Monday 15 Dec 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাসিন্দাদের সরাতে ২৬ ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে একযোগে অভিযান

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৩ মে ২০২৩ ১৫:৩১ | আপডেট: ১৩ মে ২০২৩ ১৫:৫২

চট্টগ্রাম ব্যুরো: ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে চট্টগ্রামে অতি ভারি বর্ষণে পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। ফলে চট্টগ্রাম নগরীর ২৬ ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে অভিযান শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। এসব পাহাড়ে ছয় হাজারেরও বেশি পরিবার বসবাস করে বলে সংস্থাটি তথ্য দিয়েছে।

শুক্রবার (১২ মে) সন্ধ্যার থেকে পাহাড়গুলোতে জেলা প্রশাসনের টিম মাইকিং শুরু করে। শনিবার সকাল থেকেও মাইকিং অব্যাহত আছে। বেশি ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারী কিছু পরিবারকে সরে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) মো. তৌহিদুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘অনেক পরিবার নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে চলে যাচ্ছে। তবে বৃষ্টি শুরু না হওয়ায় এখনও লোকজনের সরতে আগ্রহ কম। যেহেতু, মহাবিপদ সংকেত জারি হয়েছে, আমরা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যেতে বলছি। তবে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার আগেই আমরা সবাইকে সরিয়ে নেব। কেউ পাহাড়ে থাকতে পারবে না।’

বিজ্ঞাপন

নগরীর আকবর শাহ থানার ফয়’স লেক সংলগ্ন তিনটি ঝিল, শান্তিনগর, লালখান বাজারের মতিঝর্ণা, বাটালি হিল, পোড়াকলোনি পাহাড়, আমিন জুট মিল পাহাড়, টাংকির পাহাড়, ভেড়া ফকিরের পাহাড়, বার্মা কলোনির পাহাড়ে শনিবার সকাল থেকে মাইকিং করতে দেখা গেছে। সেখান থেকে কিছু কিছু পরিবারকে ভ্যানগাড়িতে করে রান্নার সরঞ্জাম, বিছানা, আসবাবপত্র নিয়ে সরে যেতে দেখা গেছে।

জেলা প্রশাসনের সহকারি কমিশনারদের (ভূমি) নেতৃত্বে স্বেচ্ছাসেবক টিম, সিপিপি স্বেচ্ছাসেবকরা পুরো কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রাম মহানগরীতে ঝুঁকিপূর্ণ ২৬টি পাহাড়ে অবৈধভাবে বসবাসকারী পরিবারের সংখ্যা ৬ হাজার ৫৫৮। পাহাড়গুলোর মধ্যে সরকারি ১৬টি এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন ১০টি। এর মধ্যে রেলওয়ে, চট্টগ্রাম ওয়াসা, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, গণপূর্ত বিভাগ, বন বিভাগ, সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষসহ বিভিন্ন সংস্থা পাহাড়ের মালিকানায় আছে।

২০১৯ সালে সরকারিভাবে গঠিত পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটি চট্টগ্রাম নগরীতে ১৭টি পাহাড়ে ৮৩৫টি পরিবারকে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসের জন্য চিহ্নিত করেছিল। প্রতিবছর বর্ষায় অবৈধ বসতি উচ্ছেদে পাহাড়ে অভিযান চালানো হলেও ক্রমশ অবৈধ বাসিন্দা বাড়ছে।

২০০৭ সালে পাহাড় ধসে চট্টগ্রামে বড় ধরনের মর্মান্তিক বিপর্যয় ঘটে। ওই বছরের ১১ জুন নগরীর কুসুমবাগ, কাইচ্যাঘোনা, সেনানিবাসের লেডিস ক্লাব সংলগ্ন লেবুবাগান, বায়েজিদ বোস্তামী, লালখান বাজারের মতিঝর্ণা পাহাপড়সহ সাতটি স্থানে পাহাড় ধসে মাটিচাপা পড়ে মারা যায় শিশু-নারী ও বৃদ্ধসহ সব বয়সের ১২৭ জন।

পাহাড় ধসে ২০০৮ সালে মারা যায় ১২ জন। ২০১১ সালে একই পরিবারের পাঁচজনসহ ১৭ জন, ২০১২ সালে মারা যায় ২৩ জন। এভাবে প্রতিবছরই পাহাড় ধসে মাটি চাপা পড়ে মৃত্যু হয়।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় মোখা’র তাণ্ডব থেকে বাঁচাতে সাগরতীর সংলগ্ন বিভিন্ন জেলেপাড়া থেকে লোকজনকে সরে যেতে সহায়তা করছে জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশন। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী দুপুরে নগরীর দক্ষিণ পতেঙ্গা ওয়ার্ডে গিয়ে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার কার্যক্রম তত্ত্বাবধান শুরু করেন।

এনডিসি তৌহিদুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘যারা জাল, আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম নিয়ে ঘর ছাড়ছেন, তাদের আমরা ভ্যানগাড়ি ও স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে সহায়তা দিচ্ছি। কেউ কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছেন, আবার কেউ কেউ স্বজন-পরিচিতজনদের বাড়িতে যাচ্ছেন।’

সারাবাংলা/আরডি/ইআ
বিজ্ঞাপন

ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় মামলা
১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৮:২৯

আরো