Monday 06 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ছাত্রলীগের ৮ কর্মী মিলে জাবির গেস্ট রুমে সংবাদকর্মীকে নির্যাতন

জাবি করেসপন্ডেন্ট
৩ আগস্ট ২০২২ ১৭:২৫ | আপডেট: ৩ আগস্ট ২০২২ ১৯:২১

ঢাকা: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধে এক সংবাদকর্মী শিক্ষার্থীকে ডেকে নিয়ে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগ এ ঘটনার সত্যতা যাচাই করে নিজেরাই নির্যাতনকারীদের নাম জানিয়েছে। ঘটনায় জড়িত ৮ ছাত্রলীগ কর্মীকে তাৎক্ষণিক সংগঠন থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২ আগস্ট) রাত ২ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলে এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতিত ওই সংবাদকর্মী দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (৪৯ ব্যাচ) শিক্ষার্থী।

বিজ্ঞাপন

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নির্যাতনের শিকার ওই শিক্ষার্থীকে গেস্ট রুমে ডেকে নিয়ে নিজের ও বন্ধুদের পরিচয় দিতে বলা হয়। এরপর টানা ৫ মিনিট তাকে রুমের সিলিং ধরে ঝুলে থাকতে বলা হয়। বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হওয়ার আগেই ওই শিক্ষার্থী সিলিং থেকে নেমে গেলে ক্ষুব্ধ ছাত্রলীগ কর্মীরা তাকে টেবিলের নিচে মাথা ঢুকিয়ে দিতে জোরাজুরি করেন। একপর্যায়ে তার মোবাইল ফোন তল্লাশি করতে চাইলে ভুক্তভোগী অস্বীকৃতি জানান। এতে অভিযুক্তরা তার শার্টের কলার ধরে টানাহেঁচড়া এবং এলোপাথাড়ি মারধর করেন।

এ ঘটনা জানাজানি হলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ ও সাংবাদিক নেতারা। উভয়পক্ষের বক্তব্য শোনার পর শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আক্তারুজামান সোহেল ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন ঘটনা পর্যালোচনা শেষে অভিযুক্তদের শাখা ছাত্রলীগ কর্মী হিসেবে স্বীকার করে ৮ জনের নাম ঘোষণা করেন। পরে অভিযুক্তদের সংগঠন থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।

বিজ্ঞাপন

নির্যাতনকারীরা হলেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আসাদ হক ও একই বিভাগের আরিফ জামান সেজান, ৪৭তম ব্যাচের নৃবিজ্ঞান বিভাগের রায়হান বিন হাবিব, আইন ও বিচার বিভাগের মাসুম বিল্লাহ্, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের মুনতাসির আহমেদ তাহরীম, অর্থনীতি বিভাগের জিয়াদ মির্জা, দর্শন বিভাগের মীর হাসিবুল হাসান রেশাদ এবং ৪৮তম ব্যাচের রসায়ন বিভাগের জাহিদ হাসান।

শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে অভিযুক্ত আসাদ হক, আরিফ জামান সেজান এবং জাহিদ হাসান ঘটনাস্থলে তাদের উপস্থিতির ঘটনা বর্ণনা করেন। তারা মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার কথা স্বীকার করেন। কিন্তু সিলিংয়ে ঝুলানো এবং মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেন।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেল বলেন, ‘আজ থেকে এই কর্মীরা ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকুক তা আমরা চাই না। সাংগঠনিক কাজকর্ম থেকে তারা অবাঞ্ছিত বলে গণ্য হবেন। তারা এই কমিটি থাকা অবস্থায় ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে কোনোভাবে যুক্ত থাকবে না। আগামী কমিটিতেও তাদের থাকার কোনো সুযোগ নেই। ছাত্রলীগ পরিচয়ে কেউ এরকম ন্যাক্কারজনক কাজ করলে আমরা সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেব।’

শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা আমাদের জায়গায় থেকে সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের মতো ব্যাবস্থা গ্রহণ করবে।’

ওই ঘটনায় আজ বুধবার দুপুরে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হেল কাফী বলেন, ‘সকালে ঘটনা জেনেছি। ঘটনা বিশ্লেষণ করে দ্রুত দোষীদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেব।’

এদিকে সংবাদকর্মীকে নির্যাতনের ঘটনায় দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (জাবিসাস)।

সারাবাংলা/একে

জাবি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় টপ নিউজ সাংবাদিক নির্যাতন

বিজ্ঞাপন

চলে গেলেন প্রবীর মিত্র
৫ জানুয়ারি ২০২৫ ২৩:৪২

আরো

সম্পর্কিত খবর