইডিয়ালের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। আসামি মুশতাক বিভিন্ন অজুহাতে কলেজে আসতেন এবং ভুক্তভোগীকে ক্লাস থেকে অধ্যক্ষের কক্ষে ডেকে আনতেন। খোঁজ-খবর নেওয়ার নামে আসামি ভুক্তভোগীকে বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে প্রলুব্ধ করতেন। কিছুদিন পর আসামি মুশতাক ভুক্তভোগীকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কু-প্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হওয়ায় ভুক্তভোগীকে তুলে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক বিয়ে এবং তাকে ও তার পরিবারকে ঢাকা ছাড়া করবে বলে হুমকি দেন।
ভুক্তভোগী এরকম আচরণের বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষকে (২ নম্বর আসামি) ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন। তিনি (অধ্যক্ষ) ব্যবস্থা করতেছি বলে আসামি মুশতাককে তার রুমে নিয়ে আসেন এবং ভুক্তভোগীকেও ক্লাস থেকে নিয়ে এসে রুমের দরজা বন্ধ করে দিয়ে আসামিকে সময় ও সঙ্গ দিতে বলেন।
এ বিষয়ে বাদী ২ নম্বর আসামির কাছে প্রতিকার চাইতে গেলেও কোনো সহযোগিতা করেননি বরং আসামি মুশতাককে অনৈতিক সাহায্য করে আসতে থাকেন। বাদী উপায় না পেয়ে গত ১২ জুন ভুক্তভোগীকে ঠাকুরগাঁওয়ের বাড়িতে নিয়ে গেলে আসামি মুশতাক তার লোকজন দিয়ে ভিকটিমকে অপহরণ করে নিয়ে যান। এরপর বাদী জানতে পারেন আসামি ভিকটিমকে একেক দিন একেক স্থানে রেখে অনৈতিক কাজে বাধ্য করেছে এবং যৌন নিপীড়ন করছে।
সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম