রাঙ্গাকে অব্যাহতি: দুই পক্ষের সংঘর্ষে থমথমে রংপুর
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১২:০৫ | আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১২:০৯
রংপুর: রংপুর-১ (গঙ্গাচড়া) আসনের সংসদ সদস্য মসিউর রহমান রাঙ্গাকে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্যসহ সব পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে জি এম কাদের ও রাঙ্গার সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি কুশপুত্তলিকা দাহ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
উভয়পক্ষের ইটপাটকেলের আঘাতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। গতকাল বুধবার রাত ১১টার দিকে নগরীর প্রেসক্লাব এলাকা থেকে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হলেও শহরের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। মধ্যরাত পর্যন্ত ২ পক্ষের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে থাকায় শহরজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এসব ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালেও এলাকা থমথমে রয়েছে।
এর আগে, বুধবার পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য পদসহ দলীয় সব পদ থেকে মসিউর রহমান রাঙ্গাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এর প্রেক্ষিতে রাঙ্গা রংপুরে জি এম কাদেরকে রাজনীতি করতে দেবেন না বলে ঘোষণা দেন। এই খবর রংপুরে ছড়িয়ে পড়লে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়।
এদিকে পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়ে বুধবার রাতেই রংপুর জেলা জাতীয় পার্টি কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য, রংপুর মহানগর সভাপতি ও রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা ও সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসিরসহ তাদের কর্মী-সমর্থকরা। মসিউর রহমান রাঙ্গা রংপুর জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি। তার সমর্থকরা যেকোনো সময় জেলা জাতীয় পার্টি কার্যালয় দখল করতে পারে এমনি আশঙ্কা অবস্থান নিয়েছেন তারা।
বিক্ষোভের বিষয়ে জাতীয় পার্টির সহ-সভাপতি ও মোটর মালিক সমিতির নেতা আব্দুল মান্নান বলেন, ‘মসিউর রহমান রাঙ্গাকে দলে ফিরিয়ে নিতে হবে। তার প্রতি অবিচার করা হয়েছে। তার অব্যাহতি আমরা মানছি না। এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে রাঙ্গাকে দলে বহাল করতে হবে। তা না হলে কঠোর আন্দোলন হবে।’
অন্যদিকে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য, রংপুর সিটি করপোরেশন মেয়র ও মহানগরের সভাপতি মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, ‘দলের সংসদীয় নেতা হিসেবে স্পিকারের কাছে জি এম কাদেরের নাম জমা দেওয়ার পর রাঙ্গা বলেছিলেন, তার কাছ থেকে নাকি জোর করে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। মসিউর রহমান রাঙ্গা বাচ্চা ছেলে নন, দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করেও তিনি এসব কথা বলে দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করেছেন। সে কারণে তাকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তিনি যদি দলের কাছে ক্ষমা চান তাহলে আবারও তাকে দলে ফিরিয়ে নেওয়ার সুযোগ আছে।’
মেয়র আরও বলেন, ‘দলের ভেতরে থেকে দলের বিরুদ্ধে কথা বলা যাবে না। দলের স্বার্থে চেয়ারম্যান যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটাতে আমরা একমত। তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সময় হলে আবার তাকে দলে ফিরে আসার সুযোগ দেওয়া হতে পারে।’ পার্টির স্বার্থে রাঙ্গাকে উত্তেজিত না হয়ে শান্ত থাকার আহ্বান জানান মেয়র।
এদিকে গঙ্গাচড়ায় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের কুশপুত্তলিকা দাহ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে রাঙ্গাপন্থীরা। বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে গঙ্গাচড়া চেয়ারম্যান মার্কেট থেকে রাঙ্গাপন্থী নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে। পরে গঙ্গাচড়া জিরো পয়েন্টে এসে জিএম কাদেরের কুশপুত্তলিকা দাহ করে।
অন্যদিকে রাঙ্গাকে সব পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ায় গঙ্গাচড়ার আব্দুস সোবহান মার্কেটের সামনে মিষ্টি বিতরণ করেছে পার্টির প্রতিষ্ঠাতা হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদের ভাতিজা শাহরিয়ার আসিফের সমর্থক ও জাতীয় পার্টির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
সারাবাংলা/এমও