রাবিতে হলের বারান্দা থেকে পড়ে ছাত্রের মৃত্যু, মেডিকেলে ভাংচুর
১৯ অক্টোবর ২০২২ ২২:৪১ | আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২২ ২২:৫৯
রাজশাহী: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হলের তৃতীয় তলার বারান্দা থেকে পড়ে এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। নিহত শিক্ষার্থীর নাম শাহরিয়ার (২৬)। তিনি রাবির মার্কেটিং বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের ছাত্র।
বুধবার রাত (১৯ অক্টোবর) ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক তারেক নূর।
নিহত শাহরিয়ার বাড়ি দিনাজপুরে বিরল উপজেলায়। তিনি ওই হলের ৩৫৪ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাত ৮টার দিকে তৃতীয় তলার বারান্দা থেকে টিউবওয়েলের পাকার ওপর পড়ে মাথায় গুরুতর আঘাত পান শাহরিয়ার। বিকট শব্দ পাওয়ার পর কয়েকজন দেখতে পেলে তার কাছে ছুটে যান। ততক্ষণে তার মাথা ফেটে প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। পরে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার কিছুক্ষণ পরেই কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
হবিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের বরাত দিয়ে ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক তারেক নূর বলেন, ‘ছেলেটি খুবই হাস্যজ্জ্বল ছিল। তবে তার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেখে মনে হচ্ছে, সে কোনো কারণে বিষণ্ন ছিল। সে কারণে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে বলে অনেকে ধারণা করা হচ্ছে।’
এদিকে, চিকিৎসায় গাফলতির অভিযোগ এনে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভাংচুর চালিয়েছে রাবি শিক্ষার্থীরা। সময় মতো ডাক্তার না আসায় মেডিকেলে ভাংচুর করে শাহরিয়ারের সহপাঠীরা। তাদের অভিযোগ, রাতে আহত শাহরিয়ারকে নিয়ে যাওয়ার পৌনে এক ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও ডাক্তার আসেনি। কাজ হচ্ছে বলে সময়ক্ষেপণ করেছে।
শিক্ষার্থীরা বলছে, আহত অবস্থায় শাহরিয়ারকে নিয়ে আসা হলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক অনেক দেরিতে আসে। তাদের বার বার তাগাদা দিলেও কেউ আসেনি। তাই বাধ্য হয়ে তাদের সঙ্গে প্রথমে কথাকাটাকাটি এরপর হাতাহাতি শুরু হয়। হাসপাতালের দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা এক পর্যায়ে আমাদের ওপর চড়াও হন।
ঘটনাস্থলে থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, শাহরিয়ার ভাইকে সোয়া আটটার দিকে মেডিকেল নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু রাত সোয়া নয়টায় পর্যন্ত তার কোনো চিকিৎসা শুরু হয়নি। কোনো ডাক্তার নাই। একজন ইন্টার্নি ডাক্তার আছেন। এর প্রতিবাদ করায় আনসার সদস্যরা আমাদের ওপর হামলা চালায়।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার রফিকুল আলম জানান, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভাংচুরের ঘটনা শুনে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। মেডিকেল গুরুত্বপূর্ণ এলাকা, তাই নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার শামীম ইয়াজদানিকে বেশ কয়েকবার কল দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তাই তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সারাবাংলা/পিটিএম