পাচার করা অর্থ মানেই ঘুষ-দুর্নীতির টাকা না: অর্থমন্ত্রী
১০ জুন ২০২২ ১৯:৩১ | আপডেট: ১১ জুন ২০২২ ১০:০৪
ঢাকা: ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বিদেশে পাচার করা টাকা কর দিয়ে দেশে আনার বিধান প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এই প্রস্তাবনাকে অনৈতিক ও অগ্রহণযোগ্য আখ্যা দিয়ে চলছে ব্যাপক সমালোচনা। তবে অর্থমন্ত্রী বলছেন, বিদেশে পাচার হয়ে যাওয়া মানেই সেই টাকা ঘুষ বা দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জিত নয়।
তিনি বলেন, দেশে থেকে বিভিন্ন কারণে টাকা বিদেশে চলে যায়। চলে যাওয়া টাকা মানেই ঘুষ আর দুর্নীতির টাকা না। সিস্টেমের কারণেও অনেক সময় অনেক টাকা অপ্রদর্শিত হয়ে যায়। ফলে পাচার হওয়া সব টাকাই কালো টাকা না।
শুক্রবার (১০ জুন) বিকেল সোয়া ৩টার দিকে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলন তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন-
- বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী
- ‘৬৫ টাকার চাল ৮২ টাকা, তবু অনেক ক্রেতা’
- বাজেটে ধনী ও পাচারকারীদের জয় হয়েছে: সিপিডি
- মানুষ কষ্টে থাকলেও খাদ্যের জন্য হাহাকার নেই: কৃষিমন্ত্রী
- পাচার হওয়া টাকা দেশে ফিরে না এলে কী লাভ— প্রশ্ন অর্থমন্ত্রীর
- কর দিলে বৈধ হবে পাচার করা টাকা, কেউ প্রশ্ন তুলতে পারবেন না
- অর্থ ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ পাচারকারীদের উৎসাহিত করবে: সিপিডি
এর আগে, বৃহস্পতিবার (৯ জুন) সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বলা হয়, বিদেশে অবস্থিত যেকোনো সম্পদের ওপর কর পরিশোধ করা হলে আয়কর কর্তৃপক্ষসহ কোনো কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করবে না। এই বিষয়টি নিয়েই প্রশ্নোত্তরে সরগরম হয়ে ওঠে অর্থমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, কিছু কিছু টাকা বিভিন্ন কারণে আমরা কর দিয়ে সাদা করার সুযোগ দিতে বাধ্য হই। সেসব বিষয় বিবেচনা করে এবার আমরা বিদেশে পাচার করা টাকা ফিরিয়ে আনার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছি। আশা করছি আমি সফল হব।
অর্থমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ কর দিয়ে পাচার করা টাকা ফিরিয়ে আনার জন্য কিছু সুবিধা দিয়েছে। ইন্দোনেশিয়া সরকার ২০১৬ সালে একটি সাধারণ ক্ষমা (অ্যামনেস্টি) ঘোষণা করে ৯ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার বিদেশ থেকে নিয়ে এসেছিল। আমরাও প্রত্যাশা করব, যারা বিদেশে টাকা পাচার করেছেন, তাদের পাচার করা অর্থ দেশে ফেরত নিয়ে আসবেন। পাচার করা টাকা দেশে ফেরত আনা হলে পাচারকারীদের কোনো প্রশ্ন করা হবে না। কেউ টাকা ফিরিয়ে আনলে প্রশ্নবিদ্ধ হবেন না।
পি কে হালদারের টাকা ফিরিয়ে আনার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ভারত সরকার আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে— পি কে হালদারকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়ে দেবে। এমনকি তার পাচার করা অর্থও বাংলাদেশের কাছে ফেরত দেবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, আপনারা পাচার করা টাকাকে যেভাবে দেখছেন, বিষয়টি আসলে এমন না। এটি কেবল কালো টাকা কিংবা মানি লন্ডারিং করার কারণে কালো টাকা হয়েছে— এরকমও বলা যাবে না। অনেক সময় সময়মতো আয়কর রিটার্ন না করার কারণেও টাকা অপ্রদর্শিত হয়ে যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, আমরা বিভিন্ন সোর্সের মাধ্যমে খবর রাখি। তবে টাকা পাচার হওয়ার কোনো প্রমাণ পাইনি।
সংবাদ সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, অর্থ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন-
- একনজরে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট
- দেশীয় শিল্পের বিকাশে ১১ খাতে ভ্যাট অব্যাহতি
- বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান গুরুত্ব পাচ্ছে বাজেটে
- জাতির পিতার সোনার বাংলার সুবর্ণরেখা স্পর্শের প্রত্যয়
- বাজেট বক্তৃতায় ফিনিক্স পাখির গল্প শোনালেন অর্থমন্ত্রী
- গ্রামে ৫ হাজার, নগরে ১৭৬০ কিলোমিটার নতুন সড়ক হবে
- মোবাইল আর্থিক সেবাসহ ব্যবসায় কর সহজ করতে ৯ প্রস্তাব
- অর্থবছরের জন্য ৬ চ্যালেঞ্জ, বাজেটে উত্তরণে প্রত্যয়ী অর্থমন্ত্রী
- আগামী অর্থবছরই হবে মহামারির প্রভাব কাটিয়ে ওঠার শেষ বছর
সারাবাংলা/জিএস/টিআর
২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল টপ নিউজ পাচার করা টাকা বাজেট ২০২২-২৩ বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলন